Ajker Patrika

দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানল: ২৪ জনের মৃত্যু, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট নিহত

অনলাইন ডেস্ক
কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ দাবানল মোকাবিলা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। ছবি: এএফপি
কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ দাবানল মোকাবিলা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। ছবি: এএফপি

দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ বুধবার একটি অগ্নিনির্বাপণকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট নিহত হয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ দাবানল মোকাবিলা করছে দক্ষিণ কোরিয়া।

সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই ভয়াবহ দাবানলের কারণে ২৭ হাজারের বেশি মানুষকে বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে। প্রবল বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ শত শত বন্দীকে কারাগার থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান দাক-সু বলেছেন, ‘আমরা এই ভয়াবহ দাবানলের মোকাবিলায় সব ধরনের কর্মী ও সরঞ্জাম মোতায়েন করছি, কিন্তু পরিস্থিতি ভালো নয়।’ তিনি আরও জানান, কোরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন সামরিক বাহিনীও সহায়তা করছে।

কোরিয়া ফরেস্ট সার্ভিস জানিয়েছে, দাবানলে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর আগে নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইউসিওং কাউন্টিতে ১৪ জন এবং সানচেওং কাউন্টিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা সন চ্যাং-হো জানান, মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই ষাট ও সত্তরোর্ধ্ব বয়সের মানুষ।

ফরেস্ট সার্ভিস আরও জানায়, আগুন নেভানোর চেষ্টাকালে তাদের একটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাইলট নিহত হয়েছেন। পাহাড়ি অঞ্চলের কারণে দাবানল মোকাবিলায় হেলিকপ্টারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এই ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য হেলিকপ্টার চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

ইউসিওং কাউন্টির এই আগুন এখন পর্যন্ত ৬৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস। প্রবল বাতাসের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, এর ভয়াবহতা ও গতি ‘অকল্পনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট সায়েন্সের বন দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ লি বিয়ং-দু। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী দাবানলের প্রকোপ বাড়তে পারে। তিনি গত জানুয়ারিতে লস অ্যাঞ্জেলেসের অংশবিশেষ এবং সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব জাপানে দাবানলের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের স্বীকার করতে হবে যে বড় আকারের দাবানল বাড়বে এবং এর জন্য আমাদের আরও সম্পদ ও প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।’

এদিকে কোরিয়া ফরেস্ট সার্ভিস তাদের ৪৮টি রুশ হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞার ফলে যন্ত্রাংশ আমদানি করতে না পারায় গত বছর থেকে আটটি হেলিকপ্টার অচল হয়ে আছে বলে ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন আইনপ্রণেতা গত অক্টোবরে জানিয়েছিলেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া দপ্তর আগামীকাল বৃহস্পতিবার বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে, তবে দাবানল উপদ্রুত এলাকায় মাত্র ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজ বুধবার চারটি পৃথক এলাকায় ১০ হাজারের বেশি দমকলকর্মী, শত শত পুলিশ কর্মকর্তা ও সামরিক ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে এবং ৮৭টি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

গত শনিবার আগুন লাগার পর ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান—আন্দং শহরের হাহো গ্রাম এবং বাইয়োংসান কনফুসিয়ান একাডেমি—আজ বুধবার হুমকির মুখে পড়েছে। কর্মকর্তারা জানান, কর্তৃপক্ষ এই স্থানগুলো রক্ষার জন্য আগুন প্রতিরোধক স্প্রে ব্যবহার করছে। আগুনে ইতিমধ্যে ৬৮১ সালে নির্মিত গউন মন্দির পুড়ে গেছে।

সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে বিশেষ দুর্যোগ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং জানিয়েছে, আগুনে ১৫ হাজার হেক্টরের বেশি (৩৭ হাজার ৬৫ একর) জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় যে কারণে চীনের সঙ্গে পেরে উঠছে না ভারত

মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ঢাকা: এনসিপি নেতা-কর্মীদের গলা ধাক্কা

সারা জীবন ‘একজনের কাছে কৃতজ্ঞ’ থাকবেন তামিম, কে তিনি

বিমসটেকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের চেষ্টায় মিয়ানমার: রয়টার্স

সচিবালয়ে কর্মরতদের রেশন দেবে সরকার, ক্ষুব্ধ বাইরে কর্মরতরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত