ইজাজুল হক
ইসলামে সবুজ রঙের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। এটি পরিবেশ এবং টেকসই জীবনেরও প্রতীক। এ দুটি বিষয় একাকার হয়েছে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে নির্মিত ইউরোপের প্রথম ইকো-মসজিদে। ২০০৮ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল এবং ২৪ এপ্রিল ২০১৯ সালে তা শেষ হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্থাপত্যশৈলীতে মসজিদটির স্থপতিদের কর্মকুশলতা ও দক্ষতার ছাপ স্পষ্ট। এই বৈপ্লবিক স্থাপত্য নির্মাণে নেতৃত্ব দিয়েছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের লেকচারার টিম উইন্টার। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি আবদুল হাকিম মুরাদ নাম গ্রহণ করেছিলেন। এই নামেই এখন তিনি যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পরিচিত। শায়খ মুরাদ যুক্তরাজ্য, মিসর ও সৌদি আরবে ইসলাম বিষয়ে বিস্তর পড়াশোনা করেন। মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ ব্যক্তির একজন তিনি।
কেমব্রিজে ৮ হাজারের বেশি মুসলমান বসবাস করলেও কোনো স্থায়ী মসজিদ ছিল না। এই অভাব পূরণে শায়খ মুরাদ ২০০৮ সালে কেমব্রিজ মসজিদ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন এবং বড় পরিসরে একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেন। শায়খ মুরাদের লক্ষ্য ছিল একটি পরিবেশবান্ধব আধুনিক ইসলামি স্থাপত্য গড়ে তোলা। এর জন্য এক একর জমি কেনা হয় এবং আন্তর্জাতিক মানের নকশা পেতে একটি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। এতে প্রখ্যাত ব্রিটিশ স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান মার্কস বারফিল্ডের নকশাটি নির্বাচিত হয়।
মসজিদের প্রবেশপথের দুপাশে সবুজ বাগান এবং মাঝখানে তুর্কি মার্বেল পাথর বসানো জ্যামিতিক নকশার উঠোন। উঠোনের মাঝখানে একটি ঝরনা। দুপাশে কাঠের চেয়ার পাতানো। বাইরে থেকেই দেখা যায় বাঁকা কাঠের সমন্বয়ে গঠিত মসজিদের স্তম্ভগুলো। ছাদ থেকে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস আসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রয়েছে পূর্ণাঙ্গ সৌর বিদ্যুতায়িত ব্যবস্থা।
মসজিদে রয়েছে ১ হাজার মুসল্লি ধারণক্ষমতার হলরুম। নারীদের নামাজের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রয়েছে একটি করে রেস্তোরাঁ, ক্লাসরুম, সামাজিক অনুষ্ঠানকক্ষ, প্রদর্শনীকক্ষ, ইমামের কক্ষ এবং চার বেডের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট। এ ছাড়া শিশুদের খেলার স্থান এবং কবরের জন্যও আলাদা জায়গা রাখা হয়েছে।
মজবুত স্ক্যান্ডিনেভিয়ান লার্চ কাঠ দিয়ে কাঠের স্তম্ভগুলো তৈরি করা হয়েছে। ছাদে রয়েছে হিটিং সিস্টেম এবং বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা। অজুর পানির পুনর্ব্যবহার হবে বাগানে এবং টয়লেট পরিষ্কার করার কাজে। ছাদে রয়েছে সেডাম মোস নামের উদ্ভিদ, যা পোকামাকড় ও পাখিদের বসবাসের উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করে। রয়েছে স্বয়ংক্রিয় গরম পানির ব্যবস্থা। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে হিট পাম্পিং সিস্টেম। পুরো কমপ্লেক্সে আটটি বাক্সও রয়েছে, যা ব্রিটেনের বিপন্ন প্রজাতির পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল।
এই মসজিদ নির্মাণে ২৬০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়। এতে মুসলিম বিশ্বের বড় বড় ধনকুবেরসহ সাধারণ মুসলমানগণ অংশ নিয়েছেন। কেমব্রিজের সাধারণ লোকজন এই প্রকল্পের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও আর্থিক সহায়তা করলেও কিছু ডানপন্থী সংগঠন বিরোধিতা করেছিল। তবে তাদের বিরোধিতা ধোপে টেকেনি। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই এটি নির্মাণ করা হয়।
মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ মুরাদ জানান, শিয়া-সুন্নি বিরোধ এই মসজিদে গৌণ। সবাই এক কাতারে নামাজ পড়েন। এখানে সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্রবাদের কোনো স্থান নেই। ইমাম নির্বাচন করা হয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই, এটি এমন এক জায়গা হোক, যেখানে সব ধর্মের মানুষ একত্র হবে। কারণ এই মসজিদ শুধু কেমব্রিজের মুসলমানদের নয়, যেকোনো দেশের, যেকোনো ধর্মের, যেকোনো মানুষের প্রিয় ঠিকানা হবে।’
সূত্র: আরব নিউজ
ইসলামে সবুজ রঙের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। এটি পরিবেশ এবং টেকসই জীবনেরও প্রতীক। এ দুটি বিষয় একাকার হয়েছে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে নির্মিত ইউরোপের প্রথম ইকো-মসজিদে। ২০০৮ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল এবং ২৪ এপ্রিল ২০১৯ সালে তা শেষ হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্থাপত্যশৈলীতে মসজিদটির স্থপতিদের কর্মকুশলতা ও দক্ষতার ছাপ স্পষ্ট। এই বৈপ্লবিক স্থাপত্য নির্মাণে নেতৃত্ব দিয়েছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের লেকচারার টিম উইন্টার। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি আবদুল হাকিম মুরাদ নাম গ্রহণ করেছিলেন। এই নামেই এখন তিনি যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পরিচিত। শায়খ মুরাদ যুক্তরাজ্য, মিসর ও সৌদি আরবে ইসলাম বিষয়ে বিস্তর পড়াশোনা করেন। মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ ব্যক্তির একজন তিনি।
কেমব্রিজে ৮ হাজারের বেশি মুসলমান বসবাস করলেও কোনো স্থায়ী মসজিদ ছিল না। এই অভাব পূরণে শায়খ মুরাদ ২০০৮ সালে কেমব্রিজ মসজিদ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন এবং বড় পরিসরে একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেন। শায়খ মুরাদের লক্ষ্য ছিল একটি পরিবেশবান্ধব আধুনিক ইসলামি স্থাপত্য গড়ে তোলা। এর জন্য এক একর জমি কেনা হয় এবং আন্তর্জাতিক মানের নকশা পেতে একটি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। এতে প্রখ্যাত ব্রিটিশ স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান মার্কস বারফিল্ডের নকশাটি নির্বাচিত হয়।
মসজিদের প্রবেশপথের দুপাশে সবুজ বাগান এবং মাঝখানে তুর্কি মার্বেল পাথর বসানো জ্যামিতিক নকশার উঠোন। উঠোনের মাঝখানে একটি ঝরনা। দুপাশে কাঠের চেয়ার পাতানো। বাইরে থেকেই দেখা যায় বাঁকা কাঠের সমন্বয়ে গঠিত মসজিদের স্তম্ভগুলো। ছাদ থেকে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস আসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রয়েছে পূর্ণাঙ্গ সৌর বিদ্যুতায়িত ব্যবস্থা।
মসজিদে রয়েছে ১ হাজার মুসল্লি ধারণক্ষমতার হলরুম। নারীদের নামাজের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রয়েছে একটি করে রেস্তোরাঁ, ক্লাসরুম, সামাজিক অনুষ্ঠানকক্ষ, প্রদর্শনীকক্ষ, ইমামের কক্ষ এবং চার বেডের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট। এ ছাড়া শিশুদের খেলার স্থান এবং কবরের জন্যও আলাদা জায়গা রাখা হয়েছে।
মজবুত স্ক্যান্ডিনেভিয়ান লার্চ কাঠ দিয়ে কাঠের স্তম্ভগুলো তৈরি করা হয়েছে। ছাদে রয়েছে হিটিং সিস্টেম এবং বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা। অজুর পানির পুনর্ব্যবহার হবে বাগানে এবং টয়লেট পরিষ্কার করার কাজে। ছাদে রয়েছে সেডাম মোস নামের উদ্ভিদ, যা পোকামাকড় ও পাখিদের বসবাসের উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করে। রয়েছে স্বয়ংক্রিয় গরম পানির ব্যবস্থা। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে হিট পাম্পিং সিস্টেম। পুরো কমপ্লেক্সে আটটি বাক্সও রয়েছে, যা ব্রিটেনের বিপন্ন প্রজাতির পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল।
এই মসজিদ নির্মাণে ২৬০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়। এতে মুসলিম বিশ্বের বড় বড় ধনকুবেরসহ সাধারণ মুসলমানগণ অংশ নিয়েছেন। কেমব্রিজের সাধারণ লোকজন এই প্রকল্পের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও আর্থিক সহায়তা করলেও কিছু ডানপন্থী সংগঠন বিরোধিতা করেছিল। তবে তাদের বিরোধিতা ধোপে টেকেনি। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই এটি নির্মাণ করা হয়।
মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ মুরাদ জানান, শিয়া-সুন্নি বিরোধ এই মসজিদে গৌণ। সবাই এক কাতারে নামাজ পড়েন। এখানে সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্রবাদের কোনো স্থান নেই। ইমাম নির্বাচন করা হয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই, এটি এমন এক জায়গা হোক, যেখানে সব ধর্মের মানুষ একত্র হবে। কারণ এই মসজিদ শুধু কেমব্রিজের মুসলমানদের নয়, যেকোনো দেশের, যেকোনো ধর্মের, যেকোনো মানুষের প্রিয় ঠিকানা হবে।’
সূত্র: আরব নিউজ
সন্ধ্যাবেলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। মহানবী (সা.) সাহাবিদের এসব আমল করার উপদেশ দিতেন। এখানে কয়েকটি আমলের
১৪ ঘণ্টা আগেইবাদতের নিয়তে করা সব কাজই নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। আর নেক আমল মানুষের জীবনের প্রকৃত সম্পদ। এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে জান্নাত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারাই জান্নাতের অধিকারী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা বাকারা: ৮২)
২ দিন আগেভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
৩ দিন আগে