দিল্লি ও আসাম সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করল উলফার একাংশ

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

প্রায় পাঁচ দশকের বিরোধের ইতি টেনে অবশেষে ত্রিপক্ষীয় শান্তি চুক্তিতে সই করেছে ভারতের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা। আজ শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দিল্লিতে আসামের এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংলাপপন্থী অরবিন্দ রাজখোয়ার নেতৃত্বাধীন অংশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে। তবে এই শান্তিচুক্তির বিরোধিতা করেছে উলফার পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন অংশ। 

টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

আসাম রাজ্যের সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, আসামের উন্নতিতে অনুপ্রবেশকারী রুখতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ ছাড়াও উলফা নেতৃত্বকে স্থানীয় বাসিন্দাদের জমির অধিকার দেওয়া এবং আসামের উন্নতির জন্য কেন্দ্রীয় অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। 

শান্তিচুক্তির পর অমিত শাহ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ে উলফার সব যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে সরকার। উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নতির জন্য নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপরেও আস্থা রাখার জন্য উলফা নেতৃত্বকে অনুরোধ জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

অমিত শাহের পাশে বসে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, উলফার সঙ্গে শান্তিচুক্তি আসামের বড় অংশে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনবে। আগেই আলোচনাপন্থী উলফার নেতৃত্বে একপ্রস্ত কথা এগিয়ে রেখেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হলো। 

আসামের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকের দিনটি আসামের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশনায় আসামের শান্তির জন্য কাজ সবসময়ই চলছিল। তিনটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং এর মাধ্যমে আসামে উপজাতীয় জঙ্গিবাদের অবসান হয়েছে।’ 

 ১৯৭৯ সালে ‘স্বাধীন আসাম রাষ্ট্র’ গঠনের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত হয় উলফা। সংগঠনটির সশস্ত্র আন্দোলনে এক সময় উত্তাল হয়েছিল আসাম। পরে অবশ্য ক্রমশ গুরুত্ব হারাতে থাকে সংগঠনটি। নানা সশস্ত্র কার্যকলাপে জড়িত থাকায় ১৯৯০ সালে কেন্দ্রীয় সরকার সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করে। পরে পুলিশি অভিযানে উলফার বহু সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। 

সম্প্রতি আলোচনাপন্থী উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেতিয়া জানিয়েছিলেন, শিগগিরই উলফার সঙ্গে শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হবে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের। ভেঙে দেওয়া হবে উলফাও। 

তবে উলফার পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের বদলে আসামে বিদেশি শনাক্তকরণের ভিত্তিবর্ষ ১৯৫১ সাল করার শর্ত রাখা হয়েছিল। শুক্রবার কোন শর্তে শান্তিচুক্তি হলো, তা এখনো পুরো স্পষ্ট নয়। 

সশস্ত্র সংগ্রাম স্থগিত করার লক্ষ্যে ২০১১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজখোয়া অংশের ৫৫৩ জন নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দ্র এবং আসাম সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের সূচনা হয়। উলফার কমান্ডার-ইন-চিফ পরেশ বড়ুয়া অবশ্য আলোচনার অংশ নিতে অস্বীকার করেন এবং ২০১২ সালে রাজখোয়ার নেতৃত্বাধীন দল থেকে বেরিয়ে যান। 

চুক্তিতে অংশ না নেওয়া পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন উলফার কট্টরপন্থী অংশ চীন-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থান করছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত