বিসিএস ডাক ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৪, ০৯: ১০

পোস্টাল ক্যাডার বা ডাক ক্যাডার দেশের প্রাচীন ক্যাডার সার্ভিসগুলোর একটি। বিসিএস চাকরিপ্রার্থীরা অনেকেই ডাক ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত জানেন না। ডাক ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা, অসুবিধা ও প্রমোশন নিয়ে ৪০তম বিসিএস ডাক ক্যাডার শুভ্র সূত্র ধরের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

সময়ের সঙ্গে ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত চিঠির পরিমাণ কমে গেলেও দাপ্তরিক চিঠিপত্র ও পার্সেল সেবা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মেইল, পার্সেল, ডাক জীবনবিমা, ইএমটিএস—এসব সার্ভিস আধুনিকায়নের মাধ্যমে যুগোপযোগী সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

পদায়ন
শুরুতে সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল হিসেবে পদায়ন হয়। দেশের ২৩টি জেলার (আগের বৃহত্তর জেলাগুলোর সঙ্গে নতুন কিছু জেলা) প্রধান ডাকঘরে পোস্টিং হবে।

এ ছাড়া হেড অফিসে (ডাক ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা) শাখা কর্মকর্তা হিসেবে ২৭টি পদ আছে। আর ৪টি সার্কেলে (ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম) এপিএস হিসেবে পোস্টিং হবে। পোস্টাল একাডেমি, রাজশাহীতেও রিসার্চ অফিসার হিসেবে একটি পদ আছে। এ ছাড়া ডাক জীবনবিমায় সহকারী জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে বেশ কয়েক জেলায় পোস্ট আছে। মোটকথা, এখানে কখনো উপজেলায় থাকা লাগবে না, এমনকি নিজের জেলায় পোস্টিং পাওয়া যায় (যদি নিজের জেলা ওই ২৩টি জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়), কেউ ঢাকায় থাকতে চাইলে সেখানেও পোস্টিং পাওয়া সহজ। এখানে ক্যাডার সংখ্যা কম হওয়ায় সিনিয়র স্যারদের সঙ্গে খুব আন্তরিক সম্পর্ক থাকে সবার। 

প্রমোশন
প্রথম প্রমোশন অনেকটা নির্ভর করে ব্যাচ ছোট না বড়, আগে কোনো বড় ব্যাচ আছে কি না, এসবের ওপর। তবে নতুন ব্যাচগুলোর পাঁচ-ছয় বছরেই প্রমোশন হবে এমনই শুনি।

সুযোগ-সুবিধা 
■ শুরুতেই জেলা শহরে অথবা ঢাকায় পোস্টিং এই ক্যাডারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক। 
■ শুরুতেই অফিস প্রধান। ১০০-১৫০ জন কর্মচারী নিয়ে একটি প্রধান ডাকঘরের প্রধান হিসেবে চাকরি শুরু। অফিস প্রধান হিসেবে            শুরু থেকেই প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করা যায়।
■ অফিসের ওপরেই বাসা। পরিবার বা বাচ্চাকে যথেষ্ট সময় দিয়েই চাকরি করা যায়।
■ শুরুতেই কিছু জেলায় গাড়ির সুবিধা আছে। আর প্রথম প্রমোশনের পর ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেলদের পাজেরো স্পোর্টস আছে।
■ থাইল্যান্ড ও ইন্ডিয়ায় ট্রেনিং। 
■ এই ক্যাডারের গ্রেড ১ পোস্টও এই ক্যাডার থেকেই হয়। অন্য ক্যাডারের হস্তক্ষেপ নেই। কাজেই বয়স থাকলে গ্রেড ১-এ অনায়াসেই       যেতে পারবেন। তা না হলেও গ্রেড ৩ পর্যন্ত সবাই নিশ্চিত যাবে।
■ ঢাকায় মতিঝিল পোস্টাল কোয়ার্টারে পর্যাপ্ত আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা। এ ছাড়া উত্তরাসহ আরও বেশ কিছু জায়গায় পোস্টাল কোয়ার্টার রয়েছে।
■ শতভাগ সৎ থেকে কাজ করার সুযোগ। 
■ সারা দেশে প্রায় ১০ হাজার পোস্ট অফিস। দেশের যেখানেই যাওয়া হোক না কেন পোস্ট অফিসের পরিচয় দিলেই নিজের                       ডিপার্টমেন্টের লোক পাওয়া যাবে।
■ এখানে প্রথমে ট্রেনিং হবে দেড় বছর। এই দেড় বছরে ২০টির ওপর অফিসে অ্যাটাচমেন্টে রাখে। চাইলে পুরো দেশ ঘোরা যায় এ সময়টায়। আর থাকার নিরাপদ জায়গা তো আছেই।

অসুবিধা
■ সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল—এই পদের নাম প্রবীণদের পরিচিত হলেও নতুনদের মধ্যে একটু কম। তবে বর্তমানে পরিচিতি            বাড়ছে।
■ প্রথম প্রমোশনে একটু বিলম্ব হতে পারে (সামনে যদি বড় ব্যাচ থাকে)।
■ বেতন ছাড়া খুব বেশি বাড়তি আয়ের সুযোগ নেই।

কাজেই নিরিবিলি শহুরে জীবন পছন্দ হলে এই ক্যাডারকে পছন্দের তালিকায় রাখাই যায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত