জয় শেঠির বিরুদ্ধে বানোয়াট গল্প ফেঁদে সন্ন্যাসী বনে যাওয়ার অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ২১: ৩৪
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৪, ২৩: ১৯

ভারতীয় বংশোদ্ভূত আলোচিত ইনফ্লুয়েন্সার, লেখক ও সাধু হিসেবে পরিচিতি পাওয়া জয় শেঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের অনুপ্রেরণামূলক কনটেন্ট তৈরি করেন। তাঁর লেখা ‘থিঙ্ক লাইক অ্যা মঙ্ক’ একটি সর্বাধিক বিক্রীত বই হিসেবে স্বীকৃত। অভিযোগ উঠেছে, নিজের জীবন নিয়ে তিনি অনুসারীদের কাছে অতিরঞ্জিত তথ্য দিয়েছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যের পোস্ট চুরি করারও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। 

এ বিষয়ে ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জয় শেঠির জন্ম যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। ভারতীয় বাবা–মায়ের কাছে তিনি সেখানেই বেড়ে উঠেছেন। ২০১৬ সাল থেকে তাঁর অনুপ্রেরণামূলক বিভিন্ন ভিডিও ও বক্তব্য দারুণ প্রশংসা পেতে শুরু করে। 

শেঠির বক্তব্য অনুযায়ী—স্কুলে পড়ার সময় এক ছুটিতে তিনি ভারতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে সন্ন্যাসীদের সংস্পর্শ পান। পরবর্তীতে তিন বছর তিনি সন্ন্যাসী হিসেবে জীবন অতিবাহিত করেছেন। 

জয় শেঠির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘স্কুল জীবনে জয় শেঠি ভারতে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে ছুটি কাটাতেন। তাঁদের জ্ঞান এবং শিক্ষায় নিজেকে নিমজ্জিত করেছিলেন।’ 

এদিকে দ্য গার্ডিয়ানের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এই দাবিগুলোর নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। শেঠির বর্ণনার সত্যতা এবং গুরু হিসেবে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। 

শেঠির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানা যায়—২০২২ সালের ২০ আগস্টে জর্জিয়ার সাভান্নায় তিনি জেনিফার লোপেজ ও বেন অ্যাফ্লেকের বিয়ের পৌরহিত্য করেছিলেন। কথিত আছে, লোপেজ শেঠির প্রতি এতটাই বিমোহিত ছিলেন যে তিনি এই কথিত হিন্দু সন্ন্যাসীর পৌরহিত্যে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। 

দ্য গার্ডিয়ানের তথ্যমতে, গত বছরের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেখার জন্য হোয়াইট হাউসের রাষ্ট্রীয় নৈশভোজেও অংশ নিয়েছিলেন শেঠি। তিনি মার্কিন প্রশাসনের মানসিক স্বাস্থ্য উদ্যোগ সম্পর্কে জো বাইডেনেরও একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।

জনপ্রিয়তা এবং মিশেল ওবামা ও ম্যাট ড্যামনের মতো সেলিব্রিটির সমর্থন থাকার পরও সাম্প্রতিক অভিযোগগুলো শেঠির খ্যাতির শিখরে উঠে আসার গল্পের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দ্য গার্ডিয়ানে সাংবাদিক জন ম্যাকডারমটের একটি নিবন্ধে শেঠির আধ্যাত্মিক জাগরণের দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। 

বলা হচ্ছে, জয় শেঠির ঘনিষ্ঠরাই তাঁর আধ্যাত্মিক রূপান্তরের ‘নাটকীয়’ প্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং শেঠি নিজেই তাঁর বক্তব্যে নিজের বয়স নিয়ে বিরোধপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ম্যাকডারমটের তদন্ত বলছে, সন্ন্যাসী হিসেবে শেঠির সময়টি চিত্রিত হওয়ার মতো বিস্তৃত ছিল না। তাঁর সাবেক সহযোগীরাই দাবি করেছেন, যে সময়টিতে ভারতীয় আশ্রমে ধ্যানমগ্ন ছিলেন বলে শেঠি দাবি করেন সেই সময়টিতে তিনি আসলে লন্ডনেই অবস্থান করছিলেন। 

অভিযোগগুলো আরও ইঙ্গিত করছে, শেঠির সমাজ বিচ্ছিন্ন হওয়া একটি অতিরঞ্জিত ঘটনা হতে পারে। কারণ সন্ন্যাস ব্রতের বদলে তিনি মূলত ইউটিউব ভিডিও তৈরির মতো কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন। হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সঙ্গেও শেঠির যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, শেঠি যথাযথ কৃতিত্ব না দিয়েই অন্যদের লেখা কিংবা পোস্ট চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। অনলাইনে চুরির অভিযোগ সামনে আসার পর ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ১০০টিরও বেশি পোস্ট মুছে ফেলেছিলেন জয় শেঠি। এই ঘটনা শেঠির চিন্তার মৌলিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

অভিযোগগুলোর বিষয়ে জয় শেঠি এখনো নীরব রয়েছেন। এখনো তিনি তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত