অর্ণব সান্যাল, ঢাকা
‘সময় ও নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না।’ এই ক্লিশে আপ্তবাক্যটি আমরা শৈশব থেকেই শিখতে থাকি। কখনো রচনা, কখনো ভাবসম্প্রসারণ করতে গিয়ে। তবে তাতে আখেরে খুব বেশি লাভ হয় না। বাল্যকালে শেখা হাজারো বুলির মতো এটিও একসময় স্রেফ মুখস্থই থেকে যায়। মাথায় থাকে এক, আমরা করি আরেক!
কীভাবে? যেমন ধরুন, আপনি জানেন সময় আপনার জন্য অপেক্ষা করবে না। তবু আমরা সেই নিয়ত বয়ে চলা সময়কেই ‘মূলধন’ হিসেবে বেছে নিই জীবনে। চেষ্টা করি ঘড়ি ধরে কাজ করতে, সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে। অথচ এই সময়ের ঘড়ি একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে চলে। অর্থাৎ, সময় বয়ে চলবেই। সেই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যখন আমরা কাজ করতে যাই, তখন মাঝে মাঝেই পা হড়কায়। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। কর্মক্ষেত্রে যেমন রব ওঠে, ‘এত দেরি করছেন কেন?’, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনে প্রিয় ব্যক্তিটি হয়তো বলে ওঠেন, ‘তোমার কোনো কাজ সময়ে শেষ হলো না’!
প্রশ্ন হলো, আসল উদ্দেশ্য কোনটি? কাজ শেষ করা, তাই তো? সেই কাজটি যদি ঠিকঠাক শেষ হয়, তবেই সফলতা ধরা দেয় হাতে। হ্যাঁ, অবশ্যই কোনো কোনো কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারলেই কেল্লা ফতে! কিন্তু সেটি সমাধা করার জন্য ঘড়ি ধরে সময় ব্যবস্থাপনা করা ভালো নাকি অন্য কিছু?
উত্তর হলো, সময় ব্যবস্থাপনার চেয়ে এখন উন্নত দেশগুলোতে বরং কর্মশক্তির ব্যবস্থাপনাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সময়ের বয়ে চলার ওপর আমাদের কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। চাইলেই ঘড়ির মিনিট বা সেকেন্ডের কাঁটার এগিয়ে চলা আমরা কেউ থামাতে পারব না। রসিক কেউ বলতেই পারেন, ব্যাটারি খুলে রাখলেই তো হয়। তবে পরে আবার ব্যাটারি লাগালে কিন্তু চাবি ঘুরিয়ে ঘড়ির কাঁটাকে এগিয়ে নিতে হবে। সুতরাং, নিয়ন্ত্রণহীন সময়কে বেঁধে রাখার উপায় আমাদের হাতে নেই। নেই কোনো বহুল জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’-এর মতো কোনো টাইম মেশিন। কিন্তু চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে আমাদের কাজ করার শক্তিকে। বিজ্ঞানই বলছে, শক্তি অবিনাশী, এর রূপ পরিবর্তন করা যায়, এক শক্তিকে অন্যতে রূপান্তর করা যায়। তা আমার আপনার কর্মশক্তিই-বা কী দোষ করল? আর এই চিন্তা থেকেই উন্নত দেশগুলোতে এখন কর্মশক্তি ব্যবস্থাপনার দিকে সবাই মনোযোগ দিচ্ছে বেশি। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন সময়ের কাজ সময়ে শেষ করা যাচ্ছে, আবার কাজও হচ্ছে ফাটাফাটি।
অবধারিতভাবেই উন্নত দেশের অফিসগুলোতে এ নিয়ে নিরীক্ষা হচ্ছে বেশি। কারণ, কর্মীর উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক বছর ধরে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে কর্মীর কর্মশক্তি ব্যবস্থাপনার দিকে। এ-সংক্রান্ত কাজের জন্য কিছু পেশাদার প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান হলো যুক্তরাষ্ট্রের দ্য এনার্জি প্রজেক্ট। এর কাজই হলো বড় বড় কোম্পানির কর্মীদের কর্মশক্তি ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করা। মাইক্রোসফট, কোকা-কোলার মতো কোম্পানির হয়ে কাজ করে এই দ্য এনার্জি প্রজেক্ট।
এ প্রক্রিয়ায় যেকোনো মানুষের কর্মশক্তির উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় চারটি বিষয়কে। এগুলো হলো দেহ, আবেগ, মন ও উদ্দীপনা।
এই চার থেকেই মানুষের কর্মশক্তিকে নানা মাত্রা দেওয়া যায়। আবার এসবে গন্ডগোল হলে শক্তিতেও আসে ভাটার টান। যদি কেউ শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকে, তবে তার পক্ষে পূর্ণশক্তিতে কাজ করাই সম্ভব হয় না। আবার নেতিবাচক আবেগ যেকোনো মানুষকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিতে পারে এবং তার কুপ্রভাব পড়তে পারে কাজেও। একই অবস্থা মন ও উদ্দীপনার ক্ষেত্রেও। অর্থাৎ, এসব যদি ঠিক থাকে, তবে কাজের গতিও থাকবে ধুন্ধুমার।
কর্মশক্তির প্রবাহ গতিশীল রাখতে তাহলে কী কী করা যায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুতেই নিজেদের জীবনের রুটিন ঠিক করতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে কাজের চাপে মনকে চিড়েচ্যাপ্টা করে ফেলা যাবে না। অফিস মানেই শুধু কাজ আর কাজ, সেটি মনে করার কোনো কারণ নেই। অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিতে হবে বিরতি। ধরুন, একটি কঠিন ফাইল দেখার পর কিছুটা বিরতি নিলেন সবকিছু থেকে, একটু আলাদা হয়ে খেয়ে নিলেন এক কাপ ধোঁয়া-ওঠা গরম চা। আবার চা খেতে খেতে কাজের ভাবনাতেই ডুবে থাকবেন না যেন! বরং ওই সময়টা পুরোপুরি নিজেকে সুসংগঠিত করার কাজে লাগাতে হবে, প্রয়োজনে প্রিয়জনদের সঙ্গে ফোনালাপও হতে পারে।
কাজের চাপে আমরা অনেকেই হয়তো পরিবারকে সময় দিতে পারি না ঠিকমতো। তবে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে কাটানো সময় সংক্ষিপ্ত করা প্রবল কাজের চাপ আর দিতে চায় না। দেরিতে হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বুঝতে শিখছে, এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। বরং উন্নত প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বিনিয়োগ করতে চায় কর্মীর ভালো থাকায়। কারণ, একজন ব্যক্তি যখন মানসিকভাবে সুখী থাকে, তখনই একজনের কর্মস্পৃহা ফের শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। আর সেটি সম্ভব হলেই কাজ হয় ত্বরিত গতিতে। আর কাজ যত দ্রুত হবে, অর্থের সমাগমও তত বাড়বে।
যদিও সব প্রতিষ্ঠানই যে নিজেদের ভালোটা বুঝতে পারছে, তেমনটা নয়। বাংলাদেশের মতো দেশে সেই সংস্কৃতি পরিপূর্ণভাবে নির্মাণ হওয়াও সময়সাপেক্ষ বিষয়। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুরু কিছুটা করাই যায়। কারণ, এতে যে নিজেরই লাভ বেশি! যেমন, আমরা চাইলেই অহেতুক শক্তি ক্ষয়শীল কাজ কমিয়ে দিতে পারি, নিতে পারি নানা ধরনের গ্যাজেটের সাহায্য। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পাম্প দিয়ে বাসাবাড়িতে পানি তোলার বিষয়টি। একটা সময় ছিল যখন টিউবওয়েল দিয়ে আমরা পানি সংগ্রহ করতাম। কিন্তু তাতে পাম্পের লাইন লাগিয়ে পুরো কাজটাই সহজ করে ফেলা গেছে। একইভাবে যদি জামাকাপড় ধুতে আপনার বিরক্ত লাগে, তবে সাশ্রয়ী ওয়াশিং মেশিন কিনেই ফেলা যায়। তাতে একদিকে যেমন বিরক্তিকর কাজ থেকে রেহাই মেলে, তেমনি বেঁচে যাওয়া কর্মশক্তি লাগানো যায় অন্য কোনো প্রয়োজনীয় কাজে। এভাবে ‘করবেন না’—এমন কাজগুলোর তালিকাও করে ফেলতে পারেন। এ ছাড়া যেকোনো কাজ শেষ হলে নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে পুরস্কার দেওয়ার রেওয়াজও চালু করা যায়। এতে করে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাবে। এই প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক মনোভাব বাড়তে পারে, কমতে পারে ক্লান্তি।
ঢের আলোচনা হলো। এবার বরং চলুন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কারের পথে নেমে পড়ি। শুরুতে পথ একটু বন্ধুর হবে হয়তো, কোনো নতুনে আমরা একটু অস্বস্তিতে থাকি না, বলুন? তবে ক্ষণিকের অস্বস্তিতে যদি দীর্ঘ মেয়াদে স্বস্তি মেলে, ক্ষতি কী!
তথ্যসূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ, বিবিসি, উইফোরাম ডট অরগ, মিডিয়াম ডট কম ও ফোর্বস
‘সময় ও নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না।’ এই ক্লিশে আপ্তবাক্যটি আমরা শৈশব থেকেই শিখতে থাকি। কখনো রচনা, কখনো ভাবসম্প্রসারণ করতে গিয়ে। তবে তাতে আখেরে খুব বেশি লাভ হয় না। বাল্যকালে শেখা হাজারো বুলির মতো এটিও একসময় স্রেফ মুখস্থই থেকে যায়। মাথায় থাকে এক, আমরা করি আরেক!
কীভাবে? যেমন ধরুন, আপনি জানেন সময় আপনার জন্য অপেক্ষা করবে না। তবু আমরা সেই নিয়ত বয়ে চলা সময়কেই ‘মূলধন’ হিসেবে বেছে নিই জীবনে। চেষ্টা করি ঘড়ি ধরে কাজ করতে, সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে। অথচ এই সময়ের ঘড়ি একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে চলে। অর্থাৎ, সময় বয়ে চলবেই। সেই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যখন আমরা কাজ করতে যাই, তখন মাঝে মাঝেই পা হড়কায়। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। কর্মক্ষেত্রে যেমন রব ওঠে, ‘এত দেরি করছেন কেন?’, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনে প্রিয় ব্যক্তিটি হয়তো বলে ওঠেন, ‘তোমার কোনো কাজ সময়ে শেষ হলো না’!
প্রশ্ন হলো, আসল উদ্দেশ্য কোনটি? কাজ শেষ করা, তাই তো? সেই কাজটি যদি ঠিকঠাক শেষ হয়, তবেই সফলতা ধরা দেয় হাতে। হ্যাঁ, অবশ্যই কোনো কোনো কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারলেই কেল্লা ফতে! কিন্তু সেটি সমাধা করার জন্য ঘড়ি ধরে সময় ব্যবস্থাপনা করা ভালো নাকি অন্য কিছু?
উত্তর হলো, সময় ব্যবস্থাপনার চেয়ে এখন উন্নত দেশগুলোতে বরং কর্মশক্তির ব্যবস্থাপনাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সময়ের বয়ে চলার ওপর আমাদের কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। চাইলেই ঘড়ির মিনিট বা সেকেন্ডের কাঁটার এগিয়ে চলা আমরা কেউ থামাতে পারব না। রসিক কেউ বলতেই পারেন, ব্যাটারি খুলে রাখলেই তো হয়। তবে পরে আবার ব্যাটারি লাগালে কিন্তু চাবি ঘুরিয়ে ঘড়ির কাঁটাকে এগিয়ে নিতে হবে। সুতরাং, নিয়ন্ত্রণহীন সময়কে বেঁধে রাখার উপায় আমাদের হাতে নেই। নেই কোনো বহুল জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’-এর মতো কোনো টাইম মেশিন। কিন্তু চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে আমাদের কাজ করার শক্তিকে। বিজ্ঞানই বলছে, শক্তি অবিনাশী, এর রূপ পরিবর্তন করা যায়, এক শক্তিকে অন্যতে রূপান্তর করা যায়। তা আমার আপনার কর্মশক্তিই-বা কী দোষ করল? আর এই চিন্তা থেকেই উন্নত দেশগুলোতে এখন কর্মশক্তি ব্যবস্থাপনার দিকে সবাই মনোযোগ দিচ্ছে বেশি। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন সময়ের কাজ সময়ে শেষ করা যাচ্ছে, আবার কাজও হচ্ছে ফাটাফাটি।
অবধারিতভাবেই উন্নত দেশের অফিসগুলোতে এ নিয়ে নিরীক্ষা হচ্ছে বেশি। কারণ, কর্মীর উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক বছর ধরে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে কর্মীর কর্মশক্তি ব্যবস্থাপনার দিকে। এ-সংক্রান্ত কাজের জন্য কিছু পেশাদার প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান হলো যুক্তরাষ্ট্রের দ্য এনার্জি প্রজেক্ট। এর কাজই হলো বড় বড় কোম্পানির কর্মীদের কর্মশক্তি ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করা। মাইক্রোসফট, কোকা-কোলার মতো কোম্পানির হয়ে কাজ করে এই দ্য এনার্জি প্রজেক্ট।
এ প্রক্রিয়ায় যেকোনো মানুষের কর্মশক্তির উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় চারটি বিষয়কে। এগুলো হলো দেহ, আবেগ, মন ও উদ্দীপনা।
এই চার থেকেই মানুষের কর্মশক্তিকে নানা মাত্রা দেওয়া যায়। আবার এসবে গন্ডগোল হলে শক্তিতেও আসে ভাটার টান। যদি কেউ শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকে, তবে তার পক্ষে পূর্ণশক্তিতে কাজ করাই সম্ভব হয় না। আবার নেতিবাচক আবেগ যেকোনো মানুষকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিতে পারে এবং তার কুপ্রভাব পড়তে পারে কাজেও। একই অবস্থা মন ও উদ্দীপনার ক্ষেত্রেও। অর্থাৎ, এসব যদি ঠিক থাকে, তবে কাজের গতিও থাকবে ধুন্ধুমার।
কর্মশক্তির প্রবাহ গতিশীল রাখতে তাহলে কী কী করা যায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুতেই নিজেদের জীবনের রুটিন ঠিক করতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে কাজের চাপে মনকে চিড়েচ্যাপ্টা করে ফেলা যাবে না। অফিস মানেই শুধু কাজ আর কাজ, সেটি মনে করার কোনো কারণ নেই। অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিতে হবে বিরতি। ধরুন, একটি কঠিন ফাইল দেখার পর কিছুটা বিরতি নিলেন সবকিছু থেকে, একটু আলাদা হয়ে খেয়ে নিলেন এক কাপ ধোঁয়া-ওঠা গরম চা। আবার চা খেতে খেতে কাজের ভাবনাতেই ডুবে থাকবেন না যেন! বরং ওই সময়টা পুরোপুরি নিজেকে সুসংগঠিত করার কাজে লাগাতে হবে, প্রয়োজনে প্রিয়জনদের সঙ্গে ফোনালাপও হতে পারে।
কাজের চাপে আমরা অনেকেই হয়তো পরিবারকে সময় দিতে পারি না ঠিকমতো। তবে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে কাটানো সময় সংক্ষিপ্ত করা প্রবল কাজের চাপ আর দিতে চায় না। দেরিতে হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বুঝতে শিখছে, এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। বরং উন্নত প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বিনিয়োগ করতে চায় কর্মীর ভালো থাকায়। কারণ, একজন ব্যক্তি যখন মানসিকভাবে সুখী থাকে, তখনই একজনের কর্মস্পৃহা ফের শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। আর সেটি সম্ভব হলেই কাজ হয় ত্বরিত গতিতে। আর কাজ যত দ্রুত হবে, অর্থের সমাগমও তত বাড়বে।
যদিও সব প্রতিষ্ঠানই যে নিজেদের ভালোটা বুঝতে পারছে, তেমনটা নয়। বাংলাদেশের মতো দেশে সেই সংস্কৃতি পরিপূর্ণভাবে নির্মাণ হওয়াও সময়সাপেক্ষ বিষয়। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুরু কিছুটা করাই যায়। কারণ, এতে যে নিজেরই লাভ বেশি! যেমন, আমরা চাইলেই অহেতুক শক্তি ক্ষয়শীল কাজ কমিয়ে দিতে পারি, নিতে পারি নানা ধরনের গ্যাজেটের সাহায্য। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পাম্প দিয়ে বাসাবাড়িতে পানি তোলার বিষয়টি। একটা সময় ছিল যখন টিউবওয়েল দিয়ে আমরা পানি সংগ্রহ করতাম। কিন্তু তাতে পাম্পের লাইন লাগিয়ে পুরো কাজটাই সহজ করে ফেলা গেছে। একইভাবে যদি জামাকাপড় ধুতে আপনার বিরক্ত লাগে, তবে সাশ্রয়ী ওয়াশিং মেশিন কিনেই ফেলা যায়। তাতে একদিকে যেমন বিরক্তিকর কাজ থেকে রেহাই মেলে, তেমনি বেঁচে যাওয়া কর্মশক্তি লাগানো যায় অন্য কোনো প্রয়োজনীয় কাজে। এভাবে ‘করবেন না’—এমন কাজগুলোর তালিকাও করে ফেলতে পারেন। এ ছাড়া যেকোনো কাজ শেষ হলে নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে পুরস্কার দেওয়ার রেওয়াজও চালু করা যায়। এতে করে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাবে। এই প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক মনোভাব বাড়তে পারে, কমতে পারে ক্লান্তি।
ঢের আলোচনা হলো। এবার বরং চলুন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কারের পথে নেমে পড়ি। শুরুতে পথ একটু বন্ধুর হবে হয়তো, কোনো নতুনে আমরা একটু অস্বস্তিতে থাকি না, বলুন? তবে ক্ষণিকের অস্বস্তিতে যদি দীর্ঘ মেয়াদে স্বস্তি মেলে, ক্ষতি কী!
তথ্যসূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ, বিবিসি, উইফোরাম ডট অরগ, মিডিয়াম ডট কম ও ফোর্বস
খাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
১৬ ঘণ্টা আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
১৬ ঘণ্টা আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
১৬ ঘণ্টা আগে‘প্রসেসেস’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাতের মাড় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি হজমযোগ্য স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ওজন কমাতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে