Ajker Patrika

আইসিজের রায়: কথা নয়, ফিলিস্তিনিরা এখন পদক্ষেপ চায়

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৫ মে ২০২৪, ১২: ০৫
আইসিজের রায়: কথা নয়, ফিলিস্তিনিরা এখন পদক্ষেপ চায়

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের যখন সাত মাস চলছে, তখন গাজার রাফাহে ইসরায়েলকে অবিলম্বে অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। তবে গাজায় নিজ বাড়ি থেকে বিতাড়িত সালওয়া আল মাসরি খুব বেশি আশা করেন না যে, আইসিজের রায় তাঁর দুর্দশা কমাবে। দেইর-আল-বালাহে খোলা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে রান্না করতে করতে সালওয়া বলেন, ‘ধ্বংসযজ্ঞ কেবল বেড়েই চলেছে। আমরা চাই এই সিদ্ধান্তগুলোর সত্যিকারের বাস্তবায়ন।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

ফিলিস্তিনের গাজায় শিগগিরই অভিযান বন্ধ করতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। পাশাপাশি পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশের জন্য গাজার দক্ষিণের রাফাহ ক্রসিং খুলে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আইসিজের কার্যালয়ে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় নির্দেশনাগুলো পড়ে শোনান আদালতের প্রেসিডেন্ট নাওয়াফ সালাম।

এর আগে গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনি জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গাজায় এবং বিশেষ করে রাফাহে ইসরায়েলের অভিযান বন্ধ করতে আইসিজের কাছে জরুরি ব্যবস্থা চেয়ে আবেদন করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তারও আগে দেশটি একই আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা করেছিল।

জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালতের আদেশ মেনে চলার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে সদস্য দেশগুলোর। তবে আদেশ প্রতিপালনে বাধ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নেই এই আদালতের। ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ এই রায়ের পর বলেছেন, ইসরায়েল তার জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হামাস জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তার ‘ন্যায় ও প্রয়োজনীয়’ যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে। হামলায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হামাসকে নির্মূল করতে রাফাহে অভিযানকে প্রয়োজনীয় বলে যুক্তি দেখিয়েছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে। তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল বলেছে, তারা আত্মরক্ষার জন্যই হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

ইসরায়েলি আক্রমণে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ফিলিস্তিনি নাগরিক শাবান আবদেল-রাউফ। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল যেন বিশ্বকে পাত্তাই দেয় না! তারা এমনভাবে কাজ করে, যেন আইনের ঊর্ধ্বে উঠে গেছে। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে শাস্তির বিরুদ্ধে রক্ষা করছে। বিশ্ব এখনো ইসরায়েলিদের হাতে আমাদের হত্যা বন্ধ করতে প্রস্তুত নয়।’

ইসরায়েল এই মাসের গোড়ার দিকে রাফাহে অভিযান শুরু করে। তাদের দাবি, রাফাহে লুকিয়ে থাকা অবশিষ্ট হামাস যোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্য তাদের। এই মাসে গাজার উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে একযোগে ইসরায়েলি হামলার ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। মানবিক সহায়তার প্রধান প্রবেশপথও বন্ধ করে দেওয়ায় বেড়েছে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি।

বিশ্ব আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। তবে এই রায়ই যে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা শেষ করার জন্য যথেষ্ট নয়, সেটিও উল্লেখ করেছে তারা।

ফিলিস্তিনিরা চায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ হোক। এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দেখতে চায় তারা। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নাবিল দিয়াব বলেন, ‘আমাদের আর কোনো ঘোষণার প্রয়োজন নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত