Ajker Patrika

এখন আমাদের চোখ অস্ট্রেলিয়ায়

আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২২, ১২: ০৮
এখন আমাদের চোখ অস্ট্রেলিয়ায়

প্রশ্ন: গত ম্যাচে ২৯১ রানের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল, সিরিজ জেতার সুযোগ। স্কোর বোর্ডে ৪৯ রানে ৪ উইকেট নেই। এরপর আপনার এবং চাকাভার একটি কাব্যিক জুটি। জুটি গড়তে কী কথা হচ্ছিল আপনাদের মধ্যে?
সিকান্দার রাজা: যখন রেজিস চাকাভাকে সঙ্গী হিসেবে পেলাম, তখন প্রাথমিকভাবে ছোট লক্ষ্য স্থির করেছিলাম। আমরা আর কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরকে ২৩০ রানে নিতে চেয়েছিলাম। ওকে বলেছিলাম, ৩০ ওভার পর্যন্ত ওভারপ্রতি ৪ রান করে এলেও সমস্যা নেই। আসলে ইনিংসটিকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করে নিয়েছিলাম। প্রথম ৩০ আর শেষের ২০ ওভার। তবে রেজিস (চাকাভা) স্বপ্নের মতো ব্যাটিং করতে শুরু করেছিল। ওর ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যটা আমরা অনেক আগেই ছুঁয়ে ফেলতে পেরেছি।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের বিপক্ষে গত ৯ বছরে টানা ১৯ ওয়ানডে জিততে পারেনি জিম্বাবুয়ে। জয়ের খরাটা কেটেছে, জিম্বাবুয়ে সিরিজও জিতে নিল। ওয়ানডে সিরিজের আগে আপনাদের লক্ষ্য কি এটাই ছিল? 
রাজা: হ্যাঁ, লম্বা সময় আমরা বাংলাদেশকে হারাতে পারিনি। অবশেষে জয় এসেছে, আলহামদুলিল্লাহ। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে চেয়েছি। ম্যাচের যেকোনো মুহূর্তে যেন আমরা ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখতে পারি। এটাই। 

প্রশ্ন: ভালো উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটারদের লম্বা ইনিংস না খেলতে পারার ব্যর্থতা সামনে আসছে। দেশের মাঠে ভালো উইকেটে না খেলতে পারার অনভ্যাস থেকেই কি এ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের?
রাজা: আমি নিজের কাজ নিয়েই বেশি ভাবছি, যেটা আমাকে করতে হবে।

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডে সিরিজ জয়। বর্তমান জিম্বাবুয়ে দলে ডেভ হটনের ভূমিকা বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। খেলোয়াড়দের মানসিকতায় কী এমন জাদুকরী পরিবর্তন এনেছেন তিনি? 
রাজা: ডেভ সত্যিই অনেক কিছু পরিবর্তন করেছেন। ছোট ছোট বিষয়। ড্রেসিংরুমের ভেতরের পরিবেশ পরিবর্তনে যেগুলো বড় ভূমিকা রেখেছে। তিনি ড্রেসিংরুমের সংস্কৃতি ও মানসিকতা বদলে দিয়েছেন। তাঁর মধ্যে সব সময় এই মানসিকতা ছিল। তিনি আসার পর একদিন ড্রেসিংরুমের দরজা লাগিয়ে দিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। যেটা খুব প্রশান্তির ছিল (কাজে দিয়েছিল)। তাঁর কথা ছিল, তোমাদের পরিশ্রমই তোমাদের হয়ে কথা বলবে।

প্রশ্ন: বয়সের সীমানা ৩৬ পেরিয়েও দুর্দান্ত ফিটনেস, ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলছেন। এটার রহস্য কী?
রাজা: সত্যি বলতে এটা করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। ফিটনেস নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করাটা গুরুত্বপূর্ণ। যখন মানসিকতার ব্যাপার আসে, ফিটনেসের সঙ্গে কোনো আপস নয়। ফিট থাকলে আপনি নিজেকে সঠিক প্রশ্নটা করতে পারবেন, ব্যাকরণের মধ্যে থেকেই খেলাটা খেলতে পারবেন। কঠোর পরিশ্রম আর ভয়ডরহীন মানসিকতার কারণে এই বয়সেও ফিটনেস ধরে ধারা সম্ভব হচ্ছে। আমি সঠিক প্রক্রিয়া মেনে ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করি। মানুষ আমার মতামত জানতে চাইলে বলি, প্রতিনিয়ত ভালো ক্রিকেটার হতে চাই। এটাও আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সহায়তা করছে।

    লম্বা সময় আমরা বাংলাদেশকে হারাতে পারিনি। অবশেষে জয় এসেছে, আলহামদুলিল্লাহ। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে চেয়েছি। 

প্রশ্ন: যুদ্ধবিমানের পাইলট হওয়ার স্বপ্ন ছিল। চোখের পরীক্ষায় উতরাতে না পেরে সেটা হয়ে ওঠেনি। জীবনের এই পর্যায়ে এসে কী মনে হয়?
রাজা: আমার স্বপ্ন ছিল যুদ্ধবিমানের পাইলট হওয়ার। পারিনি। কিন্তু এই যে আমি, আমরা। জীবন তো এগিয়ে যাচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। এটাই তো জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

প্রশ্ন: আপনার এখনকার বোলিং অ্যাকশন সুনীল নারাইনের মতো। শুনেছি, চোট থেকে ফেরার পর এভাবে বোলিং শুরু করেছেন।
রাজা: বাধ্য হয়ে সানি ভাইয়ের (সুনীল নারাইন) মতো অ্যাকশনে বোলিং শুরু করি। তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর পরামর্শেই আমার বোলিং অ্যাকশন পাল্টে ফেলেছি। তাঁর মতো করেই বোলিং করতে শুরু করেছি। কিন্তু যে কথাটা বলতে চাই, তাঁর বোলিং সম্পর্কে আমার সব প্রশ্নের উত্তর তিনি সব সময় দিয়ে গেছেন। ল্যান্ডিংয়ের সময় কী করব, লেংথ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কী করব। কীভাবে ভালো বোলিং করা যায়, সানি ভাই আমার পাশে সব সময় ছিলেন। 

প্রশ্ন: অনেক দেশেই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলেছেন। কিন্তু কদিন আগে রাজশাহীতে আমানা গ্রুপ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ খেলতে এসেছিলেন, যেটা সে অর্থে স্বীকৃত নয়। কোনো বিশেষ কারণ ছিল এখানে খেলতে আসার পেছনে?
রাজা: রাজশাহী আমার জন্য অন্য রকম এক অভিজ্ঞতা। আমরা তখন একের পর এক হেরে চলছিলাম। নামিবিয়ায় আমাদের একটা বাজে সফর ছিল। আফগানিস্তানেও একই অবস্থা। এরপর আমি রাজশাহী যাই। আমি রাইমা রেঞ্জাস (ফ্র্যাঞ্চাইজি) পরিবারকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তাদের দলে নেওয়ায়। সেখানে আমরা জিততে শুরু করলাম, আমি ক্রিকেট উপভোগ করলাম। জীবনও উপভোগ করতে শুরু করলাম। রাজশাহীর মানুষ আমাকে ভালোভাবে নিয়েছে। আমি আজীবন রাজশাহীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব এবং রাজশাহী আজীবন আমার হৃদয়ে থাকবে।

প্রশ্ন: টানা দুটি আইসিসি টুর্নামেন্টের বাছাইপর্ব পার হতে ব্যর্থ জিম্বাবুয়ে। এবার বাছাইপর্বে পেরিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবেন। কতটা রোমাঞ্চিত?
রাজা: অনেক দিন আমরা বিশ্বকাপে ছিলাম না। শুধু খেলোয়াড় নয়, জিম্বাবুয়ের মানুষদেরও এতটা দীর্ঘ বিরতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। এবার আমরা সেরাটা দিয়ে লড়তে চেয়েছিলাম। সবাই খুব ক্ষুধার্ত ও প্রতিশ্রুতিশীল ছিল। বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার পর মনে হয়েছে, আমরা কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার পেয়েছি। (বাংলাদেশকে হারানোর পর) আমরা খুব রোমাঞ্চিত। এখন আমাদের চোখ অস্ট্রেলিয়ায়। আশা করি, সেখানেও ভালো করে মূল পর্বে (সুপার টুয়েলভ) খেলব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত