সামরিক আদালতে ইমরান খানের সমর্থকদের সাজা, আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯: ২৩
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

সামরিক স্থাপনায় হামলার দায়ে ৬০ জন বেসামরিক নাগরিককে ২ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন পাকিস্তানের সামরিক আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ অধিদপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ইমরান খানের এক আত্মীয় ও দুজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা রয়েছেন।

রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। তাঁর সমর্থকেরা সামরিক স্থাপনায় হামলা ও লুটপাট চালায়। যা পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়া বলে বিবেচিত হয়।

সেই সময় সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘জাতি, সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখার প্রতিশ্রুতিতে অটল।’

তবে সামরিক আদালতে বিচারের বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই সাজাগুলো নিয়ে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর মন্তব্য করেছে, সামরিক আদালতে বেসামরিক নাগরিকদের বিচার ‘স্বচ্ছতার অভাব, স্বাধীন পর্যালোচনা এবং ন্যায়বিচারের অধিকারকে দুর্বল করে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তির এই সাজাগুলো তার পরিপন্থী।

এদিকে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘সামরিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়া ন্যায়বিচারের অধিকার লঙ্ঘন করে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা আইনজীবী ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। এ ছাড়া তাদের সামরিক ও বেসামরিক আদালতে আপিল করারও সুযোগ রয়েছে।

তবে ইমরান খানের সমর্থকেরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। খান নিজেও দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

অন্যদিকে, সামরিক বাহিনী ও বর্তমান সরকার ইমরান খানের সমর্থকদের প্রতি অন্যায় আচরণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে সামরিক আদালতের এই রায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

পাকিস্তানে সামরিক আদালতে বেসামরিক নাগরিকদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলো দেশটির বিচার ব্যবস্থা, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত