ইজাজুল হক, ঢাকা
আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর কিছুদিন পরই ঘটেছিল পৃথিবীতে মানবজাতির প্রথম খুনের ঘটনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সেই খুনের সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়েছেন।
হাবিল-কাবিলের দ্বন্দ্ব
হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর ঘরে কতজন সন্তানের জন্ম হয়েছিল, তা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। মুফাসসির ইবনে জারির (রহ.) বলেছেন, ‘হাওয়া (আ.) ২০ বার গর্ভধারণ করেন; প্রতিবারই যমজ সন্তান জন্ম দেন—একটি ছেলে একটি মেয়ে।’ আবার কেউ বলেছেন, ‘১২০ বার গর্ভধারণ করেন এবং ২৪০ জন সন্তান জন্ম দেন।’ (নবুওয়াতু আদম ওয়া রিসালাতুহু: পৃ.১১৫; মুজাজুত-তারিখিল ইসলামি: ২ / ১৩)
যেহেতু তখন পৃথিবীতে আদমসন্তান ছাড়া কোনো মানুষ ছিল না, তাই বংশবৃদ্ধির জন্য আল্লাহর নির্দেশে আদম (আ.) নিজের ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতেন। প্রতিবারই এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নিত। নিয়ম ছিল, একবারের ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে অন্যবারের মেয়ে ও ছেলেকে বিয়ে দেওয়া হতো। নিয়ম অনুযায়ী হাবিল-কাবিলের বিয়ের বিষয়ও সামনে আসে। কাবিল বড় ছিলেন এবং তাঁর যমজ বোনটি হাবিলের যমজ বোনের চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলেন। এ কারণে কাবিল তাঁর যমজ বোনকে হাবিলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
কোরবানির ঘটনা
উল্লিখিত সমস্যার সমাধান হিসেবে আদম (আ.) সিদ্ধান্ত দিলেন—তাঁরা উভয়ে আল্লাহর দরবারে কোরবানি পেশ করবেন। যার কোরবানি কবুল হবে, তিনি নিজের ইচ্ছা পূরণের অধিকার পাবেন। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী, সেকালে কোরবানি ও মানত কবুল হয়েছে কি না—তা বোঝা যেত। নিয়ম অনুযায়ী, মানত ও কোরবানির বস্তু কোনো উঁচু স্থানে রেখে আসতে হতো। সেটি আল্লাহ দরবারে কবুল হলে আসমান থেকে আগুন এসে বস্তুটি পুড়িয়ে দিত।
হাবিল পশু পালন এবং কাবিল কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিয়মান অনুযায়ী হাবিল নিজের পশুর পাল থেকে একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা আল্লাহর নামে কোরবানি দেন। আর কাবিল নিজের শস্যভাণ্ডার থেকে কিছু শস্য কোরবানির জন্য পেশ করেন। সেকালের কোরবানির নিয়ম অনুসারে অদৃশ্য থেকে আগুন এসে হাবিলের কোরবানির বস্তু পুড়িয়ে ফেলল। আর কাবিলের কোরবানির বস্তু যেমন রাখা হয়েছিল, তেমনই রয়ে গেল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তাদের যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্য জনের কোরবানি কবুল হলো না।’ (সুরা মায়েদা: ২৭)
পৃথিবীর প্রথম খুন
কোরবানি কবুল না হওয়ায় কাবিল অপমানিত হলেন এবং ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(একজন) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব।’ বিপরীতে হাবিল শান্ত ভাষায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং খুনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করলেন। হাবিল বললেন, ‘আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। আমাকে খুন করতে তুমি হাত বাড়ালেও তোমাকে খুন করতে আমি হাত বাড়াব না। নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং জাহান্নামি হও—এই তো আমি চাই; এটিই অনাচারীদের কর্মফল।’ (সুরা মায়েদা: ২৭-২৯)
এরপর কাবিল আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। হাবিলের উপদেশ ও সতর্কবার্তা কাবিলের মনে তীরের মতো বিঁধতে লাগল। তিনি ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন এবং ছোট ভাই হাবিলকে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তার মন তাকে ভাইকে খুন করতে প্ররোচনা দিল এবং সে (কাবিল) তাকে (হাবিলকে) হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩০)
কাকের কাছে শিক্ষা
ভাইকে খুন করে কাবিল অস্থির হয়ে পড়লেন। এখন এই মৃতদেহ নিয়ে তিনি কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তখনো পৃথিবীর কোনো আদমসন্তান মারা যাননি। হজরত আদম (আ.) মৃতদেহ সম্পর্কে কোনো বিধানের কথাও বলেননি। সেই দিশেহারা অবস্থায় কাবিল খেয়াল করলেন, একটি কাক মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিচ্ছে। কাবিল তা দেখে নিজের অযোগ্যতার জন্য আফসোস করলেন এবং মনে মনে বললেন, আমি এই তুচ্ছ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট হলাম। নিজের এই অপরাধ গোপন করার যোগ্যতাও আমার নেই। এরপর সেভাবেই ভাইয়ের মৃতদেহ মাটিচাপা দিলেন। (তাবারি, কাসাসুল কোরআন)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কীভাবে গোপন করা যায়, তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল। সে বলল, হায়! আমি কি এই কাকটির মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি! এরপর সে লজ্জিত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩১)
মানুষ খুনের অপরাধ
মানুষ হত্যা ইসলামে অনেক বড় অপরাধ। হাবিল-কাবিলের এই ঘটনা বর্ণনার পরে আল্লাহ তাআলা মানুষ হত্যা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি বিধান দিলাম, যে ব্যক্তি মানুষ খুন করবে বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজের শাস্তি ছাড়া কাউকে হত্যা করবে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)
এই বিধান শুধু বনি ইসরাইলের জন্য নয়; ইসলামেও তা কার্যকর। তাবিই সুলাইমান ইবনে রবি বলেন, ‘আমি হাসান বসরিকে জিজ্ঞেস করলাম, বনি ইসরাইল যেমন এই বিধানের আওতাভুক্ত, তেমনি আমরাও কি আওতাভুক্ত?’ জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম, বনি ইসরাইলের রক্ত আল্লাহর কাছে আমাদের রক্তের চেয়ে কোনোভাবেই বেশি সম্মানিত নয়।’ (ইবনে কাসির)
পৃথিবীতে কোনো নতুন গুনাহের সূচনা করলে পরে যতবারই সেই গুনাহ সংঘটিত হবে, ততবারই সেই সূচনাকারীর জন্য গুনাহের একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তখন তার পাপের একাংশ আদমের (কোরআনে বর্ণিত দুই সন্তানের) প্রথম সন্তানের ওপর বর্তায়।’ (বুখারি: ৬৮৬৭)
আরও পড়ুন:
আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কথা জানালে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আপনি কি সেখানে বিশৃঙ্খলা করবে এবং খুনোখুনিতে জড়াবে এমন জাতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন?’ (সুরা বাকারা: ৩০) এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীতে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাবে; অর্থাৎ মানুষের মধ্যে অনেক ভালো গুনের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও থাকবে। আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর কিছুদিন পরই ঘটেছিল পৃথিবীতে মানবজাতির প্রথম খুনের ঘটনা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সেই খুনের সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়েছেন।
হাবিল-কাবিলের দ্বন্দ্ব
হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর ঘরে কতজন সন্তানের জন্ম হয়েছিল, তা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। মুফাসসির ইবনে জারির (রহ.) বলেছেন, ‘হাওয়া (আ.) ২০ বার গর্ভধারণ করেন; প্রতিবারই যমজ সন্তান জন্ম দেন—একটি ছেলে একটি মেয়ে।’ আবার কেউ বলেছেন, ‘১২০ বার গর্ভধারণ করেন এবং ২৪০ জন সন্তান জন্ম দেন।’ (নবুওয়াতু আদম ওয়া রিসালাতুহু: পৃ.১১৫; মুজাজুত-তারিখিল ইসলামি: ২ / ১৩)
যেহেতু তখন পৃথিবীতে আদমসন্তান ছাড়া কোনো মানুষ ছিল না, তাই বংশবৃদ্ধির জন্য আল্লাহর নির্দেশে আদম (আ.) নিজের ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতেন। প্রতিবারই এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নিত। নিয়ম ছিল, একবারের ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে অন্যবারের মেয়ে ও ছেলেকে বিয়ে দেওয়া হতো। নিয়ম অনুযায়ী হাবিল-কাবিলের বিয়ের বিষয়ও সামনে আসে। কাবিল বড় ছিলেন এবং তাঁর যমজ বোনটি হাবিলের যমজ বোনের চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলেন। এ কারণে কাবিল তাঁর যমজ বোনকে হাবিলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
কোরবানির ঘটনা
উল্লিখিত সমস্যার সমাধান হিসেবে আদম (আ.) সিদ্ধান্ত দিলেন—তাঁরা উভয়ে আল্লাহর দরবারে কোরবানি পেশ করবেন। যার কোরবানি কবুল হবে, তিনি নিজের ইচ্ছা পূরণের অধিকার পাবেন। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী, সেকালে কোরবানি ও মানত কবুল হয়েছে কি না—তা বোঝা যেত। নিয়ম অনুযায়ী, মানত ও কোরবানির বস্তু কোনো উঁচু স্থানে রেখে আসতে হতো। সেটি আল্লাহ দরবারে কবুল হলে আসমান থেকে আগুন এসে বস্তুটি পুড়িয়ে দিত।
হাবিল পশু পালন এবং কাবিল কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিয়মান অনুযায়ী হাবিল নিজের পশুর পাল থেকে একটি হৃষ্টপুষ্ট দুম্বা আল্লাহর নামে কোরবানি দেন। আর কাবিল নিজের শস্যভাণ্ডার থেকে কিছু শস্য কোরবানির জন্য পেশ করেন। সেকালের কোরবানির নিয়ম অনুসারে অদৃশ্য থেকে আগুন এসে হাবিলের কোরবানির বস্তু পুড়িয়ে ফেলল। আর কাবিলের কোরবানির বস্তু যেমন রাখা হয়েছিল, তেমনই রয়ে গেল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তাদের যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্য জনের কোরবানি কবুল হলো না।’ (সুরা মায়েদা: ২৭)
পৃথিবীর প্রথম খুন
কোরবানি কবুল না হওয়ায় কাবিল অপমানিত হলেন এবং ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(একজন) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব।’ বিপরীতে হাবিল শান্ত ভাষায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং খুনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করলেন। হাবিল বললেন, ‘আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। আমাকে খুন করতে তুমি হাত বাড়ালেও তোমাকে খুন করতে আমি হাত বাড়াব না। নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি। তুমি আমার ও তোমার পাপের ভার বহন করো এবং জাহান্নামি হও—এই তো আমি চাই; এটিই অনাচারীদের কর্মফল।’ (সুরা মায়েদা: ২৭-২৯)
এরপর কাবিল আর ধৈর্য ধরতে পারলেন না। হাবিলের উপদেশ ও সতর্কবার্তা কাবিলের মনে তীরের মতো বিঁধতে লাগল। তিনি ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন এবং ছোট ভাই হাবিলকে নির্মমভাবে হত্যা করলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তার মন তাকে ভাইকে খুন করতে প্ররোচনা দিল এবং সে (কাবিল) তাকে (হাবিলকে) হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩০)
কাকের কাছে শিক্ষা
ভাইকে খুন করে কাবিল অস্থির হয়ে পড়লেন। এখন এই মৃতদেহ নিয়ে তিনি কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তখনো পৃথিবীর কোনো আদমসন্তান মারা যাননি। হজরত আদম (আ.) মৃতদেহ সম্পর্কে কোনো বিধানের কথাও বলেননি। সেই দিশেহারা অবস্থায় কাবিল খেয়াল করলেন, একটি কাক মাটিতে গর্ত করে আরেকটি মৃত কাককে মাটিচাপা দিচ্ছে। কাবিল তা দেখে নিজের অযোগ্যতার জন্য আফসোস করলেন এবং মনে মনে বললেন, আমি এই তুচ্ছ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট হলাম। নিজের এই অপরাধ গোপন করার যোগ্যতাও আমার নেই। এরপর সেভাবেই ভাইয়ের মৃতদেহ মাটিচাপা দিলেন। (তাবারি, কাসাসুল কোরআন)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কীভাবে গোপন করা যায়, তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল। সে বলল, হায়! আমি কি এই কাকটির মতোও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি! এরপর সে লজ্জিত হলো।’ (সুরা মায়েদা: ৩১)
মানুষ খুনের অপরাধ
মানুষ হত্যা ইসলামে অনেক বড় অপরাধ। হাবিল-কাবিলের এই ঘটনা বর্ণনার পরে আল্লাহ তাআলা মানুষ হত্যা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এই কারণেই বনি ইসরাইলের প্রতি বিধান দিলাম, যে ব্যক্তি মানুষ খুন করবে বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজের শাস্তি ছাড়া কাউকে হত্যা করবে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)
এই বিধান শুধু বনি ইসরাইলের জন্য নয়; ইসলামেও তা কার্যকর। তাবিই সুলাইমান ইবনে রবি বলেন, ‘আমি হাসান বসরিকে জিজ্ঞেস করলাম, বনি ইসরাইল যেমন এই বিধানের আওতাভুক্ত, তেমনি আমরাও কি আওতাভুক্ত?’ জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম, বনি ইসরাইলের রক্ত আল্লাহর কাছে আমাদের রক্তের চেয়ে কোনোভাবেই বেশি সম্মানিত নয়।’ (ইবনে কাসির)
পৃথিবীতে কোনো নতুন গুনাহের সূচনা করলে পরে যতবারই সেই গুনাহ সংঘটিত হবে, ততবারই সেই সূচনাকারীর জন্য গুনাহের একটি অংশ বরাদ্দ থাকবে। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তখন তার পাপের একাংশ আদমের (কোরআনে বর্ণিত দুই সন্তানের) প্রথম সন্তানের ওপর বর্তায়।’ (বুখারি: ৬৮৬৭)
আরও পড়ুন:
সন্ধ্যাবেলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। মহানবী (সা.) সাহাবিদের এসব আমল করার উপদেশ দিতেন। এখানে কয়েকটি আমলের
১৬ ঘণ্টা আগেইবাদতের নিয়তে করা সব কাজই নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। আর নেক আমল মানুষের জীবনের প্রকৃত সম্পদ। এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে জান্নাত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারাই জান্নাতের অধিকারী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা বাকারা: ৮২)
২ দিন আগেভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
৩ দিন আগে