অনলাইন ডেস্ক
প্রশ্ন: বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তান কার দায়িত্ব থাকবে? বাবার, না মায়ের? এ ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তারিত জানতে চাই।
জান্নাতুল মাওয়া, ঢাকা
উত্তর: বিবাহবিচ্ছেদে নিরুৎসাহিত করে ইসলাম। তবে অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এমন তিক্ত হয়ে যায় যে দুজনের বিচ্ছেদ আবশ্যক হয়ে পড়ে। তখন সবচেয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে সন্তানেরা। তারা কোথায়, কীভাবে বেড়ে উঠবে ইত্যাদি বিষয়ে সুন্দর সমাধান দিয়েছে ইসলাম।
ইসলামের বিধান হলো, ছেলে সাত বছর হওয়া পর্যন্ত এবং মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত মায়ের কাছেই থাকবে। সাহাবি আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, এক নারী রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘আমার এই শিশুছেলেটি আমার কোলে থাকে, আমার দুধ পান করে। তার বাবা আমাকে তালাক দেওয়ার পর তাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইছেন।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘যত দিন না তুমি অন্যত্র বিয়ে করছ, এ ছেলেকে রাখার অধিকার তোমার।’ (আবু দাউদ)
হিদায়া গ্রন্থকার বলেন, ‘যখন বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাবে, তখন সন্তান রাখার অধিকার মায়ের—যত দিন সে নিজে নিজে খেতে পারবে না এবং পোশাক পরতে পারবে না।’ খাস্সাফ বলেন, ‘এর সময়সীমা হচ্ছে সাত বছর।’ ফতোয়ায়ে শামিতে বলা হয়েছে, ‘মেয়েশিশুকে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত মায়ের কাছে রাখতে হবে।’
তবে বিচ্ছেদের পর মা যদি সন্তান প্রতিপালনের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী না হন, তাহলে তাঁকে বাধ্য করা যাবে না। ফতোয়ায়ে শামিতে বলা হয়েছে, ‘সন্তান প্রতিপালনের অধিকারপ্রাপ্ত নারীকে এ কাজে বাধ্য করা যাবে না।’
আর মায়ের অনুপস্থিতিতে সন্তান প্রতিপালনের অধিকার পাবেন নানি। (আদ-দুররুল মুখতার) নানির পর দাদি, দাদির পর আপন বোন, এরপর বৈপিত্রেয় বোন, এরপর খালা, এরপর বৈমাত্রেয় বোন, এরপর ফুপু প্রতিপালনের অধিকার পাবেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে তাদের কাউকে বাধ্য করা যাবে না। (শরহু মুখতাসারিত তাহাবি)
তবে সন্তান যার কাছেই থাকুক, তার থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা, পড়াশোনা ও পোশাকপরিচ্ছদের খরচ বাবাকেই বহন করতে হবে এবং সন্তান যার কাছেই থাকুক, অপরজনকে সন্তানের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করার অধিকার দিতে হবে। (হিদায়া, ফতোয়ায়ে শামি)
ছেলে সাত বছর হলে এবং মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে বাবা সন্তান ফিরিয়ে আনার অধিকার পাবেন। বাবার অনুপস্থিতিতে দাদা, তাঁর অনুপস্থিতিতে চাচা এ অধিকার পাবেন। অবশ্য কোনো কোনো আলিম এ ক্ষেত্রে সন্তানের ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ সন্তানের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন। এরপর সন্তান যখন পুরোপুরি আত্মনির্ভরশীল হয়ে যাবে, তখন সে যার কাছে ইচ্ছা থাকতে পারবে। কেউ তাকে বাধ্য করতে পারবে না। তবে সে যদি বিপথে পা বাড়ায়, তখন অবশ্যই বাবা তাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার অধিকার রাখবেন।
(আল-ফিকহু আলাল মাজাহিবিল আরবাআহ)
স্বামী-স্ত্রীর একজন অমুসলিম হলে সন্তান কার দায়িত্ব থাকবে? আবু হুরায়রা (রা.)-এর এক হাদিস থেকে জানা যায়, এ ক্ষেত্রে সন্তানের ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এমন একটি ঘটনায় মহানবী (সা.) সন্তানকেই অভিভাবক বেছে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। (সুনানে নাসায়ি: ৩৫০০)
ইমাম মালেক (রহ.)-এর মতে, সন্তানের পরিচর্যার ক্ষেত্রে মায়ের অমুসলিম হওয়া বিবেচিত হবে না। তাই তাকে মায়ের কাছ থেকে কোনো কারণেই বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। কারণ নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মা ও তার সন্তানের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার ও তার প্রিয়জনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাবেন।’ (সুনানে তিরমিজি: ১২৮৩)
তবে এ ক্ষেত্রে আদালত মায়ের আশ্রয়ে ইসলামি রীতিনীতিতে পরিচর্যার শর্তারোপ করতে পারে।
উত্তর দিয়েছেন, ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
প্রশ্ন: বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তান কার দায়িত্ব থাকবে? বাবার, না মায়ের? এ ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তারিত জানতে চাই।
জান্নাতুল মাওয়া, ঢাকা
উত্তর: বিবাহবিচ্ছেদে নিরুৎসাহিত করে ইসলাম। তবে অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এমন তিক্ত হয়ে যায় যে দুজনের বিচ্ছেদ আবশ্যক হয়ে পড়ে। তখন সবচেয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে সন্তানেরা। তারা কোথায়, কীভাবে বেড়ে উঠবে ইত্যাদি বিষয়ে সুন্দর সমাধান দিয়েছে ইসলাম।
ইসলামের বিধান হলো, ছেলে সাত বছর হওয়া পর্যন্ত এবং মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত মায়ের কাছেই থাকবে। সাহাবি আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, এক নারী রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘আমার এই শিশুছেলেটি আমার কোলে থাকে, আমার দুধ পান করে। তার বাবা আমাকে তালাক দেওয়ার পর তাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইছেন।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘যত দিন না তুমি অন্যত্র বিয়ে করছ, এ ছেলেকে রাখার অধিকার তোমার।’ (আবু দাউদ)
হিদায়া গ্রন্থকার বলেন, ‘যখন বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাবে, তখন সন্তান রাখার অধিকার মায়ের—যত দিন সে নিজে নিজে খেতে পারবে না এবং পোশাক পরতে পারবে না।’ খাস্সাফ বলেন, ‘এর সময়সীমা হচ্ছে সাত বছর।’ ফতোয়ায়ে শামিতে বলা হয়েছে, ‘মেয়েশিশুকে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত মায়ের কাছে রাখতে হবে।’
তবে বিচ্ছেদের পর মা যদি সন্তান প্রতিপালনের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী না হন, তাহলে তাঁকে বাধ্য করা যাবে না। ফতোয়ায়ে শামিতে বলা হয়েছে, ‘সন্তান প্রতিপালনের অধিকারপ্রাপ্ত নারীকে এ কাজে বাধ্য করা যাবে না।’
আর মায়ের অনুপস্থিতিতে সন্তান প্রতিপালনের অধিকার পাবেন নানি। (আদ-দুররুল মুখতার) নানির পর দাদি, দাদির পর আপন বোন, এরপর বৈপিত্রেয় বোন, এরপর খালা, এরপর বৈমাত্রেয় বোন, এরপর ফুপু প্রতিপালনের অধিকার পাবেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে তাদের কাউকে বাধ্য করা যাবে না। (শরহু মুখতাসারিত তাহাবি)
তবে সন্তান যার কাছেই থাকুক, তার থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা, পড়াশোনা ও পোশাকপরিচ্ছদের খরচ বাবাকেই বহন করতে হবে এবং সন্তান যার কাছেই থাকুক, অপরজনকে সন্তানের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করার অধিকার দিতে হবে। (হিদায়া, ফতোয়ায়ে শামি)
ছেলে সাত বছর হলে এবং মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে বাবা সন্তান ফিরিয়ে আনার অধিকার পাবেন। বাবার অনুপস্থিতিতে দাদা, তাঁর অনুপস্থিতিতে চাচা এ অধিকার পাবেন। অবশ্য কোনো কোনো আলিম এ ক্ষেত্রে সন্তানের ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ সন্তানের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন। এরপর সন্তান যখন পুরোপুরি আত্মনির্ভরশীল হয়ে যাবে, তখন সে যার কাছে ইচ্ছা থাকতে পারবে। কেউ তাকে বাধ্য করতে পারবে না। তবে সে যদি বিপথে পা বাড়ায়, তখন অবশ্যই বাবা তাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার অধিকার রাখবেন।
(আল-ফিকহু আলাল মাজাহিবিল আরবাআহ)
স্বামী-স্ত্রীর একজন অমুসলিম হলে সন্তান কার দায়িত্ব থাকবে? আবু হুরায়রা (রা.)-এর এক হাদিস থেকে জানা যায়, এ ক্ষেত্রে সন্তানের ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এমন একটি ঘটনায় মহানবী (সা.) সন্তানকেই অভিভাবক বেছে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। (সুনানে নাসায়ি: ৩৫০০)
ইমাম মালেক (রহ.)-এর মতে, সন্তানের পরিচর্যার ক্ষেত্রে মায়ের অমুসলিম হওয়া বিবেচিত হবে না। তাই তাকে মায়ের কাছ থেকে কোনো কারণেই বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। কারণ নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মা ও তার সন্তানের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার ও তার প্রিয়জনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাবেন।’ (সুনানে তিরমিজি: ১২৮৩)
তবে এ ক্ষেত্রে আদালত মায়ের আশ্রয়ে ইসলামি রীতিনীতিতে পরিচর্যার শর্তারোপ করতে পারে।
উত্তর দিয়েছেন, ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
জুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
১১ ঘণ্টা আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
১১ ঘণ্টা আগেবিয়ে ইসলামি জীবনব্যবস্থার একটি মৌলিক অংশ। এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতি নিয়ে আসে। তবে বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিয়ে-পরবর্তী জীবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যক্তিকে সক্ষম করে।
১১ ঘণ্টা আগে