মৃত্যুর ১৮ বছর পর সহস্রাব্দের প্রথম সন্ত হতে চলেছেন কার্লো

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৪, ০০: ৩৬

২০০৬ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন কার্লো আকুটিস। মৃত্যুর ১৮ বছর পর সোমবার ইতালিয়ান ওই কিশোরের অলৌকিকত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে ক্যাথলিক চার্চ। এর ফলে তিনি এই সহস্রাব্দের প্রথম সন্ত (সেইন্ট) হতে চলেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিএনএন। 

বলা হয়ে থাকে, কম্পিউটার পরিচালনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ক্যাথলিক বিশ্বাস সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিখ্যাত ছিলেন কার্লো আকুটিস। ‘ঈশ্বরের দূত’ হিসেবেও তিনি ডাকনাম অর্জন করেছিলেন। 

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যাথলিক চার্চে কাউকে সাধু হিসেবে স্বীকৃতি দিতে দশকের পর দশক সময় লাগতে পারে। তবে কার্লোর ক্ষেত্রে তা খুব দ্রুত হয়ে গেছে। সন্ত হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য অন্তত দুটি অলৌকিক ঘটনার জন্য দায়ী থাকতে হয় কোনো ব্যক্তিকে। গত মে মাসে কার্লোর দ্বারা সংঘটিত দ্বিতীয় অলৌকিক ঘটনার স্বীকৃতি দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। এই স্বীকৃতি তাঁকে সন্ত ঘোষণার পথে অনেকটাই এগিয়ে এনেছিল। 

কার্লোকে সন্ত ঘোষণার চূড়ান্ত প্রক্রিয়াটি সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন ভ্যাটিকান ঘোষণা করেছে, কার্ডিনালরা কার্লো আকুটিসের সাধুত্বের পক্ষে ভোট দেওয়ায় শিগগিরই তাঁর ক্যানোনাইজেশন সম্পন্ন হবে। তবে সেই আনুষ্ঠানিকতার দিন তারিখ ঘোষণা করা হয়নি এখনো। ধারণা করা হচ্ছে, আনুষ্ঠানিক এই প্রক্রিয়াটি ২০২৫ সালে ক্যাথলিক চার্চের জয়ন্তী বর্ষ উদ্‌যাপনের সময় হতে পারে। সেদিন ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষের সামনে এবং পোপের সভাপতিত্বে কার্লোকে আনুষ্ঠানিকভাবে একজন সন্ত ঘোষণা করা হবে। 

যে দুটি অলৌকিক ঘটনার জন্য কার্লোকে দায়ী করা হয়, তার প্রথমটিকে ২০২০ সালে স্বীকৃতি দিয়েছিল চার্চ। জানা যায়, ব্রাজিলে ম্যাথিউস নামে এক ছেলে অগ্ন্যাশয়ের মারাত্মক ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল। সে কোনো কিছু খেতে পারত না, আর খেলেও তা তার পেটে থাকত না। পেটের ব্যথায় ক্রমাগত বমি করত সে। ২০১৩ সালে চার বছর বয়সে তার ওজন ছিল মাত্র ২০ পাউন্ড। শরীরে ভিটামিন ও প্রোটিন ঢুকিয়ে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখলেও চিকিৎসকেরা সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় সেই রোগ থেকে মুক্তির জন্য কার্লো আকুটিসকে স্মরণ করে ম্যাথিউসের মা প্রার্থনা করেছিলেন। এরপরই সব ভবিষ্যদ্বাণীকে ভুল প্রমাণিত করে সুস্থ হয়ে ওঠে ম্যাথিউস। বিশ্বাস করা হয়, ম্যাথিউসকে সুস্থ করে তুলতে মৃত্যুর পরও ঈশ্বরের সঙ্গে মধ্যস্থতা করেছিলেন। 

দ্বিতীয় ঘটনার ক্ষেত্রে জানা গেছে, ফ্লোরেন্সের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাইকেল থেকে পড়ে মস্তিষ্কে মারাত্মক রক্তক্ষরণের স্বীকার হয়। পরবর্তীতে তাঁর সুস্থ হওয়ার জন্যও কার্লোর নামে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনাকে দায়ী মনে করা হয়। 

লন্ডনে জন্মগ্রহণ করলেও ইতালিতেই বেড়ে উঠেছিলেন কার্লো। ২০০৬ সালে ইতালির মোনজায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর এক বছর পরে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় ইতালির অ্যাসিসিতে। কম্পিউটারের প্রতি ছিল তাঁর অদম্য আগ্রহ। পরিবারের কেউ গির্জায় না গেলেও কার্লো ছোটবেলা থেকেই ছিলেন ধার্মিক। তিনি এমন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলেন যেখানে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত প্রতিটি ‘জ্ঞাত অলৌকিক’ ঘটনার বিবরণ লিপিবদ্ধ হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত