হিজাব খুলতে বাধ্য করে নিউইয়র্ক পুলিশ, ১৯১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ২৩: ৫১
Thumbnail image

গ্রেপ্তারের পর ‘মাগশট’ বা ‘অপরাধীর মুখচ্ছবি’ তোলার জন্য জোর করে হিজাব খোলার দায়ে ভুক্তভোগীদের ১৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থ ১৯১ কোটি টাকারও বেশি। ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে দাবি করে ভুক্তভোগীদের মধ্যে দুই মুসলিম নারী একটি জাতি বিদ্বেষের মামলা করলে জরিমানার রায় এসেছে।

এ বিষয়ে ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ওই আর্থিক নিষ্পত্তি বর্তমানে জেলা আদালতের বিচারকের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। গত শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিষয়টি ম্যানহাটন ফেডারেল আদালতে দাখিল করা হয়েছিল। ৩ হাজার ৬০০ জনের বেশি ভুক্তভোগীর মধ্যে উল্লেখিত জরিমানার অর্থ বণ্টন করা হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে মামলাটি করেছিলেন জামিলা ক্লার্ক এবং আরওয়া আজিজ নামে দুই নারী। এর আগের বছর ‘সুরক্ষা আইন’ লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁদের একজনকে ম্যানহাটন এবং অন্যজনকে ব্রুকলিন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মামলায় ওই অভিযোগটিকে মিথ্যা দাবি করেছিলেন দুজনই। তাঁরা দাবি করেন, হিজাব খুলতে বাধ্য হওয়ার পর তাঁরা লজ্জা এবং ট্রমা অনুভব করেছিলেন। তাঁদের আইনজীবীরা হিজাব খুলে ফেলাকে নগ্ন বা ফালা–তল্লাশির সঙ্গে তুলনা করেছেন।

জামিলা ক্লার্ক তাঁর আইনজীবীদের কাছে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যখন তারা আমাকে হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য করেছিল, তখন আমার মনে হয়েছিল যেন আমি নগ্ন হয়ে গেছি। আজ আমি অনেক গর্বিত যে, হাজার হাজার নিউইয়র্কবাসীর জন্য ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পেরেছি।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনি ফি এবং খরচ বাদ দেওয়ার পর বণ্টনের জন্য অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার। এ ক্ষেত্রে যদি ৩ হাজার ৬০০ জনের বেশি যোগ্য শ্রেণির সদস্য দাবিপত্র জমা দেয় তবে জরিমানার অর্থের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। প্রত্যেক প্রাপককে ৭ হাজার ৮২৪ থেকে ১৩ হাজার ১২৫ ডলার করে দেওয়া হবে।

জামিলা ক্লার্ক এবং আরওয়া আজিজের আইনজীবী অ্যালবার্ট ফক্স ক্যান মনে করেন, এই বন্দোবস্ত নিউইয়র্কবাসীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষায় একটি মাইলফলক।

এ বিষয়ে নিউইয়র্ক টাইমসকে ক্যান বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের ধর্মীয় ওই জনগোষ্ঠীর মেয়েদের মাথার আবরণ এবং মর্যাদা কেড়ে নেওয়া উচিত হয়নি।’

মামলাটির ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে নিউইয়র্কের পুলিশ বিভাগ পুরুষ এবং নারীদের মুখের ছবি তোলার ক্ষেত্রে মাথা ঢেকে রাখা পর্যন্ত সম্মত হয়েছিল। তবে অবশ্যই মুখ দেখা যাওয়ার শর্ত ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত