ইরাকে মার্কিন হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে জর্ডানে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রপ্তানি বন্ধের প্রস্তাব করেছেন ইরাকের এক আইনপ্রণেতা। গতকাল শনিবার সংসদ সদস্য মোস্তফা জব্বার এ ঘোষণা দেন বলে ইরাকের সংবাদমাধ্যম শাফাক নিউজের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি এ প্রস্তাব গ্রহণের জন্য অন্য সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন। 

ইরাকের বিদ্রোহী গোষ্ঠী জর্ডান–সিরিয়া সীমান্তে মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা করার পর, জবাবে ইরাকে বিমান হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ হামলায় প্রতিবেশী দেশ জর্ডান সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রতিক্রিয়ায় এমন প্রস্তাবের ঘোষণা দিয়েছেন সংসদ সদস্য মোস্তফা জব্বার। 

তিনি বলেন, ‘জর্ডানে ভর্তুকিতে তেল বিক্রি বন্ধে তেল মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করতে একটি সংসদীয় প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য আমি সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছি। আমাদের দেশের মর্যাদা রক্ষায় এবং আমাদের মানুষের জীবন, আমাদের গর্ব এবং আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের অবশ্যই সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।’ 

এ প্রস্তাবে সাম্প্রতিক হামলায় আম্মানের জড়িত থাকার অভিযোগে তেল মন্ত্রণালয়কে জর্ডানের কাছে ভর্তুকি মূল্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। 

সংবাদমাধ্যম জর্ডান টাইমসের এক প্রতিবেদনে জর্ডান সশস্ত্র বাহিনীর (জেএএফ) একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ইরাকে মার্কিন বিমান হামলায় রয়্যাল জর্ডান বিমানবাহিনীর সংশ্লিষ্টতা নেই। 

ইরাকের সার্বভৌমত্বের প্রতি জর্ডানের সেনাবাহিনীর শ্রদ্ধা এবং সব আরব দেশের সঙ্গে জর্ডানের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ গভীর সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে জেএএফ সূত্রটি প্রতিবেদনগুলোকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখে করে। 

গত শুক্রবার মার্কিন বাহিনী ইরাক ও সিরিয়ার কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সদর দপ্তর, গোয়েন্দা কার্যালয়, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও গোলাবারুদের গোডাউন এবং ইরান সমর্থিত কোনো গোষ্ঠী বা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থাপনাসহ ৮৫টি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়। 

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল–সুদানির কার্যালয় এই বিমান হামলাকে ‘ইরাকের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে নতুন আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। 

প্রতিবেদন অনুসারে, ইরাকের সংসদে জর্ডানে তেল রপ্তানি বন্ধ করার আহ্বান জানানোর ঘটনা এটিই প্রথম নয়। সংসদীয় তেল ও গ্যাস কমিটির সদস্য জয়নাব আল–মৌসাভি এর আগে বলেছিলেন, জর্ডানের অবস্থান ইরাকের প্রতি ‘সব সময়ই শত্রুভাবাপন্ন’, বিশেষত পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের (পিএমএফ) প্রতি। এই বাহিনী ইরাকের সশস্ত্র বাহিনীরই অংশ। 

জর্ডান তার জ্বালানি চাহিদার ৯৫ শতাংশই আমদানি করে এবং ইরাক এর অপরিশোধিত তেলের অন্যতম সরবরাহকারী। গত বছর, ইরাক প্রতিদিন গড়ে ১৪ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ১ লাখ ব্যারেলই জর্ডানে রপ্তানি করা হয়েছে।