Ajker Patrika

লিবিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে ১৬ পাকিস্তানির মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
নৌকাটিতে ৬৩ জন পাকিস্তানি ছিলেন। ছবি: প্রতীকী ছবি
নৌকাটিতে ৬৩ জন পাকিস্তানি ছিলেন। ছবি: প্রতীকী ছবি

লিবিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে ১৬ পাকিস্তানির মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে গত সোমবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সোমবার এ দুর্ঘটনার খবর জানায়। মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, নৌকাটিতে ৬৩ জন পাকিস্তানি ছিলেন। এদের মধ্যে ৩৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে তিনজনকে লিবিয়ায় অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাসে এবং একজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি ৩৩ জনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

পরে গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ১৬ জন পাকিস্তানির মৃত্যুর খবর জানানো হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উদ্ধার হওয়া ১৬ মরদেহের সঙ্গে থাকা পাসপোর্ট থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন কুররাম জেলার, পেশোয়ার, ওরাকজাই ও বাজৌরের এক জন করে রয়েছেন।

পাকিস্তান দূতাবাসের একটি দল দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জাওইয়াতে গিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি থাকা পাকিস্তানিকে দেখে এসেছেন তারা। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ ইউরোপে যাওয়ার জন্য ভূমধ্যসাগরের ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে পাচারকারীদের শরণাপন্ন হয়। এমনকি বড় অঙ্কের অর্থ দিয়ে থাকে। কিন্তু এদের অনেকেই অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নৌকাগুলোতে করে পথ পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যায়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই ঘটনার প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নিহতদের শনাক্ত করতে ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

অবৈধ অভিবাসন নিতে গিয়ে পাকিস্তানিদের মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম নয়। গত জানুয়ারিতে মরক্কোর দাখলা বন্দরের কাছে ৮০ জন যাত্রীবাহী একটি নৌকা ডুবে গেলে অন্তত ১৩ জন পাকিস্তানি নাগরিক মারা যান। গত ডিসেম্বরে গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের দক্ষিণে নৌকাডুবির পর ৪৭ জন পাকিস্তানিকে উদ্ধার করা হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ৫ জন।

এর আগে ২০২৩ সালে শত শত অভিবাসীবাহী একটি অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নৌকা লিবিয়ার তোবরুক থেকে গ্রিসের উদ্দেশে রওনা হয়ে ডুবে যায়, তখন ৩৫০ জনেরও বেশি পাকিস্তানির মৃত্যু হয়।

পাকিস্তানের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে ৬ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানি অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার পাকিস্তানি এই বিপজ্জনক পথে যাত্রা করে।

ভূমধ্যসাগরীয় সমুদ্র পথ বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী অভিবাসন পথ হিসেবে পরিচিত, যেখানে শরণার্থী এবং চাকরিপ্রত্যাশী বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে। প্রতি বছর হাজার হাজার পাকিস্তানি উন্নত জীবনের আশায় মানব পাচারকারীদের বড় অঙ্কের অর্থ দিয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ পথে যাত্রা করেন। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে লিবিয়ার পূর্বে আল-আকিলা উপকূল থেকে ২৩ জন বাংলাদেশি অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ভূমধ্যসাগর হয়ে অবৈধ উপায়ে ইতালি যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় তাদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত