প্রথম অর্থোডক্স খ্রিষ্টান দেশ হিসেবে সমলিঙ্গের বিয়েকে বৈধতা দিল গ্রিস

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

গির্জা এবং বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদের বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রথম কোনো অর্থোডক্স খ্রিষ্টান দেশ হিসেবে সমলিঙ্গের বিয়েকে বৈধতা দিয়েছে গ্রিস। দেশটির পার্লামেন্ট সমলিঙ্গের বিয়েকে বৈধ ঘোষণা করে গতকাল বৃহস্পতিবার একটি বিল পাস করেছে। সে সঙ্গে, সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকারও দেওয়া হয়েছে সমলিঙ্গের যুগলদের। কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিসের দল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টি পার্লামেন্টে বিলটি উত্থাপন করেছিল। দুই দিনের বিতর্ক এবং জনসাধারণের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার পর অনুষ্ঠিত হয়েছে এই ভোট। বিলটি আইন হিসেবে কার্যকর হলে সমলিঙ্গের বিয়েকে বৈধতা দেওয়া ৩৭তম দেশ হবে গ্রিস। 

সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতার পক্ষে পার্লামেন্টে ভোট পড়েছে ১৭৬টি এবং বিপক্ষে ৭৬। ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন দুজন আইনপ্রণেতা। এ ছাড়া, উপস্থিত ছিলেন না ৪৬ জন। বিলটি ৩০০ সদস্যের সংসদে পাস করার জন্য সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন ছিল।

সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতার সপক্ষের মানুষ এই ভোটের পর উল্লাস করেছে এথেন্সের রাস্তায়। তাদের অনেকেই এলজিবিটিকিউদের রংধনু পতাকা উড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে, অর্থোডক্স গির্জার সংশ্লিষ্টরা এই ভোটের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। ব্যানার এবং ক্রুশ নিয়ে প্রার্থনা করেন তারা। 

এই বিয়ের সমর্থক হিসেবে পরিচিত গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস ইস্যুটিকে ঘিরে নিজের মধ্য-ডানপন্থী রাজনৈতিক দল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টিতেই বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন। তবে তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো থেকে সমর্থনও পেয়েছেন।

সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকারের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এর মধ্য দিয়ে উদারনৈতিক, গণতান্ত্রিক ও ইউরোপীয় মূল্যবোধের প্রতি আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল আধুনিক গ্রিসের মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে।

ভোটের আগে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস বলেন, ‘এত দিন যারা সামনে আসতে সংকোচ বোধ করত এখন তারা নির্দ্বিধায় চলাফেরা করবে। সে সঙ্গে, অনেক শিশু খুঁজে পাবে তাদের সঠিক ঠিকানা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে সংস্কারমূলক আইনটি প্রণয়ন করছি তা কারও কাছ থেকে কিছু কেড়ে নেওয়া ছাড়াই আমাদের দেশের অনেক নাগরিকের জীবনকেই অর্থবহ করে তুলবে।’

তবে এমন উদ্যোগের পূর্ণ বিরোধিতা করার কথা জানিয়েছে গ্রিসের গির্জা। তাদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে শিশুরা বেড়ে উঠবে দ্বিধার মধ্যে। গির্জার প্রধান আর্চবিশপ ইয়েরোনিমোসের মতে, প্রস্তাবিত আইনটি গ্রিসের সামাজিক সংহতিকে কলুষিত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত