শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের দলের নিরঙ্কুশ জয়

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ১০
Thumbnail image
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুঢ়া কুমারা দিসানায়েকে। ছবি: সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিসানায়েকের নেতৃত্বে বামপন্থী দল ন্যাশনাল পিপল পাওয়ার (এনপিপি) আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেছে। এই জয়ের মার্ক্সবাদী প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে কঠোর ব্যয় সংকোচন নীতি শিথিল করার জন্য ম্যান্ডেট পেয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার একযোগে সারা দেশে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় গণনা। আজ শুক্রবার এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বেশির ভাগ ব্যালটই গণনা হয়েছে। আর এতে দিসানায়েকের দল এনপিপি ৬২ শতাংশ ভোট নিয়ে বিরোধী দল সামাগি জনা বালাভেগয়ার (এসজেবি) থেকে অনেক এগিয়ে আছে।

শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, এনপিপি ২২৫ সদস্যবিশিষ্ট পার্লামেন্টে ১৪১টি আসন জিতেছে। তারা শ্রীলঙ্কার ২২টি নির্বাচনী জেলার মধ্যে একটিতে ছাড়া সবগুলোতেই এগিয়ে আছে। এই নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমদাসার পুত্র সাজিথ প্রেমদাসার দল এসজেবি পেয়েছে ৩৫টি আসন। তামিল জাতিগোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্বকারী দল ইলংকাই তামিল আরাসু কাচ্চি পেয়েছে ৭টি আসন। নিউ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এবং শ্রীলঙ্কা পদুজানা পেরামুনা পেয়েছে যথাক্রমে ৩ এবং ২টি আসন।

বৃহস্পতিবারের ভোটে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৬৫ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতির তুলনায় এটি যথেষ্ট কম। সেপ্টেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দিসানায়েকে জয়লাভ করেন। তিনি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের আইএমএফ সহায়তা চুক্তির আওতায় কঠোর ব্যয় সংকোচন নীতির বিরোধিতা করে ব্যাপক জনসমর্থন পান।

আগের পার্লামেন্ট অনূঢ়ার দল মাত্র ৩টি আসন পেয়েছিল। ভোটের আগে আত্মবিশ্বাসী দিসানায়েকে গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তিনি পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রত্যাশা করছেন। নিজের ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এটি শ্রীলঙ্কার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, যা একটি নতুন বাঁকের সূচনা করবে।’

অনূঢ়া দিসানায়েকে ১৯৭০-১৯৮০—এর দশকে শ্রীলঙ্কায় রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এবারে তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দুর্নীতি দমন এবং অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে বিকল্প পথ খুঁজতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি আইএমএফ চুক্তির সমালোচনা করলেও পরে এর লক্ষ্যসমূহের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন। তবে তিনি জোর দেন, দরিদ্রদের ওপর কম চাপ দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। অতীতের ভুল ব্যবস্থাপনা, কোভিড-১৯ মহামারি এবং ২০১৯ সালের ইস্টার হামলা পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে। ২০২২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ ব্যাপক জনবিক্ষোভের পর পদত্যাগের বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়েন। রাজাপক্ষের স্থলাভিষিক্ত হওয়া বিক্রমাসিংহে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আনলেও কর বৃদ্ধি ও অন্যান্য পদক্ষেপ তাঁর জনসমর্থন হারানোর পেছনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত