ইজাজুল হক
নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন সৌদি আরবের নারীরা। দ্রুতগতির রেল হারামাইন এক্সপ্রেসের চালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির ৩২ নারী। সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, সৌদি রেলওয়ে পলিটেকনিকে বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের পর গত ২৩ জানুয়ারি তাঁরা চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
মূলত ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলা বুলেট ট্রেন ‘হারামাইন এক্সপ্রেস’ সৌদি আরবের পবিত্র দুই শহর মক্কা ও মদিনার ৪৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে নিয়মিত চলাচল করছে। দুই শহরে পবিত্র হজ-ওমরাহ ও জিয়ারত করতে আসা যাত্রীদের জন্য ২০২১ সালে বিশেষায়িত এই রেলসেবা চালু করা হয়েছিল।
সৌদি রেল কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালের শুরুতে ৩২টি নারী চালকের পদের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করেছিল। রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত সৌদি নারীরা এতে অবিশ্বাস্য রকমের সাড়া দেন। রেলওয়ের আবেদন বাক্সে জমা পড়ে ২৮ হাজার আবেদন। সেখান থেকে দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচিতদের নিয়ে ১২ মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৩২ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়।
চলতি বছরের শুরুতে এ বিষয়ে সৌদি রেল কর্তৃপক্ষ একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তাতে চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কয়েকজন নারীকে কথা বলতে দেখা যায়। এই উদ্যোগের গর্বিত অংশীদার হতে পেরে তাঁদের বেশ উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায়।
উত্তীর্ণদের একজন ২৫ বছর বয়সী ইংরেজির শিক্ষক সারা আলি। বুলেট ট্রেনের চালকের আসনে বসার আগে তাঁর ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা জন্মস্থান জেদ্দার আশপাশেই সীমাবদ্ধ ছিল। অনেকের সঙ্গে তিনিও রেলচালকের পদে আবেদন করেছিলেন এবং চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। গত মাসেই তিনি সফলভাবে প্রথম যাত্রা সম্পন্ন করেছেন।
সারা আলি বলেন, ‘এখানে এসে চালকের কক্ষে প্রবেশের প্রথম দিনটি স্বপ্নের মতোই কেটেছে। চালকের আসনে যখন বসি, তখন দেখি আমার সামনের সবকিছু আমার দিকে দ্রুতগতিতে ধেয়ে আসছে। প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলাম। তবে আল্লাহকে ধন্যবাদ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিবিড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পেরেছি।’
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সৌদি আরবে কর্মজীবী নারীর অনুপাত এখন ২০১৬ সালের চেয়ে দ্বিগুণ; ১৭ শতাংশ থেকে ৩৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে এবং তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের ঘোষিত ভিশন-৩০-এ নারীর অধিকার সম্প্রসারণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো হচ্ছে।
হারামাইন এক্সপ্রেসের চালক পদে বিপুলসংখ্যক নারীর আবেদন করার ঘটনা সৌদি কর্তৃপক্ষের সামনে নারীদের জন্য বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টির চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সৌদি অর্থনীতিবিদ মেশাল আলখোয়াইতার বলেছেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ বদলেছে। এখন আমাদের নারীদের কাজে যোগ দিতে উৎসাহ দিতে হবে এবং তিন মাস পরপর তাদের নতুন কর্মসংস্থানের জন্য ভাবতে হবে।’
এত দিন সৌদি নারীরা শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে অবদান রাখলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করার কারণে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলেছে। নারীরা বৈচিত্র্যময় পেশায় যোগ দিচ্ছেন। তবে এমন পরিবর্তন সমাজ সহজেই মেনে নিতে চায় না। রেলচালকের পদে উত্তীর্ণ নারীরাও এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন।
উত্তীর্ণ নারী চালকদের একজন রানিম আজুজ। কিছুদিন আগে মদিনায় একটি যাত্রা শেষ করার পরে তাঁকে এক নারী যাত্রী জানিয়েছেন, নিজের চোখে না দেখলে তিনি কখনোই বিশ্বাস করতেন না যে নারীরাও এমন কাজ করতে পারেন। রানিম বলছিলেন, ‘সত্যি বলতে, আমিও চাকরির বিজ্ঞাপনটি দেখে বিশ্বাস করিনি। আমি তখন বলেছিলাম, আমার মেয়েও যদি আমাকে নিয়ে রেল চালায়, আমি তাতে চড়ব না।’
রানিম আজুজ আরও জানান, ওই যাত্রী তাঁকে বলেছেন, ‘আপনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। আমি কোনো পার্থক্য অনুভব করিনি।’
সৌদি রেলওয়ের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়ান আল-হারবি বলেন, ‘নারী চালকেরা অত্যন্ত যোগ্য। প্রশিক্ষণের সময় তাঁরা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন।’
রানিম আজুজ জানান, অনেক যাত্রীই তাঁকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তবে অসন্তোষ প্রকাশ করতেও দেখেছি কিছু মানুষকে। আমিরাতের সরকারি কর্মচারী মুহাম্মদ ইসা বলেছেন, ‘নারীরা বাড়িতে থাকলেই পরিবার সফল হবে। তাঁরা বাইরে কাজ করলে ঘর সামলাবে কে?’
কিং ফয়সাল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজের সহযোগী গবেষক নাজাহ আলওতাইবি বলেন, ‘দেশের সব মানুষই প্রতিটি পরিবর্তন সমর্থন করবেন, তা আমরা আশা করি না। তবে অধিকাংশ মানুষই পরিবর্তনের পক্ষে।’
সূত্র: আরব নিউজ, দ্য আরব উইকলি
নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন সৌদি আরবের নারীরা। দ্রুতগতির রেল হারামাইন এক্সপ্রেসের চালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির ৩২ নারী। সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, সৌদি রেলওয়ে পলিটেকনিকে বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের পর গত ২৩ জানুয়ারি তাঁরা চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
মূলত ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলা বুলেট ট্রেন ‘হারামাইন এক্সপ্রেস’ সৌদি আরবের পবিত্র দুই শহর মক্কা ও মদিনার ৪৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে নিয়মিত চলাচল করছে। দুই শহরে পবিত্র হজ-ওমরাহ ও জিয়ারত করতে আসা যাত্রীদের জন্য ২০২১ সালে বিশেষায়িত এই রেলসেবা চালু করা হয়েছিল।
সৌদি রেল কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালের শুরুতে ৩২টি নারী চালকের পদের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করেছিল। রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত সৌদি নারীরা এতে অবিশ্বাস্য রকমের সাড়া দেন। রেলওয়ের আবেদন বাক্সে জমা পড়ে ২৮ হাজার আবেদন। সেখান থেকে দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচিতদের নিয়ে ১২ মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৩২ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়।
চলতি বছরের শুরুতে এ বিষয়ে সৌদি রেল কর্তৃপক্ষ একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তাতে চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কয়েকজন নারীকে কথা বলতে দেখা যায়। এই উদ্যোগের গর্বিত অংশীদার হতে পেরে তাঁদের বেশ উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায়।
উত্তীর্ণদের একজন ২৫ বছর বয়সী ইংরেজির শিক্ষক সারা আলি। বুলেট ট্রেনের চালকের আসনে বসার আগে তাঁর ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা জন্মস্থান জেদ্দার আশপাশেই সীমাবদ্ধ ছিল। অনেকের সঙ্গে তিনিও রেলচালকের পদে আবেদন করেছিলেন এবং চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। গত মাসেই তিনি সফলভাবে প্রথম যাত্রা সম্পন্ন করেছেন।
সারা আলি বলেন, ‘এখানে এসে চালকের কক্ষে প্রবেশের প্রথম দিনটি স্বপ্নের মতোই কেটেছে। চালকের আসনে যখন বসি, তখন দেখি আমার সামনের সবকিছু আমার দিকে দ্রুতগতিতে ধেয়ে আসছে। প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলাম। তবে আল্লাহকে ধন্যবাদ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিবিড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পেরেছি।’
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সৌদি আরবে কর্মজীবী নারীর অনুপাত এখন ২০১৬ সালের চেয়ে দ্বিগুণ; ১৭ শতাংশ থেকে ৩৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে এবং তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের ঘোষিত ভিশন-৩০-এ নারীর অধিকার সম্প্রসারণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো হচ্ছে।
হারামাইন এক্সপ্রেসের চালক পদে বিপুলসংখ্যক নারীর আবেদন করার ঘটনা সৌদি কর্তৃপক্ষের সামনে নারীদের জন্য বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টির চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সৌদি অর্থনীতিবিদ মেশাল আলখোয়াইতার বলেছেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ বদলেছে। এখন আমাদের নারীদের কাজে যোগ দিতে উৎসাহ দিতে হবে এবং তিন মাস পরপর তাদের নতুন কর্মসংস্থানের জন্য ভাবতে হবে।’
এত দিন সৌদি নারীরা শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে অবদান রাখলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করার কারণে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলেছে। নারীরা বৈচিত্র্যময় পেশায় যোগ দিচ্ছেন। তবে এমন পরিবর্তন সমাজ সহজেই মেনে নিতে চায় না। রেলচালকের পদে উত্তীর্ণ নারীরাও এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন।
উত্তীর্ণ নারী চালকদের একজন রানিম আজুজ। কিছুদিন আগে মদিনায় একটি যাত্রা শেষ করার পরে তাঁকে এক নারী যাত্রী জানিয়েছেন, নিজের চোখে না দেখলে তিনি কখনোই বিশ্বাস করতেন না যে নারীরাও এমন কাজ করতে পারেন। রানিম বলছিলেন, ‘সত্যি বলতে, আমিও চাকরির বিজ্ঞাপনটি দেখে বিশ্বাস করিনি। আমি তখন বলেছিলাম, আমার মেয়েও যদি আমাকে নিয়ে রেল চালায়, আমি তাতে চড়ব না।’
রানিম আজুজ আরও জানান, ওই যাত্রী তাঁকে বলেছেন, ‘আপনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। আমি কোনো পার্থক্য অনুভব করিনি।’
সৌদি রেলওয়ের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়ান আল-হারবি বলেন, ‘নারী চালকেরা অত্যন্ত যোগ্য। প্রশিক্ষণের সময় তাঁরা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন।’
রানিম আজুজ জানান, অনেক যাত্রীই তাঁকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তবে অসন্তোষ প্রকাশ করতেও দেখেছি কিছু মানুষকে। আমিরাতের সরকারি কর্মচারী মুহাম্মদ ইসা বলেছেন, ‘নারীরা বাড়িতে থাকলেই পরিবার সফল হবে। তাঁরা বাইরে কাজ করলে ঘর সামলাবে কে?’
কিং ফয়সাল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজের সহযোগী গবেষক নাজাহ আলওতাইবি বলেন, ‘দেশের সব মানুষই প্রতিটি পরিবর্তন সমর্থন করবেন, তা আমরা আশা করি না। তবে অধিকাংশ মানুষই পরিবর্তনের পক্ষে।’
সূত্র: আরব নিউজ, দ্য আরব উইকলি
মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে...
৮ ঘণ্টা আগেমিরাজ সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে বর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাস রাখা মুমিনের কর্তব্য। তবে মিরাজকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের ভিত্তিহীন আমল ও বেশ কিছু বানোয়াট কথা সমাজে প্রচলিত রয়েছে। যেমন বলা হয়, নবী (সা.) এত দ্রুত সময়ে মিরাজ থেকে ফিরলেন যে বিছানার চাদর তখনো উষ্ণ ছিল, উপুড় করে রেখে যাওয়া পানির পাত্রটি থেকে...
৮ ঘণ্টা আগেগত রমজানে আমি অসুস্থতার কারণে অনেক রোজা রাখতে পারিনি। এখন যেহেতু দিন ছোট হয়ে এসেছে, তাই আমি রোজাগুলোর কাজা আদায় করতে চাচ্ছি। রোজার কাজা আদায়ের বিধান সম্পর্কে জানালে উপকৃত হব।
৮ ঘণ্টা আগেইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) ছিলেন ইতিহাসের সফলতম রাষ্ট্রনায়ক। প্রথম খলিফা হজরত আবুবকর (রা.) মৃত্যুর আগেই সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে ওমরকে খলিফা মনোনীত করে যান। তাঁর মর্যাদা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন, তাহলে তিনি ওমর ইবনে খাত্তাবই...
৮ ঘণ্টা আগে