Ajker Patrika

ফ্লোরিডার ধসে পড়া ভবনটি নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন প্রকৌশলীরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৭ জুন ২০২১, ০৫: ২২
ফ্লোরিডার ধসে পড়া ভবনটি নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন প্রকৌশলীরা

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামি শহরে যে ১২ তলাবিশিষ্ট ভবন ধসে পড়েছে, তা নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন প্রকৌশলীরা। ২০১৮ সালে সরকারি পরিদর্শন দলে থাকা প্রকৌশলীরা ভবনটির বেশ কিছু অংশ ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু সেই প্রতিবেদনকে আমলে নেননি ভবনটির কর্তৃপক্ষ।

ফ্লোরিডার মায়ামির সার্ফসাইডের চ্যাম্পলিন টাওয়ারসের দক্ষিণ দিকের সুউচ্চ ভবন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত বুধবার ধসে পড়ে। এতে এখন পর্যন্ত চারজন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ১৫৯ জন।

ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে দেওয়া প্রতিবেদনের খবরটি প্রথম প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। এতে বলা হয়, ভবনটিতে সে সময় থাকা কিছু কাঠামোগত সমস্যার বিষয়ে ২০১৮ সালেই সতর্ক করেছিলেন প্রকৌশলীরা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে এই সতর্কবার্তা ফ্লোরিডা টাউন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। সেই সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবনটির পার্কিংয়ে ফাটল রয়েছে। এ ছাড়া এর পুলের নিচের স্ল্যাবেও ত্রুটি রয়েছে। আর ভবনের ছাদ সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সম্প্রতি। সেই সতর্কবার্তা আমলে নিয়ে ভবনটি সংস্কার করা হয়েছিল কিনা, তা অবশ্য জানা যায়নি।

অবকাঠামোগত সমীক্ষা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ভবনটির বিভিন্ন কলাম, বিম ও দেয়ালে নানা মাত্রার ফাটলের কথা জানানো হয়েছিল আগেই। ভবনের প্রবেশমুখের র‍্যাম্পসহ বহু স্থান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল সেই প্রতিবেদনে। ১২ তলা সেই ভবনের বিভিন্ন অংশের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে এতে ভবনটি দ্রুত সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছিল।

সমীক্ষা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছিলেন মোরাবিটো কনসালট্যান্টসের ফ্রাঙ্ক মোরাবিটো। প্রতিবেদনটি সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে সিএনএন।

এদিকে ওই কন্ডোমিনিয়াম অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষের আইনজীবী কেনেথ ডিরেকটর যেকোনো ধরনের আগাম অনুমানের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। সিএনএনকে তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে ভবনটির জীবৎকাল ৪০ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় এতে বেশ কয়েকটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। কিন্তু এ ধরনের কোনো ঝুঁকির বিষয় সম্পর্কে জানা যায়নি।

মায়ামির এই ভবন ধসের ঘটনার দিকে এখন যুক্তরাষ্ট্র শুধু নয়, গোটা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভবনটিতে চলমান উদ্ধার তৎপরতার দিকে দৃষ্টি রেখেছেন। বর্তমানে তিনি সপরিবারে ক্যাম্প ডেভিডে অবস্থান করছেন। নিজের সহকারীদের তিনি নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন, যেন এ বিষয়ে প্রতিনিয়ত তাঁকে অবহিত করা হয়। আর মায়ামি–ডাডের মেয়র ড্যানিয়েলা লেভিন কাভা বলেছেন, এর শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার এ সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরা ড্যানিয়েলা বলেন, ‘এই বিশেষ ভবনটিতে ঠিক কী ঘটেছিল, তার সবকিছুর খোঁজ নেওয়া হবে। আমরা এটি সম্পর্কে সব তথ্য জোগাড় করব। আমাদের ভবনগুলোকে অবশ্যই কাঠামোগত দিক থেকে যথার্থ হতে হবে। নিয়মিত পর্যালোচনা হওয়া উচিত। এবং এমন বিষয়ের ক্ষেত্রে আইনেও কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আমরা সেটা করব। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করব আমরা। এই মুহূর্তে আমরা সেই পরিবারগুলোর দিকে মনোযোগ দিয়েছি, যারা তাদের আপনজনকে হারিয়েছে, বা হারিয়ে ফেলার উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত