অনলাইন ডেস্ক
বন্ধু থেকে শত্রু— সব রাষ্ট্রই ভাবছে, সারা বিশ্ব থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সব পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের বিষয়ে ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি কতটা গুরুতর।
শুধু চীনের মতো দেশ বা ওয়াশিং মেশিনের মতো খাত নয় সব জায়গার সবকিছুর উপর কর আরোপের ঘোষণা তাঁর।
নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় চীনকে বাগে আনা থেকে শুরু করে ডলারের মান রক্ষা এবং অবৈধ অভিবাসন রোধের মতো সব ধরনের কূটনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে গণহারে সব দিকে থেকে আসা পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
তাঁর ভাষায়, অভিধানে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শব্দ ‘ট্যারিফ’ বা শুল্ক। এটি অনেক কাজের একটি অস্ত্র, যা তিনি ব্যবহার করতে চান।
আগেরবার ট্রাম্পের হুমকি গুরুত্বের সঙ্গে না নিয়ে যে ভুল করেছিল, তার পুনরাবৃত্তি আর করতে চায় না ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই কারণে শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের তালিকা প্রস্তুত করছে।
এই হুমকি যুক্তরাজ্যকেও ভাবিয়ে তুলছে। যদি আটলান্টিকের এপার-ওপার বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়, তবে ব্রিটিশরা কী অবস্থান নেবে। কোনো একটি পক্ষ বেছে নেবে, নাকি শান্তিরক্ষীর হওয়ার চেষ্টা করবে?
যাঁরা আমাদের সঙ্গে লাইভে এখন যুক্ত হলেন, তাঁদের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখন পর্যন্ত ঘটনাবলীর সারাংশ তুলে ধরা হল। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকটি বড় রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সার-সংক্ষেপ—
১. ট্রাম্পের ঐতিহাসিক দ্বিতীয় মেয়াদ: ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ২৭০ ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। উইসকনসিনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর তার জয় নিশ্চিত হয়।
২. বিজয় ভাষণ: ফ্লোরিডায় বিজয় ভাষণে ট্রাম্প দাবি করেছেন, আমেরিকার জনগণ তাকে একটি ‘নজিরবিহীন ও শক্তিশালী ম্যান্ডেট’ দিয়েছেন।
৩. প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ যা কিছু: ট্রাম্পের প্রচারণা মূলত অর্থনীতিকেন্দ্রিক ছিল, যেখানে তিনি ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আমেরিকাকে আবার সাশ্রয়ী করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যা তাঁর প্রথম মেয়াদের মূল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল।
৪. ভোট গণনা এখনো চলছে: কিছু ঝুঁকিপূর্ণ রাজ্য যেমন- নেভাডা, মিশিগান, অ্যারিজোনা ও মেইনে এখনও ভোট গণনা শেষ হয়নি। সেখান থেকে ফলাফল আসার বাকি। এই রাজ্যগুলোর ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ।
৫. সিনেটে রিপাবলিকানদের জয়: নির্বাচনে রিপাবলিকানরা সিনেট নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর ফলে ডেমোক্র্যাটরা তাদের কার্যকরী সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।
৬. ওয়াচ পার্টিতে হ্যারিসের অনুপস্থিতি: এদিকে ট্রাম্পের পক্ষে ফলাফল ঘোষণার পর কয়েক ঘণ্টা আগেই ওয়াশিংটন ডিসিতে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের অফিসিয়াল ওয়াচ পার্টি ফাঁকা হয়ে যায়। কমলার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ইতিহাসে যুগান্তকারী। কারণ, রিপাবলিকানরা শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেই জয়ী হয়নি, বরং সিনেটও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কংগ্রেসে ক্ষমতার ভারসাম্য বদলে দিয়েছে।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
৫০টি অঙ্গরাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসি মিলিয়ে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। এর মধ্যে ২৭০ বা বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে ২৭৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ২২৪ ভোট।
রীতি অনুযায়ী তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন।
এ ছাড়া কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং উচ্চকক্ষ সিনেটেও এবার রিপাবলিকানদের আধিপত্য থাকছে। বিচার বিভাগেও রয়েছে চার বছর আগে ট্রাম্পের নিয়োগকৃত অনেক বিচারক। ফলে এবার আমেরিকার শাসন অন্যরকম হতে পারে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।
এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দেশটির ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এরপরের নির্বাচন, অর্থাৎ ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি বাইডেনের কাছে হেরে যান। এরপর, ৪ বছরের বিরতির পর আবারও হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ৭৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ।
কংগ্রেস–বিচার বিভাগে নজিরবিহীন আধিপত্য ট্রাম্পের, নতুন যুগসন্ধিতে আমেরিকা
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০০০ সালে ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়া ও মিশিগান প্রাইমারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য রিফর্ম পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন কিন্তু ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর ২০১১ সালে ট্রাম্প, ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে বিবেচনা করেন। পরে সে বছরের মে মাসে তিনি ঘোষণা করেন যে, তিনি প্রার্থী হবেন না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট দুই বছর আগে রো ভার্সাস ওয়েড মামলার রায় বাতিল করে নতুন করে গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে বিতর্ক উসকে দিয়েছিল।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গর্ভপাত ইস্যুটি বারবারই সামনে এসেছে। রিপাবলিকানরা বরাবরের মতো এই অধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও এ নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেননি।
এর মধ্যে ১০টি অঙ্গরাজ্যে প্রজনন অধিকারকে সংবিধানে সংরক্ষণ করার বিষয়ে ভোট হয়েছে। এখন পর্যন্ত যেসব রাজ্যে ফলাফল পাওয়া গেছে সেগুলো হলো:
ফ্লোরিডা – প্রত্যাখ্যান
অ্যারিজোনা – পাস
মিসৌরি – পাস
নেভাদা – পাস
মনটানা – ফলাফল এখনো জানা যায়নি
কলোরাডো – পাস
দক্ষিণ ডাকোটা – ফলাফল এখনো জানা যায়নি
নেব্রাস্কা – ফলাফল এখনো জানা যায়নি
নিউ ইয়র্ক – পাস
ম্যারিল্যান্ড – পাস
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী হামাসের সদস্যরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি আল জাজিরাকে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন—এই বিবৃতির ভিত্তিতে ট্রাম্পকে পরীক্ষা করা হবে। আমরা ট্রাম্পকে (প্রেসিডেন্ট জো) বাইডেনের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানাই।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম যোগ করেছেন, ‘জায়নবাদী সত্তার প্রতি এই অন্ধ সমর্থনের অবসান হওয়া উচিত কারণ। এটি আমাদের জনগণের ভবিষ্যৎ এবং এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি।’
নির্বাচনী প্রচারণার সময় রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে বাস্তব এবং একটি স্থায়ী শান্তি ফিরে আসা দেখতে চান। আমরা এটি সঠিকভাবেই সম্পন্ন করব যাতে প্রতি ৫ বা ১০ বছর পরপর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই বিজয় চীনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাঁর সময়েই শুরু হয় সিনো–মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ। এমনকি করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে বারবার চীনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ট্রাম্প।
এই মুহূর্তে চীন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান’ কামনা করে বেইজিং।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং আজ বুধবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘আমরা পারস্পরিক সম্মান, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং উভয়ের স্বার্থ রক্ষিত হয় এমন সহযোগিতার নীতির ভিত্তিতে চীন–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আমাদের নীতি সুস্থির।’ যোগ করেন মাও নিং।
মাও ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনার বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাতে ফোন কল করবেন কি না তা জানতে চাইলে মুখপাত্র মাও বলেন, ‘আমরা আমেরিকান জনগণের পছন্দকে সম্মান করি। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হলে, আমরা স্বাভাবিক প্রথা অনুসারে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো করব।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত করতে এখনো অন্তত তিনটি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে। তবে এরই মধ্যে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানেরা।
এর মধ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে ‘ইতিহাসের সেরা ফিরে আসা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘আগেরবার চার বছর যেমন আমরা কাজ করেছি, আবারও কাজ করতে আমরা প্রস্তুত। আরও শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা পরাস্পরিক শ্রদ্ধা ও উচ্চাশা নিয়ে কাজ করবো।’
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বলেছেন, ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনায় আমাদের ট্রান্স আটলান্টিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও শক্তিশালী করতে পারব বলে আশা করছি।’
ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘তাঁর নেতৃত্ব আমাদের জোটকে আরও শক্তিশালী করতে আবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ‘অন্তরের অন্তস্থল থেকে অভিনন্দন’ জানিয়ে বলেছেন, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সম্পর্কের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে বলে তাঁর আশা।
ব্রিটেনের প্রধান কেইর স্টারমার ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘প্রত্যাশিত বিজয়কে’ ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সামনের বছরগুলোতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব বলে আশা রাখি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘অন্তরের অন্তস্থল থেকে অভিনন্দন’ জানিয়ে বলেছেন, ‘আসুন, একসঙ্গে আমাদের জনগণের জন্য কাজ করি এবং বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নিই।’
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী পিতর ফিয়ালা বলেন, ‘প্রশাসনের পরিবর্তন হলেও আমাদের দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক নিশ্চিত করতে আমরা অভিন্ন লক্ষ্যকে স্থির রাখাই আমাদের অগ্রাধিকার।’
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা বলেন, ‘আমি পেরেছেন!’
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবিয়া আহমেদও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে তিনি আশা করেন।
আরও অভিনন্দন জানিয়েছেন: হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর অরবান, আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী মার্সেল সাইওলাক, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ।
এ ছাড়া সুইডেন, ডেনমার্ক ও নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করার আশা প্রকাশ করেছেন।
ফ্লোরিয়ার ওয়েস্ট পাম বিচে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজনীয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোট (২৭৯) এখনো তিনটি বাকি। এর আগেই তিনি নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।
ট্রাম্পের ভাষণে উঠেছে গত জুলাই মাসে নির্বাচনী তাঁকে ‘হত্যার চেষ্টার’ কথা। তিনি বলেন, ‘অনেক লোক আমাকে বলেছেন যে ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন একটি কারণে এবং সেই কারণটি হলো আমাদের দেশকে বাঁচানো এবং আমেরিকাকে তার মহিমা ফিরিয়ে দেওয়া। এখন আমরা সেই মিশন পূরণ করতে যাচ্ছি।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আপনাদের, জনগণের প্রতি দেওয়া আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার পথে কোনো কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না। আমরা আমেরিকাকে আবার নিরাপদ, শক্তিশালী, সমৃদ্ধিশালী, শক্তিশালী এবং মুক্ত করে তুলব।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি সমগ্র দেশের প্রতিটি নাগরিককে এই মহৎ এবং ন্যায়সংগত প্রচেষ্টায় যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আমাদের অতীত চার বছরের বিভক্তিকে পেছনে ফেলে আসার সময় এসেছে। এখন এক হওয়ার সময় এবং আমরা সেই চেষ্টা করব। আমরা চেষ্টা করব। আমাদের চেষ্টা করতে হবে এবং এটি ঘটতে যাচ্ছে। সাফল্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ করবে।’
সমর্থকদের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে চাই, এটি কত বড় সম্মানের বিষয়! আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। আমি আপনাদের হতাশ করব না। আমেরিকার ভবিষ্যৎ আগের চেয়ে বৃহৎ, ভালো, সাহসী, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং শক্তিশালী হবে। ঈশ্বর আপনাদের আশীর্বাদ করুন এবং আমেরিকাকে আশীর্বাদ করুন।’
ট্রাম্প তাঁর বক্তব্য শুরু করেছিলেন তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত একটি বার্তা দিয়ে যে, তিনি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন এবং মার্কিন সমৃদ্ধির একটি ঐতিহাসিক যুগের সূচনা করবেন।
কিন্তু এরপর তিনি তাঁর প্রচারণা চলাকালীন যে বিভ্রান্তিকর বাকপটুতা দেখিয়েছেন, সেই শৈলীতেই ফিরে যান।
এরপর তিনি বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ককে প্রশংসায় ভাসাতে থাকেন। ট্রাম্প বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে তিনি (মাস্ক) রকেট উৎক্ষেপণ করেছিলেন। আমি সেই রকেটটি দেখেছি। আমি এটা নেমে আসতে দেখেছি। যখন এটা ছাড়া হয়েছিল তখন সুন্দর, চকচকে সাদা ছিল, যখন এটা নেমে এসেছিল তখন তেমন সুন্দর ছিল না!’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে চলছে ভোট গণনা। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ইলেকটোরাল ভোট ২৭০ থেকে আর মাত্র এক কদম দূরে। আর তিনটি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেলেই দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন ট্রাম্প।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত যত ভোট গণনা হয়েছে তার মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৫১ দশমিক ১৯ শতাংশ ভোট। আর ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন ২৬৭টি। অর্থাৎ, আর ৩টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেলেই তাঁর হোয়াইট হাউসের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
বিপরীতে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ ভোট। কমলা হ্যারিসের দখলে গেছে ইলেকটোরাল কলেজের ২১৪টি ভোট। অর্থাৎ ট্রাম্পের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবধানে পিছিয়ে আছেন কমলা।
ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে প্রস্তুত করা মঞ্চে এরই মধ্যে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন ট্রাম্প। আর তখনই গুরুত্বপূর্ণ সুই স্টেটে পেনসিলভানিয়ার ফলাফল এসেছে। সেখানে ১৯টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন। এই ফলাফল পাওয়ার পরই ট্রাম্প মঞ্চ থেকে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে সুইং স্টেটগুলোর ভোট। এরই মধ্যে তিন অঙ্গরাজ্যে পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং জর্জিয়ার ইলেকটোরাল কলেজ ভোট এরই মধ্যে ট্রাম্প তাঁর ঝুলিতে পুরেছেন।
বার্তা সংস্থা এপির তথ্য অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট পেনসিলভানিয়াতে রিপাবলিকাল পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছেন। এই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প ১৯টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। অপর সুইং স্টেট জর্জিয়াতে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখানে তিনি ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। এ ছাড়া, নর্থ ক্যারোলাইনার ১৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটও গেছে তাঁর ঝুলিতে।
এদিকে, ২০১৬ সালে নিউইয়র্কে হিলারি ক্লিনটনের সম্ভাব্য বিজয় উৎসবের জন্য যখন সবাই প্রস্তুত, সেই মুহূর্তে হঠাৎ বিষণ্নতার বাতাস বইতে থাকে। সমর্থকেরা হঠাৎ বুঝতে পারেন, তাঁরা যা আশা করেছিলেন তা ঘটছে না। হাসি আর নাচ কান্নায় রূপ নেয়, মানুষ উদ্যাপনের স্থান ছেড়ে যায় অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে।
আজ রাতে ফ্লোরিডায় ঠিক তার বিপরীত ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। এখানে তিনি বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে ট্রাম্পের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে সিক্রেট সার্ভিস তৎপর হয়ে উঠেছে। সমর্থকদের মোটরকেড (গাড়ি শোভাযাত্রা) চলছে।
অপরদিকে, এই মুহূর্তে কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী সদর দপ্তরে ভিড় প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ একজন সিনিয়র সদস্য এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, কমলা আজ রাতে এখানে উপস্থিত হবেন না। বড় পর্দায় দুটি সুইং স্টেটে ট্রাম্পের বিজয় ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সমর্থকদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ দেখা দেয়। প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় এখন প্রায় ফাঁকা। কয়েক ঘণ্টা আগেও উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল এখানে। এখন বিষণ্ন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কমলা হ্যারিসের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেছে।
রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ের দ্বারপ্রান্ত। গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট পেনসিলভানিয়াতে জয়ের পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন তিনি। বিজয়ী হতে প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেকটো রাল ভোট পাওয়ার পথেই তিনি। আলাস্কা বা অন্য কোনো অঙ্গরাজ্যে জিতলেই ট্রাম্প হয়ে যাবেন আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। তাঁর দরকার আর মাত্র ৩ ভোট।
বার্তা সংস্থা এপির তথ্য অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট পেনসিলভানিয়াতে রিপাবলিকাল পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছেন। এই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প ১৯টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন।
‘ব্লু ওয়াল’ বলতে ১৮টি মার্কিন অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়াকে (ডিসি) বোঝায়। এগুলো কয়েক দশক ধরে ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। তবে ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই দেয়াল ভেঙে তিনটি অঙ্গরাজ্য ছিনিয়ে নেন।
এই তিনটি অঙ্গরাজ্য হলো: পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও উইসকনসিন।
এই তিনটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যের মধ্যে অন্যতম। এবারের নির্বাচনে এই অঙ্গরাজ্যগুলোই ফলাফল নির্ধারণ করে দিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি কমলা হ্যারিস এই ‘ব্লু ওয়াল’ ধরে রাখতে পারেন, তবে তাঁর নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও এরই মধ্যে অন্যতম দুই সুইং স্টেট জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলাাইনাতে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতেছেন।
বাকিগুলো হলো—পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকনসিন, অ্যারিজোনা ও নেভাডা।
ব্লু ওয়াল অঙ্গরাজ্যগুলো হলো: ক্যালিফোর্নিয়া, কানেকটিকাট, ডেলাওয়্যার, ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া, হাওয়াই, ইলিনয়, মেইনে, মেরিল্যান্ড, মিশিগান, মিনেসোটা, নিউ জার্সি, নিউইয়র্ক, ওরেগন, পেনসিলভানিয়া, রোড আইল্যান্ড, ভারমন্ট।
২০১৬ সালে নিউইয়র্কে হিলারি ক্লিনটনের সম্ভাব্য বিজয় উৎসবের জন্য যখন সবাই প্রস্তুত, সেই মুহূর্তে হঠাৎ বিষণ্নতার বাতাস বইতে থাকে। সমর্থকেরা হঠাৎ বুঝতে পারেন, তাঁরা যা আশা করেছিলেন তা ঘটছে না। হাসি আর নাচ কান্নায় রূপ নেয়, মানুষ উদ্যাপনের স্থান ছেড়ে যায় অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে।
আজ রাতে ফ্লোরিডায় ঠিক তার বিপরীত ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। এখানে তিনি বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে ট্রাম্পের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে সিক্রেট সার্ভিস তৎপর হয়ে উঠেছে। সমর্থকদের মোটরকেড (মহড়া) চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি আরব–আমেরিকান অধ্যুষিত শহরের আংশিক নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কমলা হ্যারিসের চেয়ে অনেকখানি এগিয়ে রয়েছেন।
সেখানকার সিটি কাউন্সিলর মুস্তাফা হামুদ আল জাজিরাকে বলেন, ডেমোক্রেটিক প্রার্থীর এই ফলাফলের জন্য কমলার নিজেকে ছাড়া আর কাউকে দোষ দেওয়ার নেই।
হামুদ বলেন, জো বাইডেন তাঁর প্রচারাভিযানে এখানে এসে অন্তত আমাদের কথা শুনতে পারতেন। মনে হয়, কমলা হ্যারিসের প্রচারণা আরব–আমেরিকান সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, ইসরায়েলের প্রতি কমলার দৃঢ় সমর্থন তো আছেই, সেই সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি এবং তাঁর মেয়ে লিজ চেনির মতো যুদ্ধবাদী ব্যক্তিদের সমর্থন করেও আরব–আমেরিকান ভোটারদের আরও দূরে ঠেলে দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট জর্জিয়াতে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখানে তিনি ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন।
এপি জানিয়েছে, নেব্রাস্কার প্রথম কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্টও রিপাবলিকান পার্টির ঝুলিতে গেছে। এতে ট্রাম্পের পক্ষে আরও একটি ইলেকটোরাল ভোট যুক্ত হয়েছে।
এই মুহূর্তে কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী সদর দপ্তরে ভিড় প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ একজন সিনিয়র সদস্য এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, কমলা আজ রাতে এখানে উপস্থিত হবেন না।
বড় পর্দায় দুটি সুইং স্টেটে ট্রাম্পের বিজয় ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সমর্থকদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ দেখা দেয়। প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় এখন প্রায় ফাঁকা।
কয়েক ঘণ্টা আগেও উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল এখানে। এখন বিষণ্ন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কমলা হ্যারিসের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেছে।
এখনো ভোট গণনা চলছে। এই সময়ে, আমেরিকান–আরব অ্যান্টি–ডিসক্রিমিনেশন কমিটির নির্বাহী পরিচালক আবেদ আইয়ুব বলেছেন, গাজা ও লেবাননে মার্কিন সমর্থিত ইসরায়েলের যুদ্ধ চলমান থাকায় আরব–আমেরিকান সম্প্রদায় এই মুহূর্তটি উদ্যাপন করছে না।
মিশিগানের ডিয়ারবর্নে একটি পর্যবেক্ষণ পার্টিতে আইয়ুব আল–জাজিরাকে বলেন, ‘এটা একটা নিরানন্দ সন্ধ্যা। এটি গত বছরের দিকে ফিরে দেখার এবং ভবিষ্যতে আমাদের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তার দিকে নজর দেওয়ার সময়। তাই আমাদের সামনে যে অনেক কাজ রয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে।’
আইয়ুব আরও বলেন, ‘ট্রাম্প বা হ্যারিস যিনিই জিতুন না কেন, আরব–আমেরিকানদের প্রধান লক্ষ্য গাজা ও লেবাননে অত্যাচার বন্ধ করার জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়া।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি চলছে, দেশটির আইনসভা কংগ্রেসের দুই কক্ষের নির্বাচনও। আর এতে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে কমলা হ্যারিসের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির তুলনায় স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি। নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসেও এগিয়ে রিপাবলিকানরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে এরই মধ্যে রিপাবলিকানরা ৫১টি আসনে এগিয়ে আছে। বিপরীতে ৪১টি আসনে এগিয়ে আছে ডেমোক্র্যাটরা। আর বাকি আসনগুলো এগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
এদিকে, নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসেও পিছিয়ে আছে কমলা হ্যারিসের দল। এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলাফল বলছে, ডেমোক্রেটিক পার্টি এগিয়ে আছে ১৪৬টি আসনে এবং রিপাবলিকান পার্টি এগিয়ে আছে ১৭৯ আসনে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয়েছে চার ঘণ্টার বেশি সময় হলো। এরই মধ্যে অনেকগুলো অঙ্গরাজ্যে গণনা অনেক এগিয়ে গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, এই গণনায় ব্যবধান কমলেও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস। আর কমলার পিছিয়ে থাকা হতাশা বাড়িয়েছে তাঁর সমর্থকদের মধ্যে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ অঙ্গরাজ্যের ফলাফল এখনো ঘোষণা হয়নি, সেগুলো হলো:
- পেনসিলভানিয়া
- জর্জিয়া
- মিশিগান
- উইসকনসিন
- অ্যারিজোনা
- নেভাডা
এ ছাড়া, মেইনে অঙ্গরাজ্যের ফলাফলও এখনো ঘোষণা হয়নি। এখানে ভোটারেরা সাধারণত বিভক্ত থাকেন। এবারও তেমন ফলাফল আসার সুযোগ রয়েছে।
নিউ হ্যাম্পশায়ার সম্ভবত কমলা হ্যারিসের পক্ষেই যাবে। আর আলাস্কা পেতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এগুলোর ফলাফল অবশ্য এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
বার্তা সংস্থা এপির ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস যেসব অঙ্গরাজ্যে বিজয়ী হতে যাচ্ছেন:
- ক্যালিফোর্নিয়া
- কানেক্টিকাট
- কলোরাডো
- ডেলাওয়্যার
- ডিসট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া
- ইলিনয়
- মেইনের প্রথম কংগ্রেসনাল জেলা
- মেরিল্যান্ড
- নিউজার্সি
- নিউ মেক্সিকো
- নিউইয়র্ক
- ওরেগন
- রোড আইল্যান্ড
- ভারমন্ট
- ওয়াশিংটন
বার্তা সংস্থা এপির ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী এখন পর্যন্ত যেসব অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জিততে যাচ্ছেন:
- অ্যালাবামা
- আরকানসাস
- ফ্লোরিডা
- আইডাহো
- আইওয়া
- কানসাস
- লুইজিয়ানা
- মিসিসিপি
- মিসৌরি
- মন্টানা
- নেব্রাস্কা
- নেব্রাস্কার তৃতীয় কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট
- নর্থ ক্যারোলাইনা
- নর্থ ডাকোটা
- ওকলাহোমা
- ওহাইও
- সাউথ ক্যারোলাইনা
- সাউথ ডাকোটা
- টেনেসি
- টেক্সাস
- উটাহ
- ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া
- ওয়াইওমিং
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৩০টি ইলেকটোরাল কলেজে এগিয়ে আছেন। পাশাপাশি এবারের মার্কিন নির্বাচনের নির্ধারক ভূমিকা পালন করা সাতটি সুইং স্টেটের মধ্যে ছয়টিতেই এগিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত কমলা হ্যারিস ২০৫টি ইলেকটোরাল কলেজে এগিয়ে আছেন। যেখানে ট্রাম্প এগিয়ে আছেন ২৩০টি ইলেকটোরাল কলেজে। মার্কিন নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয়েছে চার ঘণ্টা হলো। এখন পর্যন্ত আংশিক গণনায় দেখা গেছে, ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিসের চেয়ে বেশ এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এরই মধ্যে, নর্থ ক্যারোলাইনায় ট্রাম্পের পক্ষে ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া অ্যারিজোনা, মিশিগান, পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিন এবং জর্জিয়াতেও তিনি এগিয়ে রয়েছেন। তবে, সুইং স্টেট নেভাদার ফলাফল এখনো জানা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের মূল চাবিকাঠি হলো সুইং স্টেট বা ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট। এই রাজ্যগুলোতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থন প্রায় সমান থাকে, ফলে এখানে যে প্রার্থী জয়ী হন, তিনিই সাধারণত পুরো নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এ বছরের সুইং স্টেটগুলো হলো পেনসিলভানিয়া—ইলেকটোরাল ভোট ১৯, মিশিগান ১০, জর্জিয়া ১৬, উইসকনসিন ১০, নর্থ ক্যারোলাইনা ১৬, নেভাদা (৬) ও অ্যারিজোনায় ১১।
সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট দুজনেই জয়ী হওয়ার জন্য অর্থাৎ ২৭০ ইলেকটোরাল ভোট পাওয়ার জন্য লড়াই করছেন। এক্সিট পোল তথা বুথফেরত জরিপ বলছে, ভোটারদের প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল—গণতন্ত্রের অবস্থা, অর্থনীতি এবং গর্ভপাত।
সিবিএস নিউজের একটি জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। ৫ শতাংশ ভোটার গর্ভপাতকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, আর অর্থনীতি ছিল ১০ শতাংশ মানুষের প্রাধান্য। সিএনএনের এক্সিট পোল অনুযায়ী, প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ভোটার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নিউইয়র্কে কমলা হ্যারিস এগিয়ে রয়েছেন। সুইং স্টেটগুলোতে চলছে হাড্ডহাড্ডি লড়াই।
আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, জেতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ১৭৯টি। ভোট পেয়েছেন ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ। অপর দিকে ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি ইলেকটোরাল ভোট। প্রাপ্ত ভোটের হার ৫২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। চলছে গণনা। কোনো অঙ্গরাজ্যে এখন পর্যন্ত শতভাগ ভোট গণনা শেষ না হলেও যে পরিমাণ ভোট গণনা হয়েছে, তাতে পপুলার ভোট বা জনগণের সরাসরি ভোটে এগিয়ে আছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৮টি ইলেকটোরাল কলেজে এগিয়ে আছেন। সেখানে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস এগিয়ে আছেন মাত্র ৯৯টি ইলেকটোরাল কলেজে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেসব অঙ্গরাজ্য ব্যবধান গড়ে দেয়, অর্থাৎ সুইং স্টেটস বলে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলোতেও এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কেবল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নয়, মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষ সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির তুলনায় বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আছে। উচ্চকক্ষ সিনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন মাত্র ৩৬টিতে, বিপরীতে ট্রাম্পের দল এগিয়ে আছে ৪৭টিতে।
সিনেটের পাশাপাশি, নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসেও এগিয়ে রিপাবলিকান পার্টি। নিম্নকক্ষে রিপাবলিকান পার্টি এগিয়ে আছে ১২২টি আসনে, বিপরীতে কমলা হ্যারিসের দল এগিয়ে আছে মাত্র ৮৩টি আসনে। আবার ৫০টি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর নির্বাচনে ট্রাম্পের দলের প্রার্থীরা এগিয়ে ২৫টিতে এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির গভর্নর প্রার্থীরা এগিয়ে আছে ২২টিতে।
এদিকে, এবারের নির্বাচনে সাত সুইং স্টেটস—মিশিগান, উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, উত্তর ক্যারোলাইনা, অ্যারিজোনা ও নেভাদায় বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ পড়ুয়া যেসব শিক্ষার্থী অগ্রিম ভোট দিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই বেছে নিয়েছেন কমলা হ্যারিসকে। তবে অঙ্গরাজ্যটিকে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ ভোট গণনা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।