Ajker Patrika

পিতৃত্বের স্বীকৃতি এড়াতে যমজ কন্যাসহ প্রেমিকাকে হত্যা, ১৯ বছর পর গ্রেপ্তার অভিযুক্ত

আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১: ৩২
১৯ বছর পর ধরা পড়ল অভিযুক্ত। ছবি: সংগৃহীত
১৯ বছর পর ধরা পড়ল অভিযুক্ত। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের দক্ষিণী রাজ্য কেরালার কোল্লাম জেলার ইয়ারামে ভাড়া বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ২৪ বছর বয়সী এক নারী এবং তাঁর সদ্যোজাত যমজ কন্যাদের। ২০০৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারির ওই দিনে পঞ্চায়েত অফিস থেকে ১৭ দিন বয়সী দুই শিশুর জন্মসনদ আনতে গিয়েছিলেন রঞ্জিনী নামের ওই নারীর মা। ফিরে এসে দেখেন মেয়ে ও তাঁর সন্তানদের মৃতদেহ ঘরে পড়ে আছে।

তদন্তে জানা যায়, কোল্লামের আঁচল এলাকার বাসিন্দা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৪৫ এডি রেজিমেন্টের (পাঠানকোট) সদস্য ২৮ বছর বয়সী দিবিল কুমারের সঙ্গে রঞ্জিনীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০০৬ সালের ২৪ জানুয়ারি তাঁদের যমজ কন্যার জন্ম হয়। এরপর রঞ্জিনীকে এড়িয়ে চলতে থাকেন দিবিল।

বিয়ে ও সন্তানদের পিতৃত্বের স্বীকৃতির দাবিতে রঞ্জিনী কেরালা রাজ্য মহিলা কমিশনের শরণাপন্ন হন। কমিশন ওই যমজ শিশুদের পিতৃত্ব নির্ধারণের জন্য একটি পরীক্ষার নির্দেশ দেয়। এতে দিবিল কুমার ক্ষুব্ধ হয়ে রঞ্জিনীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

তদন্ত সিবিআই কর্মকর্তারা জানান, একই সেনা রেজিমেন্টে দিবিল কুমারের সহকর্মী ছিলেন রাজেশ পি (৩৩)। তিনি রঞ্জিনী ও তাঁর মায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। রঞ্জিনীকে বিয়ে করতে কুমারকে রাজি করাবেন বলে আশ্বাস দেন রাজেশ। তারপর ঘটে এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার পরপরই দিবিল কুমার ও রাজেশ পালিয়ে যান। ২০০৬ সালের মার্চ মাসে সেনাবাহিনী তাঁদের পলাতক ঘোষণা করে।

তদন্তের পরও কোনো কূলকিনারা না করতে পেরে ২ লাখ রুপি পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল স্থানীয় পুলিশ। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। অবশেষে ২০১০ সালে কেরালা হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি সিবিআইর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সিবিআই অনেক বছর ধরে তদন্ত চালিয়েও কোনো সূত্র খুঁজে পায়নি।

এর মধ্যে কেটে গেছে ১৯ বছর। এক সূত্রে সিবিআই জানতে পারে, দিবিল কুমার ও রাজেশ পুদুচেরিতে ভুয়া নাম নিয়ে বসবাস করছেন। আধার কার্ডসহ নতুন নথি তৈরি করেছেন তাঁরা। এমনকি দুজনে বিয়েও করেছেন পৃথকভাবে, সন্তানও আছে তাঁদের।

দীর্ঘদিন নজরদারির পর সিবিআইর চেন্নাই ইউনিট গত শুক্রবার তাঁদের গ্রেপ্তার করে কোচিতে নিয়ে আসে। গতকাল শনিবার তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সিবিআই রিমান্ডের সময় আরও বাড়ানোর আবেদন করবে বলে জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত