Ajker Patrika

হুতিবিরোধী অভিযানে দ্বীপে ব্রিটিশ ঘাঁটি, তোপের মুখে সাইপ্রাস সরকার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯: ২৮
হুতিবিরোধী অভিযানে দ্বীপে ব্রিটিশ ঘাঁটি, তোপের মুখে সাইপ্রাস সরকার

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালাতে সাইপ্রাসে অবস্থিত ব্রিটিশ ঘাঁটি ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে সাইপ্রাস। 

প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোদোলাইদসের বিরুদ্ধে মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, দ্বীপরাষ্ট্রটির কৌশলগত স্থাপনাগুলো সামরিক অভিযানে ব্যবহার করা অব্যাহত থাকলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে পূর্বের দেশটি যে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে, ওই বিষয় দেখেও না দেখার ভান করছেন প্রেসিডেন্ট। 

সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে প্রথম দফা বিমান হামলার আগে ইয়েমেনে আসন্ন সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার। 

গ্রিক বংশোদ্ভূত সাইপ্রিয়ট শান্তিরক্ষীকর্মী তাসোস কস্তিয়াস গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘এখন প্রতিদিনই আরও বেশি যুদ্ধবিমান আকাশে উড়ছে। সাইপ্রাস লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠার ঝুঁকি স্পষ্ট।’ 

কয়েক দশকের ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৬০ সালে দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করে। এর পরও ব্রিটিশরা সেখানে দুটি সামরিক স্থাপনা দখলে রাখে, যা প্রজাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সার্বভৌম অঞ্চল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উভয়ই ৯৮ বর্গমাইল জুড়ে বিস্তৃত, যা সাইপ্রাসের স্থলভাগের ৩ শতাংশ। 

এ তথ্য কখনো নিশ্চিত করা না হলেও রাজধানী নিকোশিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকেরা বলেন, সামরিক ঘাঁটিগুলোতে এখন মার্কিন বাহিনী উপস্থিত রয়েছে। একজন কূটনীতিক বলেন, ‘আপনি যদি আক্রোতিরির বেড়ার ওপারে তাকান তবে মার্কিন সামরিক নজরদারি এবং অন্যান্য উড়োজাহাজ দেখতে পাবেন।’ 

গত মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) সাইপ্রাস সরকারের মুখপাত্র কনস্তান্তিনোস লেতিম্বায়োতিস বলেন, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপটি কোনো সামরিক অভিযানে জড়িত নয়। তিনি আরও বলেন, ঘাঁটি স্থাপন চুক্তির অধীনে যুক্তরাজ্য সাইপ্রিয়ট কর্তৃপক্ষকে স্থাপনাগুলোতে কী কী হচ্ছে সে সম্পর্কে জানাতে বাধ্য নয়। 

ইয়েমেনে হুতিদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাতে সাইপ্রাসের রয়্যাল এয়ারফোর্স (আরএএফ) আক্রোতিরির ঘাঁটি ব্যবহার করার পর থেকেই সাইপ্রাসে বিক্ষোভের শুরু হয়। লোহিত সাগরে যাতায়াতকারী বাণিজ্য জাহাজে হুতিদের আক্রমণ বন্ধ করার জন্য ইয়েমেনে এ হামলা চালানো হয় বলে দাবি দেশগুলোর। ফিলিস্তিনপন্থী এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দাবি, তারা গাজায় চলমান ইসরায়েলের সহিংসতার জবাবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি হুতিদের একটি ক্ষেপণাস্ত্র গ্রিসের বাণিজ্য জাহাজে আঘাত হেনেছে। 

সাইপ্রাসে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস গতকাল শুক্রবার সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। তিনি বলেন, ‘আমরা সাইপ্রাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব করতে চাই। আমরা জানি আপনারা বিপজ্জনক অবস্থানে আছেন এবং আমরাও পরিস্থিতি সহজ করে তোলার জন্য সম্ভাব্য সব করতে চাই।’ তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে হুতিদের পক্ষ থেকে সাইপ্রাসের জন্য তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি নেই। 

সাইপ্রাসের শান্তিরক্ষী কর্মীরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইসরায়েলে সামরিক সাহায্য পাঠাতে ব্রিটিশ ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করতে পারে। তবে কোনো দেশই এ দাবি নিশ্চিত করেনি। 

ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের হামলা ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধকে বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের দিকে টেনে নিচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। এদিকে প্রয়োজনে বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে ওয়াশিংটন ও লন্ডন। 

গত রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিক্ষোভকারীরা আরএএফ আক্রোতিরির প্রবেশমুখে সমবেত হয় এবং ‘মৃত্যুঘাঁটি থেকে বের হও’ বলে স্লোগান দেয়। 

সাইপ্রাস শান্তি পরিষদের সভাপতি তাসোস কস্তিয়াস বলেন, ‘সহজ কথা, আমরা চাই না আমাদের দেশ এমন এক যুদ্ধে ব্যবহৃত হোক, যেখানে ২৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যার বেশির ভাগই হলো নারী ও শিশু। আমরা জানি সংঘাত মানে কি। ৫০ বছর আগে যুদ্ধে সাইপ্রাসও বিভক্ত হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত