Ajker Patrika

দাবি আদায়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের ‘মহামিছিল’

ডয়চে ভেলে
আপডেট : ০৭ মে ২০২৩, ১১: ০৮
Thumbnail image

কেন্দ্রের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মহার্ঘ্যভাতা বা ডিএর ফারাক ঘোচাতে আন্দোলনে নেমেছেন সরকারি কর্মীরা। শহীদমিনার চত্বরে গত ১০০ দিন ধরে অবস্থান করছেন, অনশনও করছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল শনিবার তাঁরা রাজপথে ‘মহামিছিল’ কর্মসূচি পালন করেন। এতে ৩৫ হাজারের বেশি সরকারি কর্মী অংশ নেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। তবে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

কেন ‘মহামিছিল’
বকেয়া প্রদান, স্বচ্ছ নিয়োগ, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণসহ চার দফা দাবিতে এই আন্দোলন করছেন কর্মচারীরা। 

রাজ্য সরকারি কর্মী, শিক্ষক, পুরসভার কর্মচারীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরিরতদের একটা অংশ এই আন্দোলন করছেন। রাজ্য সরকার বর্ধিত হারে ডিএ দিতে অপারগ, এ কথা বারবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হলেও তাতে সন্তুষ্ট নন কর্মীরা। নবান্নের সঙ্গে তাদের আলোচনায় সমাধান মেলেনি। ডিএ নিয়ে আইনি লড়াই পৌঁছেছে সর্বোচ্চ আদালতে। এমন অবস্থায় কর্মচারীদের অন্যতম সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতৃত্বে ‘মহামিছিল’-এর ডাক দেওয়া হয়।

মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে অন্যতম নেতা ভাস্কর ঘোষ দাবি করেন, ‘৩৫ থেকে ৪০ হাজার কর্মী শামিল হয়েছেন এই দিনের কর্মসূচিতে। এত কর্মী পথে নামায় সরকারের ওপর চাপ বাড়ল। আমরা লাগাতার ধর্মঘটের কথা ভাবছি।’ 

শান্তিপূর্ণ জমায়েত
এই কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের বিপুল উপস্থিতি, মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেড, তৈরি ছিল জলকামান। আদালতের নির্দেশে মিছিলের ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়।

মিছিলের যাত্রাপথে দুটি স্থান বেশি স্পর্শকাতর ছিল। প্রথমটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির এলাকা। কালীঘাট দমকলকেন্দ্রের আশপাশে তাই কঠোর নিরাপত্তা ছিল। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে সাধারণ মানুষের যাতায়াতেও কড়া নজর ছিল পুলিশের।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি হরিশ মুখার্জি রোডে। এই বাড়ির সামনে দিয়েও যায় মিছিল ৷ এদিন বাড়িতে নয়, মুর্শিদাবাদে ছিলেন অভিষেক। ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দিয়েই শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল যায় ৷ শুধু এসব স্পর্শকাতর জায়গা নয়, মিছিলের কোনো অংশে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে মিছিল করার কথা ছিল। হাজরা মোড় থেকে বেলা ১টা ১০ মিনিট নাগাদ মিছিল শুরু হয় ৷ আড়াই ঘণ্টা পর সেখানেই এসে মিছিল শেষ হয়।

ভাতা ঘিরে চাপান-উতোর
মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছের এলাকা বা হরিশ মুখার্জি রোডের মতো কলকাতার যেসব এলাকায় বছরের পর বছর মিছিল বন্ধ, সেখানে আদালতের নির্দেশে হেঁটেছেন কর্মচারীরা। এটা কি মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ? আন্দোলনের নেতা শিক্ষক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘কাউকে চ্যালেঞ্জ করছি না। নিজেদের দাবি জোরালোভাবে জানাচ্ছি। দাবি আদায় করাটাই চ্যালেঞ্জ বলতে পারেন।’

রাজ্য সরকার ও শাসক দল এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে। তৃণমূলের মুখপাত্র সাংসদ সৌগত রায়ের মন্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছেন, রাজ্যের হাতে ডিএ মেটানোর টাকা নেই। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। তা সত্ত্বেও এই আন্দোলন চালানোর যুক্তি কী?’

এই দিনের মিছিল শেষে হাজরা মোড়েই সভা করেন সরকারি কর্মীরা। সেখানে বক্তৃতা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান, সাবেক তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহ প্রমুখ। তারা আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানান।

আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, মিছিলে বিপুলসংখ্যক কর্মীদের সমাগম তাদের কর্মসূচিকে সার্থক করেছে। কিন্তু তাতে রাজ্যের মনোভাবে পরিবর্তন হবে কি? রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অধ্যাপক রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী বলেন, ‘১০ লাখ কর্মচারীকে বাড়তি ডিএ দিতে যে খরচ হবে, সেই অর্থ লক্ষ্মীর ভান্ডারে বরাদ্দ করলে অনেক বেশি মানুষকে সুবিধা দেওয়া যাবে ৷ রাজ্য সরকার এটা জানে , তাই কর্মীদের দাবি মানছে না। তবে এত দিন ধরে কর্মীরা আন্দোলন করলে সেটা সরকারের কাছে স্বস্তির নয়।’ 

সবার নজর এখন সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে ডিএ মামলার পরের শুনানি জুলাই মাসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত