জাপান সেনাবাহিনী নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের লম্বা চুল রাখার অনুমতি দিয়েছে। তরুণদের সেনাবাহিনীতে যোগদানে আকৃষ্ট করার জন্যই এই নিয়ম চালু করা হয়েছে বলে জানান জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনোরু কিহারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

চীন ও উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান সামরিক মহড়া নিয়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ছে জাপানের। এ অবস্থায় সেনাবাহিনীতে জনবলের সংকট দূর করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জাপানের সেনাবাহিনীতে ছেলেদের খুব ছোট করে চুল কাটানোর নিয়ম ছিল। যা ‘বাজ কাট’ নামে পরিচিত। নারী সদস্যদেরও চুল ছোট রাখতে হতো।

তবে আগামী এপ্রিল থেকে এই নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে। সেনারা অপেক্ষাকৃত লম্বা চুল রাখতে পারবেন। এই নিয়মের অধীনে তাঁরা মাথার পেছনে ও দুই পাশে ছোট চুল এবং সামনে লম্বা চুল রাখতে পারবেন।

নারী সদস্যদেরও লম্বা চুল রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, উর্দি পরা অবস্থায় নারী সদস্যদের চুল কাঁধের ওপর পড়তে পারবে না। তা ছাড়া, হেলমেট পরা অবস্থায়ও চুল কোনো অসুবিধা করতে পারবে না।

কিয়োডো নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, নিয়ম শিথিলের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে গত জানুয়ারিতে। জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে (জেএসডিএফ) সেনার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল বৈঠক করেছিল। সে বৈঠক থেকেই নিয়ম শিথিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনোরু কিহারা বৈঠকটিতে বলেন, ‘আমাদের জাতি শ্রমশক্তির গুরুতর ঘাটতির সম্মুখীন। আমাদের প্রতিভা সুরক্ষিত করার জন্য বেসরকারি খাতসহ অন্যদের সঙ্গেও প্রতিযোগিতা তীব্রতর হচ্ছে।’

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাপানের সামরিক বাহিনী শুধু প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকাই পালন করে আসছে—যা দেশটির শান্তিবাদী সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

একদিকে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে চীন, অন্যদিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচির সম্প্রসারণ করছে উত্তর কোরিয়া। আঞ্চলিক শক্তিগুলোর দিকে থেকে নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় জাপান তাদের সেনাবাহিনীর জনবল বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে।

গত বছর জাপান ঘোষণা দিয়েছিল, আগামী পাঁচ বছরে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু জেএসডিএফে নিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী করা যাচ্ছিল না তরুণ-তরুণীদের। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, জনবলের অভাবে সক্ষমতার ১০ শতাংশ কাজ কম করছে জাপান সেনাবাহিনী।

গত বছর জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, শরীরে ট্যাটু থাকলেও সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া যাবে।