মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বৃহত্তর ‘খ্রিষ্টান রাষ্ট্র’ তত্ত্ব, মণিপুরের উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ৪০
Thumbnail image
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা। ছবি: সংগৃহীত

কুকি ও মেইতি নৃগোষ্ঠীর মধ্যে ১৮ মাস ধরে চলমান সহিংসতার জন্য বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং সরকারের কড়া সমালোচনা করে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়েছেন প্রতিবেশী মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা।

দা হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লালদুহোমা বলেন, ‘আমি দুঃখিত! তবে বলতেই হয় বীরেন সিং মণিপুর রাজ্যের দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ। মণিপুরের জনগণ ও বিজেপির নেতৃত্ব দিতেও তিনি ব্যর্থ। মণিপুরে অতি দ্রুত রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা উচিত।’

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে বেড়া দেওয়ার বিরোধিতা করে লালদুহোমা বলেন, ‘স্থায়ী শান্তির জন্য মণিপুরে সব মিলিশিয়া বাহিনীকে অস্ত্রহীন করা উচিত।’

লালদুহোমার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে মণিপুর সরকার পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা ‘কুকি, চিন ও জো নৃগোষ্ঠীকে নিয়ে বৃহত্তর খ্রিষ্টান রাষ্ট্র’ গঠনের যে তত্ত্ব দিয়েছেন, তা নিয়ে বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মণিপুর সরকার।

কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিতর্কিত ভাষণ দিয়েছিলেন লালদুহোমা। সেখানে তিনি বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের কিছু এলাকা নিয়ে একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানান।

তাঁর এই বক্তব্যের পর মণিপুর ও মিজোরামের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী জাতিগত ও রাজনৈতিক বিতর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে। আবার এমন সময়েই হিন্দুস্তান টাইমসে দেওয়া লালদুহোমার সাক্ষাৎকার ‘গ্রেটার মিজোরাম’ ধারণা নিয়ে বহুল আলোচিত বিতর্ককে আবারও সামনে নিয়ে এনেছে। এটি পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোর ভূখণ্ড ও জনসংখ্যাগত ভারসাম্য নিয়েও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সেই সঙ্গে ‘কুকি-চিন খ্রিষ্টান জাতি’ ও ‘গ্রেটার মিজোরাম অ্যাজেন্ডা’ নিয়েও মণিপুর সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।

এর পাল্টায় মণিপুর সরকার বিবৃতিতে জনসাধারণকে সতর্ক করে বলেছে, ‘মিজোরাম থেকে অবৈধ কুকি-চিন অভিবাসীদের মণিপুরে পাঠিয়ে ভূমি দখল ও গ্রেটার মিজোরাম সৃষ্টির যেকোনো প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।’

মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমার সমালোচনা করে দেওয়া এই বিবৃতিতে মণিপুর সরকার জানিয়েছে, ‘লালদুহোমা ১৯৮৬ সালে দেশের প্রথম সংসদ সদস্য, যাঁর দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুযায়ী পদচ্যুত হওয়ার কলঙ্কজনক আছে।’

বিবৃতিতে মণিপুর সরকার আরও উল্লেখ করে, ‘চৌত্রিশ বছর পর ২০২০ সালে, তিনি দেশের প্রথম বিধায়ক হন যাকে একই আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল।’

উল্লেখ্য, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে মণিপুর রাজ্যে জাতিগত সহিংসতা চলছে। এর মধ্যে মিজোরাম-মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পরস্পর বিরোধী বক্তব্য উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত