Ajker Patrika

ইসরায়েলি হামলায় ফের নরকের দরজা খুলল গাজায়, প্রাণহানি বেড়ে ৩৪২

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৪: ৪২
নিহত স্বজনকে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন ফিলিস্তিনি এক নারী। ছবি: এএফপি
নিহত স্বজনকে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন ফিলিস্তিনি এক নারী। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় প্রাণহানি বেড়ে সাড়ে তিন শ ছুঁই ছুঁই। সবশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, উপত্যকাটিতে নিহত হয়েছে ৩৪২ ফিলিস্তিনি, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরা।

আলজাজিরার তথ্যমতে, সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। বেছে বেছে আবাসিক ভবন আর শরণার্থীশিবিরগুলোকে টার্গেট করে বিমান থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য যুদ্ধবিরতির সময় খুলে দেওয়া রাফাহ ক্রসিংও বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। এর দুই দিন আগেই উপত্যকায় ঢোকার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। ফলে উপত্যকায় ঢুকতে পারছে না কোনো ত্রাণসহায়তা।

নতুন করে গাজায় হামলা শুরুর পক্ষে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সাফাই—হামাস শান্তি চায় না। যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে মার্কিন প্রতিনিধি ও মধ্যস্থতাকারীরা যেসব প্রস্তাব দিয়েছে, তার সবই প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরই হামলার পথ বেছে নিয়েছে ইসরায়েল।

এই হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, গাজায় হামলা শুরুর অর্থ হলো জিম্মিদের মৃত্যু। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত আল-রিশেক সিএনএনকে বলেন, ‘হামাসের কাছে এখনো যাঁরা জিম্মি আছেন তাঁদের জীবন বিপন্ন করছে ইসরায়েল নিজেই। নেতানিয়াহুর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত মূলত জিম্মিদের জন্য মৃত্যুদণ্ড।’

তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার মধ্য দিয়ে যা অর্জন করা সম্ভব হতো, তা যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্য দিয়ে কখনোই পাবে না ইসরায়েল। আলোচনাকে তারাই ব্যর্থ করেছে, হামাস নয়।’

গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) হামলায় ক্ষুব্ধ ইসরায়েলের সাধারণ নাগরিকেরাও। এই হামলার মধ্য দিয়ে বাকি জিম্মিদের জীবন অনিশ্চয়তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে তাঁর পদত্যাগ চাইছেন তাঁরা। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে আসছেন সাধারণ ইসরায়েলিরা। প্রায় দেড় বছর সময় পেরিয়ে গেলেও সব জিম্মিকে মুক্ত করতে না পারায় ক্ষোভ আরও বাড়ছে।

এদিকে বিশ্লেষকেরা বলছেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কখনোই আন্তরিক ছিলেন না। দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিসের অধ্যাপক মোহাম্মাদ ইলমাসরি বলেন, ‘শুরু থেকেই ইসরায়েল চায়নি যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর হোক। আত্মরক্ষার বুলি আউড়িয়ে কেবল যুদ্ধের মাঠে ফেরার যুক্তি দিয়ে গেছে। ৪২ দিন করে তিন ধাপের যে যুদ্ধবিরতির কথা প্রথমে হয়েছিল তা বাস্তবায়ন সম্ভব হলে একপর্যায়ে যুদ্ধ শেষ হয়ে যেত, যা ইসরায়েল চায় না। প্রথম ধাপের ১৬তম দিন থেকে বিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা নিয়ে টালবাহানা করতে করতে একেবারে শেষ পর্যায়ে আলোচনায় বসতে রাজি হলো ইসরায়েল। তবে, আলোচনার শুরু থেকেই তারা কেবল প্রথম ধাপ বর্ধিত করার প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।’

নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে যুদ্ধ জিইয়ে রাখতে চান—এমন কথা অনেক বিশ্লেষকই বহুবার বলেছেন। এবার যেন তারই কিছুটা প্রমাণ মিলল। গাজায় হামলা শুরুর পর স্থগিত হয়েছে নেতানিয়াহুর দুর্নীতি মামলার শুনানি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আত্মীয়দেরই শুধু চেনেন প্রকৌশলী রাশেদুল

জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মদদ: ৯ শিক্ষক বরখাস্ত, উপাচার্যের পেনশন বাতিল

বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র

জাবির সাবেক শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা হত্যা: ৭ শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার

জুলাই আন্দোলনে হামলা: জাবির ২৮৯ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ ৩ রকম শাস্তি দিল প্রশাসন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত