Ajker Patrika

হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের নতুন একটি যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩: ৫৩
হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের নতুন একটি যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে

হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কারণ সংঘাত আঞ্চলিক রূপ নিলে ইরানও জড়িয়ে পড়তে পারে। তবে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের নতুন একটি যুদ্ধ অনিবার্য— এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে ইসরায়েলি রাজনীতিক, জেনারেল ও সাধারণ জনগণ। 

নভেম্বরের শেষ দিকে একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে যে, ইসরায়েলের ৫২ শতাংশ মানুষ অবিলম্বে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পক্ষে। অন্যদিকে মাত্র ৩৫ শতাংশ মানুষ এই যুদ্ধ শুরুর বিপক্ষে।

গত ৭ অক্টোবর সকালে হামাসের হামলার খবর যখন প্রথমবারের মতো প্রকাশ পায়, ইতাই রুভেনি ও অন্য আপৎকালীন প্যারাট্রুপাররা তাঁদের ব্যাগ গুছিয়ে নেন। সেনাবাহিনী থেকে ডাক পড়ার আগেই জমায়েত হওয়ার স্থানে তারা চলে যান। কিন্তু দক্ষিণে গাজা সীমান্তে না গিয়ে উত্তর দিকের সীমান্তে যান। তাঁদের বিশ্বাস ছিল, সেখানে হামাসের চেয়ে বড় হুমকি হিসেবে রয়েছে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তেহরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ।

৪০ বছর বয়সী মাস্টার সার্জেন্ট ইতাই রুভেনি বেসামরিক জীবনে সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন উত্তরে না ঘটতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতেই তারা সেখানে এসেছেন। ইতাই রুভেনি আরও বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি, হিজবুল্লাহ হামাসের চেয়ে অনেক বেশি আধুনিক। এই সীমান্তে কেবল তিন হাজার নন, আরও বেশি যোদ্ধা আসতে পারে। তা ছাড়া এই সমীকরণে ইরানও থাকবে। তাদের মোকাবিলা করতেই আমরা এখানে এসেছি।’

ইসরায়েলের জন্য হিজবুল্লাহকে বড় বিপদ হিসেবে শুধু রুভেনিই দেখছেন না। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ও মন্ত্রিসভার অন্যান্য কট্টরপন্থী সদস্য লেবাননের এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিজেরাই আগে আক্রমণ চালানোর পক্ষে ছিলেন।

এতে প্রমাদ গুনছে ওয়াশিংটন। সংঘাত আঞ্চলিক রূপ নিলে ইরানও জড়িয়ে পড়তে পারে বলে তাদের ভয় আছে। অন্যদিকে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আস্থাভাজন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে ইসরায়েলি রাজনীতিক, জেনারেল ও সাধারণ জনগণের দৃঢ় বিশ্বাস, লেবাননের সঙ্গে তাদের নতুন একটি যুদ্ধ অনিবার্য।

সম্প্রতি দুই পক্ষের লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। সঙ্গে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনাও বেড়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলায় নিহত হয়েছে চারজন ইসরায়েলি। অন্যদিকে, প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন লেবাননের নাগরিক। অন্তত তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন ইসরায়েলের ড্রোন ও ট্যাংক হামলায়।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অরনা মিজরাহি বলেন, ‘ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে এবং এই প্রবণতা বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সংঘাত বৃদ্ধির এমন প্রবণতা সবচেয়ে দুশ্চিন্তার। কেউই পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ চায় না, কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকলে আমরা যেকোনো মুহূর্তে এ রকম পরিস্থিতিতে পড়তে পারি।’

গুহার জন্য বিখ্যাত রশ হানিকরা শহরের একটি রেডিও টাওয়ার ১৩ বার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত সপ্তাহে ৭০৫৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটির একটি ভবনের ছাদেও ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে। তড়িঘড়ি করে বাসিন্দাদের ছেড়ে যাওয়া একটি গ্রামে ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি করা হয়েছে।

হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা ড্রোন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন টের পেলে যেকোনো দিনই কয়েকবার সতর্কতা সংকেত বেজে ওঠে। আর সঙ্গে সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে আড়ালে চলে যান ইসরায়েলি সেনারা।

২০০৬ সালে ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধের পর থেকে গত ১৭ বছর সীমান্তবর্তী এলাকাটি তুলনামূলক শান্ত ছিল। কিন্তু সে বছরই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ১৭০১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী শান্তির গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি।


দ্য গার্ডিয়ানের প্রবন্ধ হতে সংক্ষেপিত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত