আবু আবদুল্লাহ আহমদ
আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারা বান্দার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। খুশির ব্যাপার হলো, কী কী আমল করলে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যাবে—পবিত্র কোরআনে তিনি নিজেই তা বলে দিয়েছেন। এখানে তেমনই কয়েকটি আমলের কথা লিখেছেন মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ।
ইহসান: শরিয়তের পরিভাষায় ইহসানের দুটি অর্থ আছে। এক. যথাযথভাবে আল্লাহর ইবাদত করা এবং দুই. অন্যের প্রতি অনুগ্রহ করা। প্রথম অর্থ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘ইহসান হলো, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে যেন তাঁকে দেখতে পাচ্ছ, তা সম্ভব না হলে এমন অনুভূতি নিয়ে ইবাদত করবে যেন তিনি তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) দ্বিতীয় অর্থে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘অনুগ্রহ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।’ (সুরা কাসাস: ৭৭) উল্লিখিত উভয় অর্থে ইহসান অবলম্বনকারীদের ভালোবাসার ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ইহসান অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা: ১৯৫, সুরা আলে ইমরান: ১৩৪ ও ১৪৮ এবং সুরা মায়িদা: ১৩ ও ৯৩)
তাকওয়া: তালক ইবনে হাবিব (রহ.) বলেন, ‘তাকওয়া হলো, সওয়াবের আশায় আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁর আনুগত্য করা এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে তাঁর নিষেধ করা বিষয় থেকে বিরত থাকা।’ (কিতাবুত তাকওয়া) পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৭৬ এবং সুরা তাওবা: ৪ ও ৭)
ইনসাফ: বিচার-আচারে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে যথাযথ ফয়সালা দেওয়া, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান কিংবা পরিবার পরিচালনায় অধীনদের মধ্যে সমতা ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা মায়িদা: ৪২, সুরা হুজুরাত: ৯ এবং সুরা মুমতাহিনা: ৮)
তওবা: তওবা হলো, কৃত গুনাহের প্রতি অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না করার দৃঢ় সংকল্প করা। তওবা মানুষকে পাপের পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন।’
(সুরা বাকারা: ২২২)
পবিত্রতা: অন্তরকে হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার ইত্যাদি আত্মিক পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত রাখা এবং শরীর, কাপড়চোপড়, বাড়িঘর, কর্মস্থল ইত্যাদি যাবতীয় বাহ্যিক ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন রাখার নাম পবিত্রতা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তাওবা: ১০৮)
সবর: সাধারণত সবর বলতে আমরা কেবল বিপদে ধৈর্য ধরাকেই বুঝি। তবে ইসলামে এর অর্থ আরও ব্যাপক। ইসলামে সবর বলতে ইবাদতের ওপর অবিচল থাকা, গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং বিপদ-আপদে অস্থির না হওয়াকে বোঝায়। (আস-সবর, সালিহ আল মুনাজ্জিদ) এই ব্যাপক অর্থে যাঁরা সবর করেন, আল্লাহ তাঁদের ভালোবাসেন।
(সুরা আলে ইমরান: ১৪৬)
তাওয়াক্কুল: বাহ্যিক উপায় অবলম্বন করার পর বিপদ দূর করা ও কল্যাণ লাভের ব্যাপারে আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থা ও বিশ্বাস রাখার নাম তাওয়াক্কুল। বাহ্যিক উপায় অবলম্বন না করে কেবল আল্লাহর ওপর ভরসা করার নাম তাওয়াক্কুল নয়। এক সাহাবি দূর থেকে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি নিজের বাহন কোথাও না বেঁধে রাসুলের কাছে এলেন। রাসুল (সা.) তাঁকে বাহনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ‘আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে ছেড়ে এসেছি।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘বরং তুমি সেটি কোনো কিছুর সঙ্গে বেঁধে রেখো। তারপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করো।’ (ইবনে হিব্বান) পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওয়াক্কুল অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৫৯)
সত্য ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে সারিবদ্ধভাবে সুদৃঢ় প্রাচীরের মতো লড়াই-সংগ্রাম করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।’ (সুরা সফ: ৪)
লেখক: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারা বান্দার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। খুশির ব্যাপার হলো, কী কী আমল করলে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যাবে—পবিত্র কোরআনে তিনি নিজেই তা বলে দিয়েছেন। এখানে তেমনই কয়েকটি আমলের কথা লিখেছেন মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ।
ইহসান: শরিয়তের পরিভাষায় ইহসানের দুটি অর্থ আছে। এক. যথাযথভাবে আল্লাহর ইবাদত করা এবং দুই. অন্যের প্রতি অনুগ্রহ করা। প্রথম অর্থ সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘ইহসান হলো, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে যেন তাঁকে দেখতে পাচ্ছ, তা সম্ভব না হলে এমন অনুভূতি নিয়ে ইবাদত করবে যেন তিনি তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) দ্বিতীয় অর্থে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘অনুগ্রহ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।’ (সুরা কাসাস: ৭৭) উল্লিখিত উভয় অর্থে ইহসান অবলম্বনকারীদের ভালোবাসার ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ইহসান অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা: ১৯৫, সুরা আলে ইমরান: ১৩৪ ও ১৪৮ এবং সুরা মায়িদা: ১৩ ও ৯৩)
তাকওয়া: তালক ইবনে হাবিব (রহ.) বলেন, ‘তাকওয়া হলো, সওয়াবের আশায় আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁর আনুগত্য করা এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে তাঁর নিষেধ করা বিষয় থেকে বিরত থাকা।’ (কিতাবুত তাকওয়া) পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৭৬ এবং সুরা তাওবা: ৪ ও ৭)
ইনসাফ: বিচার-আচারে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে যথাযথ ফয়সালা দেওয়া, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান কিংবা পরিবার পরিচালনায় অধীনদের মধ্যে সমতা ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা মায়িদা: ৪২, সুরা হুজুরাত: ৯ এবং সুরা মুমতাহিনা: ৮)
তওবা: তওবা হলো, কৃত গুনাহের প্রতি অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না করার দৃঢ় সংকল্প করা। তওবা মানুষকে পাপের পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন।’
(সুরা বাকারা: ২২২)
পবিত্রতা: অন্তরকে হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার ইত্যাদি আত্মিক পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত রাখা এবং শরীর, কাপড়চোপড়, বাড়িঘর, কর্মস্থল ইত্যাদি যাবতীয় বাহ্যিক ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন রাখার নাম পবিত্রতা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তাওবা: ১০৮)
সবর: সাধারণত সবর বলতে আমরা কেবল বিপদে ধৈর্য ধরাকেই বুঝি। তবে ইসলামে এর অর্থ আরও ব্যাপক। ইসলামে সবর বলতে ইবাদতের ওপর অবিচল থাকা, গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং বিপদ-আপদে অস্থির না হওয়াকে বোঝায়। (আস-সবর, সালিহ আল মুনাজ্জিদ) এই ব্যাপক অর্থে যাঁরা সবর করেন, আল্লাহ তাঁদের ভালোবাসেন।
(সুরা আলে ইমরান: ১৪৬)
তাওয়াক্কুল: বাহ্যিক উপায় অবলম্বন করার পর বিপদ দূর করা ও কল্যাণ লাভের ব্যাপারে আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থা ও বিশ্বাস রাখার নাম তাওয়াক্কুল। বাহ্যিক উপায় অবলম্বন না করে কেবল আল্লাহর ওপর ভরসা করার নাম তাওয়াক্কুল নয়। এক সাহাবি দূর থেকে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি নিজের বাহন কোথাও না বেঁধে রাসুলের কাছে এলেন। রাসুল (সা.) তাঁকে বাহনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ‘আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে ছেড়ে এসেছি।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘বরং তুমি সেটি কোনো কিছুর সঙ্গে বেঁধে রেখো। তারপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করো।’ (ইবনে হিব্বান) পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওয়াক্কুল অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৫৯)
সত্য ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে সারিবদ্ধভাবে সুদৃঢ় প্রাচীরের মতো লড়াই-সংগ্রাম করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।’ (সুরা সফ: ৪)
লেখক: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
ইবাদতের নিয়তে করা সব কাজই নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। আর নেক আমল মানুষের জীবনের প্রকৃত সম্পদ। এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে জান্নাত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারাই জান্নাতের অধিকারী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা বাকারা: ৮২)
১৮ ঘণ্টা আগেভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
২ দিন আগেজুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
৩ দিন আগে