অনলাইন ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত হয়ে গেছে এরই মধ্যে। তিনি অভিবাসন, অর্থনীতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে নজিরবিহীন ক্ষমতার অধিকারী হতে যাচ্ছেন। কারণ, মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উভয় কক্ষে তাঁর দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে।
গতকাল বুধবার বিজয়ী ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি একটি সহজ মন্ত্রের মাধ্যমে শাসন পরিচালন করব। আমার দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো আমি রক্ষা করব।’ তবে তিনি কীভাবে তাঁর উদ্দেশ্য অর্জন করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এর আগে, ২০২৩ সালে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের সময় তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের লক্ষ্যবস্তু করবেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘না, না, না। তবে প্রথম দিন ছাড়া! প্রথম দিনেই আমরা সীমান্ত বন্ধ করে দেব এবং তেল উত্তোলন শুরু করব। এরপর, একটি বিষয় আমি বলতে চাই—আমি কোনো স্বৈরশাসক নই।’
ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রচারণার সময় নানাবিধ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে ৭টি প্রতিশ্রুতি তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সেই অগ্রাধিকারভিত্তিক কাজগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
১. অনথিভুক্ত অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় আকারে অবৈধ অভিবাসী’ বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর প্রথম আমলে সময়ে শুরু হওয়া মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করারও অঙ্গীকার করেছিলেন।
বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অধীনে গত বছরের শেষে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়। তবে ২০২৪ সালে তা কমে আসে। বিশ্লেষকেরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের প্রতিশ্রুত অনুযায়ী এ ধরনের বিপুল পরিমাণে অভিবাসী বের করে দেওয়ার বিষয়টি আইনগত এবং যৌক্তিকভাবে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এই বিষয়টি মার্কিন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীর করে দিতে পারে।
২. অর্থনৈতিক সংস্কার, কর ও শুল্ক খাত
বুথ ফেরত বিভিন্ন জরিপের তথ্য বলছে, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের কাছে অর্থনীতি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ট্রাম্প মুদ্রাস্ফীতি শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জো বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, যদিও পরে তা আবার কমে আসে। ট্রাম্প এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। কারণ, একজন প্রেসিডেন্টের সরাসরি মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত খাতে প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা সীমিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালের কর সংস্কারের সম্প্রসারণের মাধ্যমে ব্যাপক কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত বন্ডের ওপর থেকে কর বাতিল, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয়ে কর বাতিল এবং কোম্পানি কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এর বাইরে, তিনি বিদেশি পণ্যের ওপর কমপক্ষে ১০ শতাংশ নতুন শুল্ক প্রস্তাব করেছেন, যাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো যায়। চীন থেকে আমদানির ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কথাও তিনি বলেছেন। তবে কিছু অর্থনীতিবিদ সতর্ক করেছেন যে, এ ধরনের পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে পারে।
৩. জলবায়ু নীতিমালা বাতিল বা সংস্কার
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে শতাধিক পরিবেশ সুরক্ষা আইন প্রত্যাহার করেছিলেন এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মতো আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে থেকে আমেরিকাকে প্রথম দেশ হিসেবে প্রত্যাহার করে নেন। এবারও তিনি পরিবেশ সংক্রান্ত আইন শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মূলত, আমেরিকার গাড়ি শিল্পকে সহায়তা করার লক্ষ্যে তিনি এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। তিনি বারবার বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পকে আক্রমণ করেছেন এবং বাইডেন সরকার পরিবেশবান্ধব গাড়ির শিল্পের বিষয়ে বিষয়ে যে নীতিমালা নিয়েছিল তা বাতিল করার অঙ্গীকার করেছেন।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎস যেমন উইন্ডমিলের প্রতি তাঁর তেমন আগ্রহ নেই। তিনি আর্কটিক অঞ্চলের মতো জায়গাগুলোতে তেল উত্তোলনের জন্য অনুমতি দিতে চান। তাঁর মতে, এই বিষয়টি জ্বালানির দাম কমাতে সাহায্য করবে, যদিও বিশ্লেষকেরা এতে সন্দিহান।
৪. ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে কিয়েভের হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে কয়েক হাজার কোটি ডলার ব্যয় করছে, তার সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ এই যুদ্ধ শেষ করবেন তিনি। কিন্তু এই বিষয়টি কীভাবে অর্জিত হবে সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। তবে ডেমোক্র্যাটদের বক্তব্য, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আরও উৎসাহিত করবে।
ট্রাম্প বিদেশি সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা কমাতে চান। গাজা যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প নিজেকে ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে তুলে ধরেছেন। তবে তিনি মার্কিন মিত্র দেশগুলোকে সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি লেবাননেও সহিংসতা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এর জন্য কী পদক্ষেপ নেবেন তিনি, তা স্পষ্ট করেননি।
৫. গর্ভপাত নিষিদ্ধকরণ ইস্যু
ট্রাম্প তাঁর কিছু সমর্থকের আপত্তি থাকার পরও প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে কমলা হ্যারিসের বিপরীতে কথা বলতে গিয়ে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে জাতীয়ভাবে গর্ভপাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আইনে স্বাক্ষর করবেন না। ২০২২ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতের ওপর সংবিধানিক অধিকার বাতিল করে।
গর্ভপাতের অধিকার ছিল কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনের দিন গর্ভপাতের অধিকার সংরক্ষণ বা সম্প্রসারণের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়। ট্রাম্প নিজে বারবার বলেছেন, গর্ভপাত নিয়ে রাজ্যগুলোর নিজেদের আইন করার স্বাধীনতা থাকা উচিত।
৬. ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার কতিপয় অভিযুক্তকে দায়মুক্তি
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত কিছু ব্যক্তিকে ‘দায়মুক্তি’ দেবেন। ওই হামলার মাধ্যমে তাঁর সমর্থকেরা ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ফলাফলকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেই নির্বাচনে জো বাইডেন বিজয়ী হয়েছিলেন।
হামলার সহিংসতায় কয়েকটি মৃত্যুর জন্য ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হয়। ট্রাম্প এই হামলায় উসকানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। তিনি হামলার গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং দোষী সাব্যস্ত হওয়া কয়েক শ সমর্থককে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। এখনো তিনি দাবি করছেন, তাদের অনেকেই ‘অপরাধী নয়’, যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, কিছু কিছু ব্যক্তি হয়তো আসলেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।
৭. বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথকে চাকরিচ্যুত করা
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর ‘দুই সেকেন্ডের মধ্যে’ তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা পরিচালনাকারী কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথকে চাকরিচ্যুত করবেন। বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে এবং গোপনীয় তথ্যের ভুল ব্যবস্থাপনার অভিযোগে দুটি পৃথক অভিযোগ এনেছেন।
তবে ট্রাম্প এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং মামলা দুটি নির্বাচনের আগে বিচার শুরু হতে না দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, স্মিথ তাঁকে একটি ‘রাজনৈতিক শিকারে’ পরিণত করার চেষ্টা করেছেন। নিউ ইয়র্কে ব্যবসায়িক নথিপত্র জালিয়াতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ট্রাম্প হবে প্রথম এমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত হয়ে গেছে এরই মধ্যে। তিনি অভিবাসন, অর্থনীতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে নজিরবিহীন ক্ষমতার অধিকারী হতে যাচ্ছেন। কারণ, মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উভয় কক্ষে তাঁর দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে।
গতকাল বুধবার বিজয়ী ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি একটি সহজ মন্ত্রের মাধ্যমে শাসন পরিচালন করব। আমার দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো আমি রক্ষা করব।’ তবে তিনি কীভাবে তাঁর উদ্দেশ্য অর্জন করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এর আগে, ২০২৩ সালে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের সময় তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের লক্ষ্যবস্তু করবেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘না, না, না। তবে প্রথম দিন ছাড়া! প্রথম দিনেই আমরা সীমান্ত বন্ধ করে দেব এবং তেল উত্তোলন শুরু করব। এরপর, একটি বিষয় আমি বলতে চাই—আমি কোনো স্বৈরশাসক নই।’
ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রচারণার সময় নানাবিধ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে ৭টি প্রতিশ্রুতি তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সেই অগ্রাধিকারভিত্তিক কাজগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
১. অনথিভুক্ত অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় আকারে অবৈধ অভিবাসী’ বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর প্রথম আমলে সময়ে শুরু হওয়া মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করারও অঙ্গীকার করেছিলেন।
বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অধীনে গত বছরের শেষে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়। তবে ২০২৪ সালে তা কমে আসে। বিশ্লেষকেরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের প্রতিশ্রুত অনুযায়ী এ ধরনের বিপুল পরিমাণে অভিবাসী বের করে দেওয়ার বিষয়টি আইনগত এবং যৌক্তিকভাবে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এই বিষয়টি মার্কিন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীর করে দিতে পারে।
২. অর্থনৈতিক সংস্কার, কর ও শুল্ক খাত
বুথ ফেরত বিভিন্ন জরিপের তথ্য বলছে, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের কাছে অর্থনীতি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ট্রাম্প মুদ্রাস্ফীতি শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জো বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, যদিও পরে তা আবার কমে আসে। ট্রাম্প এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। কারণ, একজন প্রেসিডেন্টের সরাসরি মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত খাতে প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা সীমিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালের কর সংস্কারের সম্প্রসারণের মাধ্যমে ব্যাপক কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত বন্ডের ওপর থেকে কর বাতিল, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয়ে কর বাতিল এবং কোম্পানি কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এর বাইরে, তিনি বিদেশি পণ্যের ওপর কমপক্ষে ১০ শতাংশ নতুন শুল্ক প্রস্তাব করেছেন, যাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো যায়। চীন থেকে আমদানির ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কথাও তিনি বলেছেন। তবে কিছু অর্থনীতিবিদ সতর্ক করেছেন যে, এ ধরনের পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে পারে।
৩. জলবায়ু নীতিমালা বাতিল বা সংস্কার
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে শতাধিক পরিবেশ সুরক্ষা আইন প্রত্যাহার করেছিলেন এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মতো আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে থেকে আমেরিকাকে প্রথম দেশ হিসেবে প্রত্যাহার করে নেন। এবারও তিনি পরিবেশ সংক্রান্ত আইন শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মূলত, আমেরিকার গাড়ি শিল্পকে সহায়তা করার লক্ষ্যে তিনি এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। তিনি বারবার বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পকে আক্রমণ করেছেন এবং বাইডেন সরকার পরিবেশবান্ধব গাড়ির শিল্পের বিষয়ে বিষয়ে যে নীতিমালা নিয়েছিল তা বাতিল করার অঙ্গীকার করেছেন।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎস যেমন উইন্ডমিলের প্রতি তাঁর তেমন আগ্রহ নেই। তিনি আর্কটিক অঞ্চলের মতো জায়গাগুলোতে তেল উত্তোলনের জন্য অনুমতি দিতে চান। তাঁর মতে, এই বিষয়টি জ্বালানির দাম কমাতে সাহায্য করবে, যদিও বিশ্লেষকেরা এতে সন্দিহান।
৪. ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে কিয়েভের হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে কয়েক হাজার কোটি ডলার ব্যয় করছে, তার সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ এই যুদ্ধ শেষ করবেন তিনি। কিন্তু এই বিষয়টি কীভাবে অর্জিত হবে সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। তবে ডেমোক্র্যাটদের বক্তব্য, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আরও উৎসাহিত করবে।
ট্রাম্প বিদেশি সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা কমাতে চান। গাজা যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প নিজেকে ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে তুলে ধরেছেন। তবে তিনি মার্কিন মিত্র দেশগুলোকে সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি লেবাননেও সহিংসতা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এর জন্য কী পদক্ষেপ নেবেন তিনি, তা স্পষ্ট করেননি।
৫. গর্ভপাত নিষিদ্ধকরণ ইস্যু
ট্রাম্প তাঁর কিছু সমর্থকের আপত্তি থাকার পরও প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে কমলা হ্যারিসের বিপরীতে কথা বলতে গিয়ে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে জাতীয়ভাবে গর্ভপাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আইনে স্বাক্ষর করবেন না। ২০২২ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতের ওপর সংবিধানিক অধিকার বাতিল করে।
গর্ভপাতের অধিকার ছিল কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনের দিন গর্ভপাতের অধিকার সংরক্ষণ বা সম্প্রসারণের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়। ট্রাম্প নিজে বারবার বলেছেন, গর্ভপাত নিয়ে রাজ্যগুলোর নিজেদের আইন করার স্বাধীনতা থাকা উচিত।
৬. ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার কতিপয় অভিযুক্তকে দায়মুক্তি
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত কিছু ব্যক্তিকে ‘দায়মুক্তি’ দেবেন। ওই হামলার মাধ্যমে তাঁর সমর্থকেরা ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ফলাফলকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেই নির্বাচনে জো বাইডেন বিজয়ী হয়েছিলেন।
হামলার সহিংসতায় কয়েকটি মৃত্যুর জন্য ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হয়। ট্রাম্প এই হামলায় উসকানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। তিনি হামলার গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং দোষী সাব্যস্ত হওয়া কয়েক শ সমর্থককে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। এখনো তিনি দাবি করছেন, তাদের অনেকেই ‘অপরাধী নয়’, যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, কিছু কিছু ব্যক্তি হয়তো আসলেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।
৭. বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথকে চাকরিচ্যুত করা
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর ‘দুই সেকেন্ডের মধ্যে’ তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা পরিচালনাকারী কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথকে চাকরিচ্যুত করবেন। বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে এবং গোপনীয় তথ্যের ভুল ব্যবস্থাপনার অভিযোগে দুটি পৃথক অভিযোগ এনেছেন।
তবে ট্রাম্প এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং মামলা দুটি নির্বাচনের আগে বিচার শুরু হতে না দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, স্মিথ তাঁকে একটি ‘রাজনৈতিক শিকারে’ পরিণত করার চেষ্টা করেছেন। নিউ ইয়র্কে ব্যবসায়িক নথিপত্র জালিয়াতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ট্রাম্প হবে প্রথম এমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়া নতুন রণকৌশল গ্রহণ করেছে। এখন থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার ক্ষেত্রে নতুনত্ব আনবে। কেবল সামরিক অবকাঠামো বা স্থাপনায় নয়, রাশিয়া এখন থেকে ইউক্রেনের কৌশলগত সব ধরনের স্থাপনায়ই হামলা চালাবে।
৩৬ মিনিট আগেগুলির শব্দ শুনে রেড্ডির বন্ধুরা, যারা অন্য একটি ঘরে ছিলেন, ছুটে তাঁর ঘরে আসেন এবং তাঁকে রক্তে ভেজা অবস্থায় পান। বন্ধুরা দ্রুত কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
৪০ মিনিট আগেপাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির পেছনে সৌদি আরবের হাত ছিল বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। সংবাদমাধ্যমগুলো বুশরা বিবির একটি ভিডিও বক্তব্যের বরাত দিয়ে এই খবর দিয়েছিল।
১ ঘণ্টা আগেভারতের মিজোরাম রাজ্য সরকার দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে আশ্রয় নেওয়া সব শরণার্থীকে একটি স্থানে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি তাদের সবাইকে একত্র করারও উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে, ২ হাজারের বেশি বাংলাদেশিও এই কেন্দ্রে আশ্রয় পাবেন বলে জানিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক পরামর্শদা
১ ঘণ্টা আগে