সংস্কারের জন্য অনেকগুলো কমিশন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। আজ বুধবার প্রতিবেদন দিচ্ছে তারা। কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. হুমায়ূন কবীর।
মো. হুমায়ূন কবীর
আজকের পত্রিকা: তিন মাসের অধিক সময় ধরে কাজ করেছেন। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে মোটাদাগে কী ধরনের পরিবর্তনের সুপারিশ করছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: মোটাদাগে বলতে গেলে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পরিশীলিত করা, আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করা, নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তারা যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে; সে জন্য আইনি কাঠামো পরিবর্তনের জন্য আমরা সুপারিশ করব।
আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল; যার কারণে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। আমরা একটি স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে দীর্ঘ ১৫ বছর কাটিয়েছি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সহজ নয়। এ জন্য অনেক পরিবর্তন দরকার। আমাদের পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার, প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তন দরকার, আইনি কাঠামোতে পরিবর্তন দরকার। সবচেয়ে বড় দরকার আমাদের মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে এমন কতগুলো প্রস্তাব করা, আমরা এখন যেসব সমস্যার সম্মুখীন, সেগুলোর যাতে উত্তরণ ঘটাতে পারে।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের সুপারিশে মৌলিক পরিবর্তন কী কী হতে পারে?
বদিউল আলম মজুমদার: নির্বাচন কমিশনের বিষয়েই গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ থাকবে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া। তাদের আরও শক্তিশালী করা, আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া। একই সঙ্গে অতীতের মতো নির্বাচন কমিশন, যারা আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে, ওই ধরনের অবস্থার যাতে সৃষ্টি না হয়; এগুলোই অগ্রাধিকার পাওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ও অতীতে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে। এটা থেকে উত্তরণ ঘটানো জরুরি, কিন্তু চারটিখানি কথা নয়।
পাশাপাশি অতীতে দেখা গেছে, আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার পেছনে, সুষ্ঠু নির্বাচন না করার পেছনে বড় কারণ দলীয় সরকারব্যবস্থা। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় না, এখন এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসছে। আমরা মনে করি এটি কীভাবে কার্যকর করা যায়, সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। আমাদের সংবিধান সংস্কারবিষয়ক যে কমিশন আছে, নিশ্চয়ই তারা এদিকে নজর দিচ্ছে। আমরাও কিছু নজর দিচ্ছি।
দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। একটি হচ্ছে নারীদের প্রতিনিধিত্ব, নারীদের প্রতিনিধিত্ব বর্তমানে অলংকারে পরিণত হয়েছে। নারীরা কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন না। এটি ফায়দার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমরা অতীতে দেখেছি, খবরের কাগজে বেরিয়েছে, কীভাবে মনোনয়ন-বাণিজ্য হয়। সংরক্ষিত মহিলা আসনটাকে আরও কার্যকর করা আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব থাকবে।
একই সঙ্গে স্থানীয় সরকারের করুণ অবস্থা। আছে কি নাই, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। যতটুকু ছিল বর্তমানে অনেকে পলাতক, যার ফলে অকার্যকর। আর দলীয়করণের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আমাদের সুপারিশ থাকবে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন নিয়ে কী ধরনের সুপারিশ থাকছে?
বদিউল আলম মজুমদার: নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে আমরা বহু আগে থেকেই বলে আসছি। সুজনের পক্ষ থেকে আমরা সুপারিশও দিয়েছি। অতীতে যেভাবে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, সেই পদ্ধতিতে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশনই সাধারণত নিয়োগ পায়। তাই আমরা নির্বাচনী আইনে পরিবর্তনের সুপারিশ করছি।
আজকের পত্রিকা: সেই আইনি কাঠামোটা কীভাবে হবে?
বদিউল আলম মজুমদার: এটি নতুন কথা নয়, রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ; যাতে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠিত না হয়।
আজকের পত্রিকা: সেখানে কি সার্চ কমিটির মতো কিছু থাকবে?
বদিউল আলম মজুমদার: হ্যাঁ, সার্চ কমিটি অতীতেও ছিল। আমরা তো আশা করছি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। সংসদের প্রতিনিধিত্ব করা দলের প্রতিনিধিদের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করছি।
আজকের পত্রিকা: আর কী ধরনের মৌলিক পরিবর্তন আনছেন, যেখানে নির্বাচন কমিশন আরও স্বাধীন থাকবে?
বদিউল আলম মজুমদার: তাদের আর্থিক স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: আর্থিক স্বাধীনতা কীভাবে নিশ্চিত হবে?
বদিউল আলম মজুমদার: সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের তো স্বাধীনতা আছেই, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: এই এখতিয়ার সংবিধান সংস্কার কমিশনের। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের সুপারিশ গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনী ব্যবস্থার বিষয়ে কী সুপারিশ থাকবে? যেটা সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তা করবে।
বদিউল আলম মজুমদার: আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা তো আছেই। এটিকে কার্যকর করা, স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ থাকবে।
আজকের পত্রিকা: মৌলিক কী পরিবর্তন আসছে?
বদিউল আলম মজুমদার: এ জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা যে সুপারিশগুলো দিচ্ছি, এগুলোর মালিকানা সরকারের। সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনগুলো তারা প্রকাশ করবে।
আজকের পত্রিকা: আপনারা যে সুপারিশগুলো দিচ্ছেন, কত সময়ের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন করা সম্ভব বলে মনে করছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: এ বিষয়ে কোনো ধারণা নেই। এগুলো আমাদের সিদ্ধান্তও নয়। এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত।
আজকের পত্রিকা: স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রস্তাব থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: আমরা তো মনে করি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারসংক্রান্ত সুপারিশগুলো অধিকাংশই বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
আজকের পত্রিকা: ‘না ভোট’, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত যাতে হতে না পারে, এ বিষয়ে আপনাদের কোনো সুপারিশ থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: ২০০৮-এর আইনে না ভোট ছিল। সরকার, নির্বাচন কমিশন এটি বাতিল করেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে এটি নিয়ে মামলাও হয়েছিল। আমি বহু চেষ্টা করেও সেটিকে বাঁচাতে পারিনি। না ভোট রাখার বিষয়ে ব্যাপক জনমত রয়েছে। না ভোট থাকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথ এমনিতেই থাকবে না।
আজকের পত্রিকা: যে সুপারিশগুলো করছেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করে তারপর নির্বাচন করার বিষয়ে আপনাদের সুপারিশ থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: আমাদের এ ধরনের কোনো সুপারিশ থাকবে না। এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে এগুলো নির্ধারিত হবে। আমার মনে হয়, আগামী কয়েক সপ্তাহ এগুলো সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে। আমাদেরও এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। আমি যেহেতু ঐক্য কমিশনের সদস্য। তাই হয়তো আমাদেরও ভূমিকা থাকবে। আমার মনে হয়, এটি সামনের দিনগুলোয় নির্ধারিত হবে।
আজকের পত্রিকা: ঐকমত্য কমিশনের ঐক্য কীভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার মতামতের ভিত্তিতে নাকি যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলোয় গুরুত্ব দেবেন?
বদিউল আলম মজুমদার: ঐকমত্য কমিশন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটি নিয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। এর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: সংসদের আসনসংখ্যা বাড়ানোর কোনো সুপারিশ আছে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: এটি আমাদের সংবিধান সংস্কার কমিশনের এখতিয়ার। আমরা মহিলা আসনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। সংখ্যা কত হবে, এখন বলা যাবে না।
আজকের পত্রিকা: স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের শর্তের বিষয়ে কোনো সুপারিশ থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কোনো বাধা থাকা উচিত নয়।
আজকের পত্রিকা: সুপারিশগুলো সরকারের কাছে কবে জমা দেবেন?
বদিউল আলম মজুমদার: আগামীকাল বুধবার (আজ)।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
বদিউল আলম মজুমদার: আপনাকেও ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: তিন মাসের অধিক সময় ধরে কাজ করেছেন। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে মোটাদাগে কী ধরনের পরিবর্তনের সুপারিশ করছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: মোটাদাগে বলতে গেলে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পরিশীলিত করা, আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করা, নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তারা যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে; সে জন্য আইনি কাঠামো পরিবর্তনের জন্য আমরা সুপারিশ করব।
আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল; যার কারণে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। আমরা একটি স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে দীর্ঘ ১৫ বছর কাটিয়েছি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সহজ নয়। এ জন্য অনেক পরিবর্তন দরকার। আমাদের পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার, প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তন দরকার, আইনি কাঠামোতে পরিবর্তন দরকার। সবচেয়ে বড় দরকার আমাদের মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে এমন কতগুলো প্রস্তাব করা, আমরা এখন যেসব সমস্যার সম্মুখীন, সেগুলোর যাতে উত্তরণ ঘটাতে পারে।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের সুপারিশে মৌলিক পরিবর্তন কী কী হতে পারে?
বদিউল আলম মজুমদার: নির্বাচন কমিশনের বিষয়েই গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ থাকবে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া। তাদের আরও শক্তিশালী করা, আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া। একই সঙ্গে অতীতের মতো নির্বাচন কমিশন, যারা আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে, ওই ধরনের অবস্থার যাতে সৃষ্টি না হয়; এগুলোই অগ্রাধিকার পাওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ও অতীতে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে। এটা থেকে উত্তরণ ঘটানো জরুরি, কিন্তু চারটিখানি কথা নয়।
পাশাপাশি অতীতে দেখা গেছে, আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার পেছনে, সুষ্ঠু নির্বাচন না করার পেছনে বড় কারণ দলীয় সরকারব্যবস্থা। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় না, এখন এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসছে। আমরা মনে করি এটি কীভাবে কার্যকর করা যায়, সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। আমাদের সংবিধান সংস্কারবিষয়ক যে কমিশন আছে, নিশ্চয়ই তারা এদিকে নজর দিচ্ছে। আমরাও কিছু নজর দিচ্ছি।
দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। একটি হচ্ছে নারীদের প্রতিনিধিত্ব, নারীদের প্রতিনিধিত্ব বর্তমানে অলংকারে পরিণত হয়েছে। নারীরা কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন না। এটি ফায়দার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমরা অতীতে দেখেছি, খবরের কাগজে বেরিয়েছে, কীভাবে মনোনয়ন-বাণিজ্য হয়। সংরক্ষিত মহিলা আসনটাকে আরও কার্যকর করা আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব থাকবে।
একই সঙ্গে স্থানীয় সরকারের করুণ অবস্থা। আছে কি নাই, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। যতটুকু ছিল বর্তমানে অনেকে পলাতক, যার ফলে অকার্যকর। আর দলীয়করণের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আমাদের সুপারিশ থাকবে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন নিয়ে কী ধরনের সুপারিশ থাকছে?
বদিউল আলম মজুমদার: নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে আমরা বহু আগে থেকেই বলে আসছি। সুজনের পক্ষ থেকে আমরা সুপারিশও দিয়েছি। অতীতে যেভাবে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, সেই পদ্ধতিতে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশনই সাধারণত নিয়োগ পায়। তাই আমরা নির্বাচনী আইনে পরিবর্তনের সুপারিশ করছি।
আজকের পত্রিকা: সেই আইনি কাঠামোটা কীভাবে হবে?
বদিউল আলম মজুমদার: এটি নতুন কথা নয়, রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ; যাতে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠিত না হয়।
আজকের পত্রিকা: সেখানে কি সার্চ কমিটির মতো কিছু থাকবে?
বদিউল আলম মজুমদার: হ্যাঁ, সার্চ কমিটি অতীতেও ছিল। আমরা তো আশা করছি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। সংসদের প্রতিনিধিত্ব করা দলের প্রতিনিধিদের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করছি।
আজকের পত্রিকা: আর কী ধরনের মৌলিক পরিবর্তন আনছেন, যেখানে নির্বাচন কমিশন আরও স্বাধীন থাকবে?
বদিউল আলম মজুমদার: তাদের আর্থিক স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: আর্থিক স্বাধীনতা কীভাবে নিশ্চিত হবে?
বদিউল আলম মজুমদার: সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের তো স্বাধীনতা আছেই, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: এই এখতিয়ার সংবিধান সংস্কার কমিশনের। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের সুপারিশ গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনী ব্যবস্থার বিষয়ে কী সুপারিশ থাকবে? যেটা সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তা করবে।
বদিউল আলম মজুমদার: আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা তো আছেই। এটিকে কার্যকর করা, স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ থাকবে।
আজকের পত্রিকা: মৌলিক কী পরিবর্তন আসছে?
বদিউল আলম মজুমদার: এ জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা যে সুপারিশগুলো দিচ্ছি, এগুলোর মালিকানা সরকারের। সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনগুলো তারা প্রকাশ করবে।
আজকের পত্রিকা: আপনারা যে সুপারিশগুলো দিচ্ছেন, কত সময়ের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন করা সম্ভব বলে মনে করছেন?
বদিউল আলম মজুমদার: এ বিষয়ে কোনো ধারণা নেই। এগুলো আমাদের সিদ্ধান্তও নয়। এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত।
আজকের পত্রিকা: স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রস্তাব থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: আমরা তো মনে করি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারসংক্রান্ত সুপারিশগুলো অধিকাংশই বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
আজকের পত্রিকা: ‘না ভোট’, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত যাতে হতে না পারে, এ বিষয়ে আপনাদের কোনো সুপারিশ থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: ২০০৮-এর আইনে না ভোট ছিল। সরকার, নির্বাচন কমিশন এটি বাতিল করেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে এটি নিয়ে মামলাও হয়েছিল। আমি বহু চেষ্টা করেও সেটিকে বাঁচাতে পারিনি। না ভোট রাখার বিষয়ে ব্যাপক জনমত রয়েছে। না ভোট থাকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথ এমনিতেই থাকবে না।
আজকের পত্রিকা: যে সুপারিশগুলো করছেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করে তারপর নির্বাচন করার বিষয়ে আপনাদের সুপারিশ থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: আমাদের এ ধরনের কোনো সুপারিশ থাকবে না। এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে এগুলো নির্ধারিত হবে। আমার মনে হয়, আগামী কয়েক সপ্তাহ এগুলো সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে। আমাদেরও এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। আমি যেহেতু ঐক্য কমিশনের সদস্য। তাই হয়তো আমাদেরও ভূমিকা থাকবে। আমার মনে হয়, এটি সামনের দিনগুলোয় নির্ধারিত হবে।
আজকের পত্রিকা: ঐকমত্য কমিশনের ঐক্য কীভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার মতামতের ভিত্তিতে নাকি যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলোয় গুরুত্ব দেবেন?
বদিউল আলম মজুমদার: ঐকমত্য কমিশন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটি নিয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। এর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: সংসদের আসনসংখ্যা বাড়ানোর কোনো সুপারিশ আছে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: এটি আমাদের সংবিধান সংস্কার কমিশনের এখতিয়ার। আমরা মহিলা আসনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। সংখ্যা কত হবে, এখন বলা যাবে না।
আজকের পত্রিকা: স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের শর্তের বিষয়ে কোনো সুপারিশ থাকবে কি না?
বদিউল আলম মজুমদার: স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কোনো বাধা থাকা উচিত নয়।
আজকের পত্রিকা: সুপারিশগুলো সরকারের কাছে কবে জমা দেবেন?
বদিউল আলম মজুমদার: আগামীকাল বুধবার (আজ)।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
বদিউল আলম মজুমদার: আপনাকেও ধন্যবাদ।
প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, সংস্কার ও বছরের শেষ নাগাদ বা আগামী বছরের প্রথমার্ধে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়ার কোনো ঘাটতি নেই। গত ২৯ ডিসেম্বর (২০২৪) ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় বাং
১১ দিন আগেনেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তসীমান্ত জ্বালানি বাণিজ্য সবার জন্যই লাভজনক হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানি বিনিময় আরও গতিশীল হলেই বাজার পরিপক্ব হবে। তখন সবার জন্যই লাভজনক...
১৬ দিন আগেসাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি সার্ক পোভার্টি কমিশনের সদস্য এবং বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইউএসএআইডি, জাইকাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় পরামর্শক ছিলেন।
১৬ দিন আগেদুই দশক আগে মঞ্চনাটক দিয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন সিকদার মুকিত। ২০১৪ সাল থেকে অভিনয় করছেন টিভি নাটকে। অভিনয়কে ভালোবেসে অন্য কোনো পেশায় জড়াননি। এখনো নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
২৩ দিন আগে