Ajker Patrika

চীনের ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

অনলাইন ডেস্ক
মাদক পাচারের অভিযোগে চীনের ওপর শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের। ছবি: সিএনএন
মাদক পাচারের অভিযোগে চীনের ওপর শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের। ছবি: সিএনএন

ক্রমবর্ধমান চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে চীনের ওপর নতুন করে আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই চীন থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আরও জানান, আগামী ৪ মার্চ থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি চীনের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে।

৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। শেষ মুহূর্তে ওই দুই দেশ সীমান্ত নিরাপত্তা তহবিল বাড়াতে এবং মাদক পাচার মোকাবিলা নিয়ে আলোচনায় সম্মত হওয়ায়, এক মাসের জন্য শুল্ক আরোপ স্থগিত করেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল প্রবাহ মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে মনে করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘এখনো মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমাদের দেশে বিপুল পরিমাণে মাদক আসছে। এর বড় একটি অংশ চীনে তৈরি হচ্ছে।’

এ ছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চীনের বিরুদ্ধে আফিম যুদ্ধ চালানোর অভিযোগ তোলেন। বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, চীন ইচ্ছাকৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবাহ ঘটাচ্ছে, যা একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রও হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, ‘ওয়াশিংটন ফেন্টানিল ইস্যুকে ব্যবহার করে শুল্ক চাপ ও ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করছে। এটি দুই দেশের মধ্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত সংলাপ ও সহযোগিতায় গুরুতর প্রভাব ফেলেছে।’

এই শুল্ক সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই ক্ষতিকর হবে বলে সতর্ক করেন লিন। তিনি দাবি করেন, চীন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ফেন্টানিল জাতীয় পদার্থগুলোর ওপর সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মাদকবিরোধী সহযোগিতায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ অর্জিত হয়েছে।

চীনের পাশাপাশি কানাডা-মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকি ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক বহুদিনের। আর উত্তর আমেরিকার অর্থনীতি দীর্ঘ সময় ধরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত।

৪ মার্চ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাওম বলেন, ‘আমরা জানি, তাঁর (ট্রাম্প) যোগাযোগের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। আশা করছি, আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব এবং ৪ মার্চ নতুন কিছু ঘোষণা করতে পারব।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, তাঁর দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে তা একটি ‘তাৎক্ষণিক এবং অত্যন্ত শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া’ আসবে।

এই দুই দেশের নেতারা আগে বলেছিলেন, যদি হোয়াইট হাউস শুল্ক আরোপ করে, তারাও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করবেন।

শুল্ক আরোপের কারণে মার্কিন অর্থনীতির ক্ষতি শঙ্কাকে অগ্রাহ্য করছেন ট্রাম্প। তবে অর্থনীতিবিদেরা সতর্ক করে বলেছেন, আমেরিকার শীর্ষ তিন বাণিজ্যিক অংশীদার কানাডা-মেক্সিকো-চীন। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানির ৪০ শতাংশেরও বেশি এই তিন দেশ থেকে এসেছে। এই তিন দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন থেকে অ্যাভোকাডো—সবকিছুর মূল্য বাড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত