খাজা মঈনুদ্দিন চিশতীর দরগাহর নিচে শিবমন্দির থাকার দাবি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪৭
Thumbnail image
আজমিরে খাজা মঈনুদ্দিন চিশতীর দরগাহ। ছবি: সংগৃহীত

রাজস্থানের আজমির শহরে অবস্থিত সুফি সাধক ও চিশতিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা খাজা মঈনুদ্দিন চিশতীর দরগাহ শরীফ নিয়ে নতুন করে বিতর্কের শুরু হয়েছে। দিল্লিভিত্তিক হিন্দু সেনা সংগঠন দাবি করছে, বর্তমান দরগাহের স্থানে আগে একটি শিব মন্দির ছিল। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আজমিরের মুন্সেফ আদালত সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক, প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (এএসআই) এবং দরগাহ কমিটিকে নোটিশ জারি করেছে। দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর দিয়েছে।

খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির এই দরগাহ শত শত বছর ধরে মুসলিম ও অমুসলিম উভয়ের জন্য পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মানবতা, প্রেম, সহিষ্ণুতা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভক্তি প্রচার ছিল খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির জীবনকর্মের মূল বার্তা। দুনিয়া জুড়ে তিনি ‘গরিবে নেওয়াজ’ নামে পরিচিত।

ভারতীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়, হিন্দু সেনার পক্ষে আইনজীবীরা আদালতে কিছু দলিল ও তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৯১১ সালে প্রকাশিত হর বিলাস সারদারের লেখা আজমির: হিস্টরিকেল অ্যান্ড ডেসক্রিপটিভ নামের একটি বই, যেখানে দাবি করা হয়েছে দরগাহ নির্মাণে শিব মন্দিরের অবশিষ্টাংশ ব্যবহার করা হয়েছিল।

হিন্দু সেনার দাবি, দরগাহের গম্বুজে মন্দিরের কিছু টুকরো থাকার এবং বেসমেন্টে গর্ভগৃহের উপস্থিতির প্রমাণ রয়েছে। তারা প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মাধ্যমে দরগাহ স্থানের একটি বিস্তারিত জরিপ চেয়েছে।

হিন্দু সেনার দাবি পরিপ্রেক্ষিতে দরগাহের উত্তরাধিকারী অভিভাবক সংগঠনের সম্পাদক সৈয়দ সারওয়ার চিশতী বলেছেন, এই দাবিগুলোকে ভিত্তিহীন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘দরগাহ মুসলিমদের জন্য এক অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ খাজা ভক্তদের অনুভূতিতে আঘাত করবে।’

আজমিরে খাজা মঈনুদ্দিন চিশতীর দরগাহ। ছবি: সংগৃহীত
আজমিরে খাজা মঈনুদ্দিন চিশতীর দরগাহ। ছবি: সংগৃহীত

পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, গুজরাটের গিয়ানবাপী এবং মথুরার কৃষ্ণ জন্মভূমির মতো মামলার সঙ্গে এই বিতর্কের সাদৃশ্য দেখা যাচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রেই হিন্দু সংগঠনগুলো দাবি করেছে, মসজিদগুলো মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে উত্তর প্রদেশের সম্ভলের জামা মসজিদে স্থানীয় আদালতের নির্দেশে সমীক্ষক দল জরিপ করতে গেলে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় নিহত হন পাঁচজন। সেখানেও হিন্দুদের একই দাবি ছিল। অর্থাৎ হিন্দু মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি হয়েছে।

আজমিরের এই মামলাটি প্রথমে এখতিয়ারের জটিলতার কারণে পিছিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে এটি মুন্সেফ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। আদালত মামলাটি হিন্দিতে অনুবাদ করার নির্দেশ দেয় এবং ২০ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে।

খবরে বলা হয়, ২০ ডিসেম্বরের শুনানি এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে। জরিপ এবং প্রমাণাদি যাচাইয়ের ওপর নির্ভর করছে মামলার ভবিষ্যৎ। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ধরনের মামলা দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত