তরুণ চক্রবর্তী
পেগাসাস কাণ্ড নিমিত্ত মাত্র। ভারতীয় রাজনীতিতে বিরুদ্ধ মতের প্রতি অসহিষ্ণুতার বিষাক্ত ভাইরাস বহুদিন ধরেই চলছে। রাজনৈতিক মতবাদগত দৈন্য পরিবেশকে করে তুলছে আরও অসহনীয়। বহুদিন ধরে লাঞ্ছিত হচ্ছে ভারতীয়দের মৌলিক অধিকার। কথায় কথায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা নিয়ে তাই বিচারপতিদেরও মুখ খুলতে বাধ্য হতে হয়েছে। সংখ্যার জোরে বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা আগেও ছিল, কিন্তু এখনকার মতো বেলাগাম আগে কখনো হয়নি। ভারতের জাতীয় সংসদে সংখ্যার থেকেও অনেক সময় পাণ্ডিত্য সম্ভ্রম আদায়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে। যেমন বামপন্থীদের সংখ্যা তেমন না থাকলেও জ্যোতির্ময় বসু, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, সোমনাথ চ্যাটার্জিরা জাতীয় সংসদে অন্যদের কাছ থেকে সম্ভ্রম আদায়ে চিরকালই মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।
ইসরায়েলের বেসরকারি সংস্থা এনএসও গ্রুপের তৈরি সফটওয়্যার কাজে লাগিয়ে ভারত সরকার বহু মানুষের গোপন কথায় আড়িপাতার চেষ্টা করেছে। সরকার যাকেই মনে করেছে সন্দেহজনক, তারই ফোনে বিদেশি সংস্থার সফটওয়্যার ব্যবহার করে আড়ি পাতা হয়। এমনকি, ভারতের বর্তমান তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের ফোনেও নাকি আড়িপাতা হয়। পেগাসাস কাণ্ডের শিকারদের মধ্যে রয়েছেন অবশ্যই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা, তৃণমূল নেতা অভিষেক ব্যানার্জি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ভারতের সাবেক মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, বিভিন্ন তদন্তকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা। এ অভিযোগ শুধু ভারতের নয়, দুনিয়ার ১৬টি গণমাধ্যমের তদন্তে উঠে এসেছে।
এই নিয়ে সরকার পক্ষ আন্তর্জাতিক চক্রান্তের দোহাই দিয়ে ফের রাষ্ট্রপ্রেমের গান গাইতে শুরু করেছে। বিরোধীরা অবশ্য গণতন্ত্র-গণতন্ত্র-গণতন্ত্র করে আর্তনাদ করছেন। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনলে মনে হতেই পারে, দু-পক্ষের বক্তব্যই বোধ হয় ঠিক। ঠিক বা ভুল—যাই হোক না কেন, ভারতীয় রাজনীতি ও মিডিয়া এখন উত্তাল পেগাসাস নিয়ে। অনেকটাই ধামাচাপা পড়ে গেছে, করোনা মোকাবিলা, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে ফরাসি তদন্ত, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি কংগ্রেসের ভাঙন, বিরোধীদের অনৈক্য থেকে শুরু করে অনেকগুলো জ্বলন্ত সমস্যা। মানুষকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্ট্যান্ট স্বামীর ৮৪ বছর বয়সে বন্দিদশায় মৃত্যু, উত্তর প্রদেশে লাশ খুবলে খাওয়া কুকুরের ছবি থেকে শুরু করে কলকাতায় ভুয়া আমলা-ভুয়া টিকা-ভুয়া পুলিশের জয়জয়কার।
বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা আগেও ছিল। অবশ্যই ছিল। কিন্তু কংগ্রেসের উদার রাজনৈতিক দর্শন জরুরি অবস্থার দিনগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে কখনোই বিরোধীদের ওপর সামগ্রিক নজরদারিকে এমন বেআব্রু করেনি। কোথাও একটা বিরুদ্ধ মতবাদের প্রতিও সম্ভ্রম ছিল ভারতীয় রাজনীতির অঙ্গ। হিন্দুত্ববাদী সরকার প্রতিষ্ঠার পর অটলবিহারী বাজপেয়ির সরকারও সংসদীয় রাজনীতিতে সেই পরম্পরাকে অটল রেখেছিলেন। সৌজন্যবোধ ছিল ভারতীয় রাজনীতির অলংকার। কথায় কথায় বিরোধীদের জেলে ভরার রাজনীতি জরুরি অবস্থার পর তেমন একটা দেখা যায়নি। কিন্তু ২০১৪ সালে বিজেপি বিশাল জনমত নিয়ে সরকার গড়ার পর থেকেই বিরোধী মতবাদ উপেক্ষিত হতে থাকে। রাষ্ট্রীয় যন্ত্র যথেচ্ছ ব্যবহার হতে থাকে নরেন্দ্র মোদির আমলে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মোদির মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অমিত শাহের যোগদান অসহিষ্ণুতার রাজনীতিকে আরও বেশি করে প্রণোদনা দিতে থাকে। স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে ওঠে শাসক দলের শাখা সংগঠন। টলে যায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। নীতিহীন দলবদল হয়ে ওঠে ভারতীয় রাজনীতিতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
মোদির আমলে বাবরি মসজিদের জায়গায় তৈরি হচ্ছে রামমন্দির। কাশ্মীরকে আরএসএসের কর্মসূচির মতোই পরিচালনা করা হচ্ছে। নাগরিকত্বের মতো বিষয়েও হিন্দুত্ব তাস খেলতে শুরু করেছে বিজেপি। বিভাজনের রাজনীতি চলছে সর্বত্র। কিন্তু সেই বিভাজনের রাজনীতি বিজেপিকে সাফল্য এনে দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বারবার। কংগ্রেস দুর্বল হলেও ভারতীয়দের রক্তে মিশে রয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা। তাই বিজেপিকে জিততে হলে কংগ্রেসিদেরই দরকার হচ্ছে সর্বত্র। বিজেপি নেতাদের কাছে ক্ষমতা দখলের বীজমন্ত্রই হচ্ছে দলবদল।
কংগ্রেস বা অন্য দল ভাঙিয়ে ক্ষমতা দখলে মত্ত বিজেপি। উদাহরণ হিসেবে আসন্ন উত্তর প্রদেশ নির্বাচনের কথা বলা যায়। সেখানে কংগ্রেস নেতা জীতিন প্রসাদকে দলে টেনে এনেছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল তারা। আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীরা একসময় কংগ্রেসেরই নেতা ছিলেন। নীতি-আদর্শের থেকেও ভারতীয় রাজনীতিতে এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে পাওয়ার বা ক্ষমতা। তাই বিজেপির পালে হাওয়া লাগতেই এতকাল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অভিযোগ তুলে গলা ফাটালেও এখন সেই দলেই নাম লেখাচ্ছেন অনেকে। রাজনৈতিক দর্শন বদলে যাচ্ছে ৩৬০ ডিগ্রি। আসলে রাজনীতিতে বোধ হয় আর কোনো দর্শন নেই, ক্ষমতাই শেষ কথা। তাই বামেরাও এখন রামে যেতে প্রস্তুত!
শুধু যে স্বেচ্ছায় দলবদল হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। অনেক সময় বিভিন্ন গোয়েন্দা ও তদন্তকারী সংস্থাও নাকি বড় ভূমিকা নিচ্ছেন এ দলবদলে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ। টিভি ক্যামেরার সামনে ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়ার অভিযোগে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হলেও ছাড় পেয়ে যান বিজেপি আশ্রিত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কারণ তদন্তকারী সংস্থাটি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের। উল্টোটাও হচ্ছে। অনৈতিক কাজকর্মই হয়ে উঠছে রাজধর্ম। পেগাসাস উদাহরণ মাত্র। ফোনে আড়িপাতা আগেও হতো, এখনো হয়। প্রযুক্তি বদলেছে। প্রযুক্তির হাত ধরে বদলেছে নৈতিক অধঃপতনও। তাই অনৈতিক কাজকর্ম নিয়ে শাসক বা বিরোধী কেউই খুব একটা চিন্তিত নন।
এর মধ্যেও আশা আছে। আশা—ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার মতো গণমাধ্যমও এখন স্বমহিমায় ফিরতে শুরু করেছে। ভারতীয় খবরের কাগজগুলোতে পেগাসাস বা রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে দুর্নীতির সমালোচনা শুরু হয়েছে। ২০২৪ দেরি আছে। সামনেই উত্তর প্রদেশ নির্বাচন। কিন্তু এখন থেকেই ভারতীয় গণমাধ্যমে মোদি-বন্দনার ধার কমতে থাকায় অনেকেই আশার আলো দেখছেন। মোহভঙ্গ হতে শুরু করেছে। অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সবাই একটু একটু করে জাগছে। এটাই হয়তো বাঁচাতে পারে ভারতের সংসদীয় শিষ্টাচার এবং অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে।
পেগাসাস কাণ্ড নিমিত্ত মাত্র। ভারতীয় রাজনীতিতে বিরুদ্ধ মতের প্রতি অসহিষ্ণুতার বিষাক্ত ভাইরাস বহুদিন ধরেই চলছে। রাজনৈতিক মতবাদগত দৈন্য পরিবেশকে করে তুলছে আরও অসহনীয়। বহুদিন ধরে লাঞ্ছিত হচ্ছে ভারতীয়দের মৌলিক অধিকার। কথায় কথায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা নিয়ে তাই বিচারপতিদেরও মুখ খুলতে বাধ্য হতে হয়েছে। সংখ্যার জোরে বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা আগেও ছিল, কিন্তু এখনকার মতো বেলাগাম আগে কখনো হয়নি। ভারতের জাতীয় সংসদে সংখ্যার থেকেও অনেক সময় পাণ্ডিত্য সম্ভ্রম আদায়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে। যেমন বামপন্থীদের সংখ্যা তেমন না থাকলেও জ্যোতির্ময় বসু, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, সোমনাথ চ্যাটার্জিরা জাতীয় সংসদে অন্যদের কাছ থেকে সম্ভ্রম আদায়ে চিরকালই মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।
ইসরায়েলের বেসরকারি সংস্থা এনএসও গ্রুপের তৈরি সফটওয়্যার কাজে লাগিয়ে ভারত সরকার বহু মানুষের গোপন কথায় আড়িপাতার চেষ্টা করেছে। সরকার যাকেই মনে করেছে সন্দেহজনক, তারই ফোনে বিদেশি সংস্থার সফটওয়্যার ব্যবহার করে আড়ি পাতা হয়। এমনকি, ভারতের বর্তমান তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের ফোনেও নাকি আড়িপাতা হয়। পেগাসাস কাণ্ডের শিকারদের মধ্যে রয়েছেন অবশ্যই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা, তৃণমূল নেতা অভিষেক ব্যানার্জি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ভারতের সাবেক মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, বিভিন্ন তদন্তকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা। এ অভিযোগ শুধু ভারতের নয়, দুনিয়ার ১৬টি গণমাধ্যমের তদন্তে উঠে এসেছে।
এই নিয়ে সরকার পক্ষ আন্তর্জাতিক চক্রান্তের দোহাই দিয়ে ফের রাষ্ট্রপ্রেমের গান গাইতে শুরু করেছে। বিরোধীরা অবশ্য গণতন্ত্র-গণতন্ত্র-গণতন্ত্র করে আর্তনাদ করছেন। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনলে মনে হতেই পারে, দু-পক্ষের বক্তব্যই বোধ হয় ঠিক। ঠিক বা ভুল—যাই হোক না কেন, ভারতীয় রাজনীতি ও মিডিয়া এখন উত্তাল পেগাসাস নিয়ে। অনেকটাই ধামাচাপা পড়ে গেছে, করোনা মোকাবিলা, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে ফরাসি তদন্ত, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি কংগ্রেসের ভাঙন, বিরোধীদের অনৈক্য থেকে শুরু করে অনেকগুলো জ্বলন্ত সমস্যা। মানুষকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্ট্যান্ট স্বামীর ৮৪ বছর বয়সে বন্দিদশায় মৃত্যু, উত্তর প্রদেশে লাশ খুবলে খাওয়া কুকুরের ছবি থেকে শুরু করে কলকাতায় ভুয়া আমলা-ভুয়া টিকা-ভুয়া পুলিশের জয়জয়কার।
বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা আগেও ছিল। অবশ্যই ছিল। কিন্তু কংগ্রেসের উদার রাজনৈতিক দর্শন জরুরি অবস্থার দিনগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে কখনোই বিরোধীদের ওপর সামগ্রিক নজরদারিকে এমন বেআব্রু করেনি। কোথাও একটা বিরুদ্ধ মতবাদের প্রতিও সম্ভ্রম ছিল ভারতীয় রাজনীতির অঙ্গ। হিন্দুত্ববাদী সরকার প্রতিষ্ঠার পর অটলবিহারী বাজপেয়ির সরকারও সংসদীয় রাজনীতিতে সেই পরম্পরাকে অটল রেখেছিলেন। সৌজন্যবোধ ছিল ভারতীয় রাজনীতির অলংকার। কথায় কথায় বিরোধীদের জেলে ভরার রাজনীতি জরুরি অবস্থার পর তেমন একটা দেখা যায়নি। কিন্তু ২০১৪ সালে বিজেপি বিশাল জনমত নিয়ে সরকার গড়ার পর থেকেই বিরোধী মতবাদ উপেক্ষিত হতে থাকে। রাষ্ট্রীয় যন্ত্র যথেচ্ছ ব্যবহার হতে থাকে নরেন্দ্র মোদির আমলে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মোদির মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অমিত শাহের যোগদান অসহিষ্ণুতার রাজনীতিকে আরও বেশি করে প্রণোদনা দিতে থাকে। স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে ওঠে শাসক দলের শাখা সংগঠন। টলে যায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। নীতিহীন দলবদল হয়ে ওঠে ভারতীয় রাজনীতিতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
মোদির আমলে বাবরি মসজিদের জায়গায় তৈরি হচ্ছে রামমন্দির। কাশ্মীরকে আরএসএসের কর্মসূচির মতোই পরিচালনা করা হচ্ছে। নাগরিকত্বের মতো বিষয়েও হিন্দুত্ব তাস খেলতে শুরু করেছে বিজেপি। বিভাজনের রাজনীতি চলছে সর্বত্র। কিন্তু সেই বিভাজনের রাজনীতি বিজেপিকে সাফল্য এনে দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বারবার। কংগ্রেস দুর্বল হলেও ভারতীয়দের রক্তে মিশে রয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা। তাই বিজেপিকে জিততে হলে কংগ্রেসিদেরই দরকার হচ্ছে সর্বত্র। বিজেপি নেতাদের কাছে ক্ষমতা দখলের বীজমন্ত্রই হচ্ছে দলবদল।
কংগ্রেস বা অন্য দল ভাঙিয়ে ক্ষমতা দখলে মত্ত বিজেপি। উদাহরণ হিসেবে আসন্ন উত্তর প্রদেশ নির্বাচনের কথা বলা যায়। সেখানে কংগ্রেস নেতা জীতিন প্রসাদকে দলে টেনে এনেছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল তারা। আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীরা একসময় কংগ্রেসেরই নেতা ছিলেন। নীতি-আদর্শের থেকেও ভারতীয় রাজনীতিতে এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে পাওয়ার বা ক্ষমতা। তাই বিজেপির পালে হাওয়া লাগতেই এতকাল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অভিযোগ তুলে গলা ফাটালেও এখন সেই দলেই নাম লেখাচ্ছেন অনেকে। রাজনৈতিক দর্শন বদলে যাচ্ছে ৩৬০ ডিগ্রি। আসলে রাজনীতিতে বোধ হয় আর কোনো দর্শন নেই, ক্ষমতাই শেষ কথা। তাই বামেরাও এখন রামে যেতে প্রস্তুত!
শুধু যে স্বেচ্ছায় দলবদল হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। অনেক সময় বিভিন্ন গোয়েন্দা ও তদন্তকারী সংস্থাও নাকি বড় ভূমিকা নিচ্ছেন এ দলবদলে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ। টিভি ক্যামেরার সামনে ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়ার অভিযোগে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হলেও ছাড় পেয়ে যান বিজেপি আশ্রিত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কারণ তদন্তকারী সংস্থাটি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের। উল্টোটাও হচ্ছে। অনৈতিক কাজকর্মই হয়ে উঠছে রাজধর্ম। পেগাসাস উদাহরণ মাত্র। ফোনে আড়িপাতা আগেও হতো, এখনো হয়। প্রযুক্তি বদলেছে। প্রযুক্তির হাত ধরে বদলেছে নৈতিক অধঃপতনও। তাই অনৈতিক কাজকর্ম নিয়ে শাসক বা বিরোধী কেউই খুব একটা চিন্তিত নন।
এর মধ্যেও আশা আছে। আশা—ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার মতো গণমাধ্যমও এখন স্বমহিমায় ফিরতে শুরু করেছে। ভারতীয় খবরের কাগজগুলোতে পেগাসাস বা রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে দুর্নীতির সমালোচনা শুরু হয়েছে। ২০২৪ দেরি আছে। সামনেই উত্তর প্রদেশ নির্বাচন। কিন্তু এখন থেকেই ভারতীয় গণমাধ্যমে মোদি-বন্দনার ধার কমতে থাকায় অনেকেই আশার আলো দেখছেন। মোহভঙ্গ হতে শুরু করেছে। অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সবাই একটু একটু করে জাগছে। এটাই হয়তো বাঁচাতে পারে ভারতের সংসদীয় শিষ্টাচার এবং অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে।
২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন সঞ্জয় বাঙ্গার। এর আগে বা পরে তিনি ভারতের হয়ে খুব বেশি দিন খেলেননি বা কোনো চমক দেখাতে পারেননি। তবে এবার তিনি ভিন্ন এক কারণে এসেছেন আলোচনায়। তাঁর ছেলে আরিয়ান বাঙ্গার লিঙ্গ পরিবর্তন করে মেয়ে হয়ে গেছেন। নিজের নাম দিয়েছেন আনায়া বাঙ্গার।
১ ঘণ্টা আগেভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি আদালত বাংলাদেশি এক নাগরিককে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একটি সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্র মামলায় গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) বিশেষ আদালত তাঁকে এই কারাদণ্ড দেন
৩ ঘণ্টা আগেবিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকসের ‘পার্টনার’ বা সহযোগী দেশের মর্যাদা পেয়েছে ইন্দোনেশিয়া। রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্দর প্যানকিন এই তথ্য জানিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডও এই মর্যাদা পেয়েছে। তবে শেষোক্ত দেশ দুটির নাম এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। রুশ
৪ ঘণ্টা আগেগতকাল শুক্রবার ৪৮ তম কলকাতা বইমেলা ২০২৫–এর লোগো উদ্বোধন হয়। এবারের থিম জার্মান। আগামী ২৮ জানুয়ারি বইমেলার উদ্বোধন। তবে এবার ১ হাজার ৫০টি স্টলের মধ্যে বাংলাদেশি কোনো স্টল নেই। আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই বইমেলা।
৫ ঘণ্টা আগে