৭৪ বছরে জুটিয়েছে নতুন প্রেমিক, একটি ডিমও পেড়েছে অ্যালবাট্রস পাখিটি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১: ২৭
নিজের ডিম আগলে রেখেছে উইজডম নামের অ্যালবাট্রস পাখিটি। ছবি: সিএনএন

নতুন ইতিহাস গড়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক বুনো পাখি হিসেবে পরিচিত একটি অ্যালবাট্রস। বিজ্ঞানীদের ডাকা ‘উইজডম’ নামের এই অ্যালবাট্রস পাখিটি লেইসান প্রজাতির।

বৃহস্পতিবার সিএনএন জানিয়েছে, ৭৪ বছর বয়সে একটি ডিম পেড়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে উইজডম। গত চার বছরের মধ্যে এটিই তার প্রথম ডিম। বিরল এই ঘটনা বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিশেষ আনন্দ ছড়িয়ে দিয়েছে।

হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের উত্তরের একটি দ্বীপে অবস্থিত মিডওয়ে অ্যাটল ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ অভয়ারণ্যে উইজডম তার এক নতুন সঙ্গীরও দেখা পেয়েছে। সম্প্রতি তাকে ডিম ও প্রেমিক সহ দেখা গেছে।

সুখবরটি দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস (ইউএসএফডব্লিউএস) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছে, ‘উইজডম আবারও সফল হয়েছে!’

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী গবেষক জন প্লিসনার বলেছেন, ‘আমরা আশাবাদী, ডিমটি ফুটবে এবং উইজডম আরেকটি বাচ্চা লালনপালন করতে সক্ষম হবে। এটি সত্যিই আনন্দদায়ক এক ঘটনা।’

লেইসান অ্যালবাট্রস সাধারণত ১২ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। তবে উইজডম প্রাকৃতিক এই গড় আয়ুকে অনেক পেছনে ফেলে এখনো বেঁচে থাকাই শুধু নয়, ডিমও পাড়ছে। বিষয়টি গবেষকদের বিস্মিত করছে।

জানা গেছে, ১৯৫৬ সালে বিশিষ্ট পাখি বিশারদ শ্যান্ডলার রবিন্স উইজডমের পায়ে একটি লাল ব্যান্ড পরিয়ে দিয়েছিলেন। এই লাল ব্যান্ডই উইজডমের বয়স জানতে ভূমিকা রেখেছে।

ইউএসএফডব্লিউএস-এর হিসাব অনুযায়ী, উইজডম তার জীবদ্দশায় প্রায় ৬০টি ডিম পেড়েছে এবং অন্তত ৩০টি ছানা লালন-পালন করেছে।

দীর্ঘদিন ধরেই উইজডমের সঙ্গী ছিল ‘আকেয়াকামাই’ নাম দেওয়া আরেকটি অ্যালবাট্রস। তবে ২০২১ সালের পর আকেয়াকামাইকে আর দ্বীপে দেখা যায়নি। পরে অবশ্য একটি নতুন সঙ্গী পেয়ে যায় উইজডম। সেই সঙ্গীর পায়েও ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সিএনএন জানিয়েছে, প্রতি বছর লাখ লাখ অ্যালবাট্রস মিডওয়ে অ্যাটলে ফিরে এসে বাসা বাঁধে এবং ছানা লালন-পালন করে। অক্টোবর ও নভেম্বর মাস তাদের মিলন ও প্রজনন মৌসুম। ওই অভয়ারণ্যটিতে অ্যালবাট্রস পাখিরা বছরে ছয় মাসের কিছু বেশি সময় থাকে। এই সময়টিতে তারা সমুদ্রের ওপর দিয়ে মাইলের পর মাইল উড়ে ছানাদের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করে।

একটি পূর্ণবয়স্ক লেইসান অ্যালবাট্রস বছরে প্রায় ৫০ হাজার মাইল উড়ে। উইজডমের বয়স অনুযায়ী, সে চাঁদে পৌঁছে আবারও ফিরে আসার সমান দূরত্ব উড়ে ফেলেছে।

অ্যালবাট্রস পাখির জন্য পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণ একটি বড় বিপদ। অনেক অ্যালবাট্রসই সমুদ্রে রঙিন প্লাস্টিককে খাদ্য মনে করে গিলে ফেলে, যা তাদের অকাল মৃত্যুর কারণ হয়।

তবে শত বাধা পেরিয়ে উইজডমের দীর্ঘজীবন এবং এখনো সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক বিপদ এবং দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দিয়েও তার জীবনযাত্রা এক বিস্ময়ের উদাহরণ।

উইজডমের গল্পটিকে শুধু একটি পাখির জীবন নয়, বরং প্রকৃতির সম্ভাবনা এবং স্থিতিশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলের ‘হৃৎপিণ্ড’ তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সাগরে নিম্নচাপ, কত দিন বৃষ্টি হতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর

শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান যার যার স্থানে শ্রেষ্ঠ: গয়েশ্বর

র‌্যাব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি: নূর খান লিটন

হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়াল টিউলিপের নামও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত