আমিনুল ইসলাম নাবিল
‘জাতে আমি ঢাকাইয়া কইতে আমার সিনা টান’—শিল্পী হায়দার হোসেনের বিখ্যাত এই গান পুরোনো হওয়ার নয়। গানটি ঢাকাইয়াদের অনেক মহব্বতের। বাহান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির এই শহরের পরতে পরতে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য বইপুস্তক কিংবা দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে গল্প শুনে জানা যায় কিন্তু যে জিনিসটা জানা যায় না বা পরিমাপ করা যায় না, সেটি হচ্ছে ‘ভালোবাসা’। এই পুরোনো শহরেই জড়িয়ে আছে আমাদের প্রেম-ভালোবাসার অনেক গল্প।
সেসব কথা থাক। অনেক পাওয়ার মাঝেও আমাদের ঢাকাইয়াদের একটা জিনিসের ভীষণ অভাব। সেটি হচ্ছে ‘অক্সিজেন’। অক্সিজেনের খোঁজে আমরা সব সময়ই চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি। সুযোগ পেলেই দৌড়। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকেই এবার আমরা ৬ ঢাকাইয়া মিলে ট্যুর দিই কুয়াকাটায়। সেটি নিয়েই মূলত এই লেখা...
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর কারণ ছিল দুটো। এক. পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ছোট ভাই নাইমের বাসায় দাওয়াত আর দুই. ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা বিলাসী লঞ্চে ভ্রমণ।
সারা দিন অফিস শেষে রাত ৯টার সুন্দরবন-১৬ লঞ্চে সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে আমরা রওনা হই। একদিকে অনেক দিন পর ট্যুর, আরেকদিকে এমন জাঁকালো আরামদায়ক লঞ্চ রীতিমতো স্বস্তি ও প্রশান্তি দিয়েছে। দুই কেবিনে সারা রাত এপাশ-ওপাশ করলেও ঘুমানো যায়নি। কেননা এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে গান, আড্ডাকেই বেশি আনন্দদায়ক মনে হয়েছে। গান, আড্ডাতেই আমাদের রাতটা কেটেছে। মাঝে রাতের খাবার সেরেছি লঞ্চের ডাইনিংয়ে। লঞ্চের ভেতর এমন বিলাসী ডাইনিং তার ওপর মজার মজার খাবার সত্যিই অবাক করেছে। এভাবে হাসি-আড্ডা-গানের পর আসে কুয়াশা ঢাকা ভোর। ততক্ষণে আমরা পৌঁছে গেছি বরিশাল লঞ্চ ঘাটে। ফজর নামাজ পড়ে এবার আমাদের গন্তব্য নাইমের বাসা পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায়।
লঞ্চ থেকে নেমে আমরা চাপাচাপি করে উঠে পড়লাম অটোতে। চলে গেলাম বাস কাউন্টারে। আরামদায়ক লঞ্চের পর বাসের ভ্রমণটা কেমন যেন শরীরে সইল না। ক্লান্ত শরীরে যেখানে চোখ বন্ধ করলেই ঘুমিয়ে পড়ার কথা সেখানে অপলক চেয়ে আছি জানালার বাইরে। বাইরেও প্রকৃতি উপভোগের সুযোগ নেই। কেননা জানালার বাইরে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। নাইমের বাসায় গিয়ে অনেক মজা করতে হবে এই চিন্তায় অনেকটা জোর করেই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ঘুমিয়েই পড়লাম কীভাবে যেন। চোখ খুলতেই দেখি বাস ফেরি পার হচ্ছে। কত স্মৃতি যে তখন মনের জানালায় উঁকি দিল। এর আগে প্রথমবার ফেরিতে উঠেছিলাম ২০১৮ সালে। ঢাকা থেকে খুলনায় গিয়েছিলাম সেবার বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। স্মৃতিচারণ করতে করতে পৌঁছে গেলাম পটুয়াখালী সদরে। এবার ফের চেপে বসলাম অটোতে। রাস্তা যেন ফুরাবার না। শরীরটাকে একদম আধমরা করে দুপুর ১১টায় আমাদের অটো থামল নাইমের বাড়ির উঠানে। নাইমদের বাড়িটা অনেক আকর্ষণীয়। মাটির ডুপ্লেক্স বাড়ি। দেখেই মনে ধরল। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই আপ্যায়ন শুরু। সতেজ খাবার খেয়ে শরীরটা মুহূর্তেই চাঙা হয়ে গেল। বেরিয়ে পড়লাম ব্যাট-বল হাতে। বহুদিন পর খেলায় মেতে উঠলাম। একসময় এ রকম কত ক্রিকেট খেলেছি বংশাল টেকপট্টির মাঠে। সে যাই হোক তিন ম্যাচের সিরিজে আমার দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেসব কথা থাক, এবার পালা খাবারের। ওমা একি আয়োজন! টেবিল জুড়ে খাবার আর খাবার। হাঁসের মাংসটা যা মজাদার ছিল, উফ!
ঢাকায় থাকলে নির্ঘাত এমন উদরপূর্তির পর নাক ডেকে ঘুম দিতাম। কিন্তু জায়গাটিতো আর ইট-পাথরের নয়, জায়গাটা মাটি আর সবুজের, আহা! ছোট ভাই নাইম ও তাঁর চাচাতো ভাই সাকিবের নির্দেশনায় আমরা ছুটে চললাম তেঁতুলিয়া নদীর দিকে। অনেকটা পথ হাঁটলেও ক্লান্তি নেই। পাশে বন্ধু আনাস ও সাদের নানান মজার মজার কথা। মনে হলো যেন ফিরে গেছি সেই শৈশবে। তেঁতুলিয়া নদী অনেক সুন্দর, তার চেয়েও সুন্দর ছিল আবহাওয়া। একদম পড়ন্ত বিকেল। একটা ট্রলার ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম। সাঁতার না জানায় কিছুটা ভয় হচ্ছিল। কিন্তু ভয়কে জয় করেইতো জীবনের পথ চলতে হয়। সাহসটা আরও বেড়ে গেছে যখন ট্রলার চালক নিজেই বললেন, ‘এখানটায় চড়, পানি হাঁটুর সমান।’ লোভ সামলাতে না পেরে নদীর চড়ে নেমে হাঁটলাম, দৌড়ালাম, ছবি তুললাম। আহ! কি যে শান্তি। ট্রলার থেকে নামার সময় বন্ধু সাদ কিছুটা ব্যথা পেলেও সেগুলোকে পাত্তা দেওয়ার ছেলে সে নয়। একদম ‘ঢাকাইয়া আগুন’। বাখরখানির চুল্লিতে বেড়ে ওঠা!
নদী পর্ব শেষে এখন গ্রাম ঘুরে দেখার পালা। একদম গ্রাম্য সাজেই বেরিয়ে পড়লাম, লুঙ্গি ও গায়ে চাদর জড়িয়ে। বন্ধুদের থেকে উপাধিও পেয়ে গেলাম ‘ইউপি চেয়ারম্যান’। আমি মানুষটা এমনই। ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়ে টং দোকান আমায় বেশি টানে। গ্রাম্য বাজারের গরম-গরম জিলাপি, কাচা পাতির রং চা খেলাম। এটার যে কি অনুভূতি সেটা বোঝানোর মতো নয়। টং দোকানে মান্নার সিনেমা চলছে, একদম ভিড় জমিয়ে মানুষ তা উপভোগ করছে। একদম গ্রামের সাদামাটা জীবন। বাঁশের সাঁকো পার করে ফিরলাম নাইমের বাসায়। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় একটু গড়াগড়ি খেতেই বারবিকিউর জন্য ডাকাডাকি। খোলা আকাশের নিচে, হাড়কাঁপানো শীতে পরিবেশে বারবিকিউ এবারই প্রথম। বারবিকিউ পর্ব শেষে অবশেষে ঘুমের পালা। রাত পেরোলেই আমাদের যাত্রা কুয়াকাটা।
পরদিন সকাল সকাল রওনা দেওয়ার প্ল্যান থাকলেও খেজুরের রস ও ডাব খাওয়ার লোভ সামলানো যায়নি। খেতে খেতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল, রওনা হলাম কুয়াকাটার উদ্দেশে। অটোযোগে প্রথমে দশমিনা বাজার, সেখান থেকে মোটরসাইকেলে আমাদের এবারের গন্তব্য পটুয়াখালী সদর। মোটরসাইকেলে দীর্ঘপথ বেশ আরামদায়কই ছিল। কিন্তু মাঝে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। ক্লান্ত শরীরে মোটরসাইকেলেই ঘুমিয়ে পড়েন আমাদের একজন। ভাগ্য সহায় না হলে মোটরসাইকেল কাত হয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মোটরসাইকেল থেকে নেমে পানি পার হতে উঠে পড়লাম ট্রলারে। ট্রলারে উঠে মাথায় হাত! ছোট্ট একটা ট্রলারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষ। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, পানি তেমন গভীর নয়। তবুও মনের ভেতর উঁকি দিল সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পঞ্চগড়ের বোদার সেই ট্রলার দুর্ঘটনাটি। এমনই অল্প গভীর পানিতে ট্রলার ডুবে প্রাণ গিয়েছিল ৭১ জন মানুষের। এ কথা ভাবতে ভাবতে আরেক ট্রলারের ধাক্কায় আমাদের ট্রলার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হলো। কী যে ভয় পেয়েছিলাম। এ যাত্রায়ও দয়ালের অশেষ কৃপায় রক্ষা।ট্রলার থেকে নেমে উঠে পড়লাম অটোতে। পটুয়াখালী শহরটা দেখে বেশ হিংসা হলো। নিঃসন্দেহে আমাদের যান্ত্রিক এই ঢাকার চেয়ে সুন্দর। অটো থেকে নেমে বাসে, আমাদের গন্তব্য কুয়াকাটা। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অবশেষে আমরা পৌঁছে যাই সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটায় এসে আপনি কক্সবাজারের ফিল খুঁজলে আশাহত হবেন। কুয়াকাটায় কক্সবাজারের মতো ওতো ‘গ্ল্যামার’ নেই। এখানকার হোটেলগুলোও তেমন লাক্সারি না। একটু হাঁটাহাঁটি করে আমরা উঠে পড়লাম মাঝারি মানের একটি হোটেলে। কিছুটা ফ্রেশ হয়েই কনকনে শীতে বেরিয়ে পড়লাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। কেমনই যেন এক অনুভূতি। আজ আমাদের রাতের খাবার—সামুদ্রিক মাছ। একে একে কোরাল, চিংড়ি ও বাঁশপাতা মাছও বাদ গেল না খাবারের তালিকা থেকে। এই ঠান্ডায় একটু পাগলামি না করলে কি চলে? খাবারদাবারের পর খেয়ে নিলাম আইসক্রিম।
এবার এল আমাদের ঘুমের পালা। দুর্দান্ত একটা ঘুম দিয়ে উঠে মোটরসাইকেল ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখতে। এরপর একে একে আমরা ঘুরলাম লাল কাঁকড়ার চর, ঝাউবন, কাউয়ার চর, লেবু চরসহ নানা জায়গা। সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে এমন বাইক রাইডের আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। এবার খাবারের পালা। পুরো ট্যুরেই আমরা খেয়েছি ভরপুর। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। গরম ভাত-ডালের সঙ্গে টুনা মাছ, বাঁশপাতা মাছের ভর্তা ও চিংড়ি, আহা শান্তি! আর সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে খাওয়ার মজাই আলাদা।
সবশেষে এবার সাগরকন্যাকে বিদায় জানানোর পালা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত—পদ্মা সেতু দেখব তাই যাত্রা হবে বাসে, লঞ্চে নয়। টিকিট কেটে উঠে পড়লাম বাসে। সিট নিলাম ‘ই’ ও ‘এফ’ লাইনে। শুরু হলো ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা। চলছে আমাদের বাস। হঠাৎ বিপত্তি এক জায়গায় আটকে রইল পাক্কা ২০ মিনিট। এই সুযোগে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে আড্ডা জুড়ে দিলাম। জানতে পারলাম সামনে আগুন লেগেছে তাই এই দশা। কিছুক্ষণ পরে ফের চলতে শুরু করল বাস। বরিশাল পার হওয়ার পর দেওয়া হলো যাত্রাবিরতি। আমাদের চোখও বলতে হবে, একদম খাদক চোখ। যাত্রাবিরতিতে খাবারের টেবিলে বসে চোখ গিয়ে পড়ল ফ্রিজে থাকা পায়েসের দিকে। একটা না একেকজন দুটা করে পায়েস খেলাম।
বাস যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছে জানালা দিয়ে কিছুটা দেখার চেষ্টা করলাম। তেমন স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মনের ভেতরে বেশ ভালো লাগল। অবাক দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আমাদের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু পার হওয়ার পরে এখন শুধু ঢাকায় ফেরার অপেক্ষা। কুয়াকাটা থেকে কেনা আচার-চকলেট পরিবারের সদস্যদের বণ্টনের চিন্তা। আহ! কত দিন পর বাসায় ফিরছি। দু’চোখ জুড়ে শান্তির ঘুমটা আসতেই এক চরম ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠলাম। শুধু চারদিকে চিৎকার-আর্তনাদ। বুঝতে আর বাকি নেই আমাদের বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। ‘ই’ সিট থেকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে যেতে দেখলাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত। ফায়ার সার্ভিস-পুলিশ সদস্যরাও দ্রুত এসে হাজির দুর্ঘটনাকবলিত বাস উদ্ধারে। তখনো চালক ও কয়েকজন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়েই পোস্তগোলা থেকে দুটি সিএনজি অটোরিকশায় আমরা ছয়জন চলে এলাম বংশাল পুকুরপাড়। সবাই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত। তবে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম। ভাগ্য সহায় না হলে সেদিন লাশ হয়েও ফিরতে পারতাম। এই কুয়াকাটা ট্যুর হতে পারত জীবনের শেষ ট্যুর। ওই যে যাত্রাবিরতিতে খাওয়া সেই পায়েসটাই হতে পারত জীবনের শেষ খাওয়া। কত স্বপ্ন নিমেষেই দুমড়ে-মুচড়ে যেতে পারত। বাসায় এসে দুর্ঘটনার কথা বলতেই আমার স্ত্রীর সে কি কান্না। এ সময়ে এমন ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আপাতত বেঁচে আছি এইতো জরুরি খবর। জীবনে ঢাকার বাইরে অনেক ঘুরেছি, ভবিষ্যতেও ঘুরব। তবে এই জার্নিটা আমার কাছে ‘ডেড জার্নি’ হয়ে থাকবে। ভুলব না তোমায় কুয়াকাটা...
আমাদের শরীরের সামান্য আঘাত ধীরে ধীরে সেরে উঠেছে। তবে মনের ভেতরের ভয়টা হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে অনেকটা দিন। এই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাসের চালক। শুনেছি লোকটা বেঁচে আছেন, তবে দুই পা ভেঙেছে ও পাঁজরের হাড়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তিনি দ্রুত সেরে উঠুক—এই কামনাই করি। আর হ্যাঁ, শীতের এই সময়টায় ঘন কুয়াশায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই সময়ে সাবধান থাকাটা বেশ জরুরি।
আরও পড়ুন:
‘জাতে আমি ঢাকাইয়া কইতে আমার সিনা টান’—শিল্পী হায়দার হোসেনের বিখ্যাত এই গান পুরোনো হওয়ার নয়। গানটি ঢাকাইয়াদের অনেক মহব্বতের। বাহান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির এই শহরের পরতে পরতে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য বইপুস্তক কিংবা দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে গল্প শুনে জানা যায় কিন্তু যে জিনিসটা জানা যায় না বা পরিমাপ করা যায় না, সেটি হচ্ছে ‘ভালোবাসা’। এই পুরোনো শহরেই জড়িয়ে আছে আমাদের প্রেম-ভালোবাসার অনেক গল্প।
সেসব কথা থাক। অনেক পাওয়ার মাঝেও আমাদের ঢাকাইয়াদের একটা জিনিসের ভীষণ অভাব। সেটি হচ্ছে ‘অক্সিজেন’। অক্সিজেনের খোঁজে আমরা সব সময়ই চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি। সুযোগ পেলেই দৌড়। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকেই এবার আমরা ৬ ঢাকাইয়া মিলে ট্যুর দিই কুয়াকাটায়। সেটি নিয়েই মূলত এই লেখা...
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর কারণ ছিল দুটো। এক. পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ছোট ভাই নাইমের বাসায় দাওয়াত আর দুই. ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা বিলাসী লঞ্চে ভ্রমণ।
সারা দিন অফিস শেষে রাত ৯টার সুন্দরবন-১৬ লঞ্চে সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে আমরা রওনা হই। একদিকে অনেক দিন পর ট্যুর, আরেকদিকে এমন জাঁকালো আরামদায়ক লঞ্চ রীতিমতো স্বস্তি ও প্রশান্তি দিয়েছে। দুই কেবিনে সারা রাত এপাশ-ওপাশ করলেও ঘুমানো যায়নি। কেননা এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে গান, আড্ডাকেই বেশি আনন্দদায়ক মনে হয়েছে। গান, আড্ডাতেই আমাদের রাতটা কেটেছে। মাঝে রাতের খাবার সেরেছি লঞ্চের ডাইনিংয়ে। লঞ্চের ভেতর এমন বিলাসী ডাইনিং তার ওপর মজার মজার খাবার সত্যিই অবাক করেছে। এভাবে হাসি-আড্ডা-গানের পর আসে কুয়াশা ঢাকা ভোর। ততক্ষণে আমরা পৌঁছে গেছি বরিশাল লঞ্চ ঘাটে। ফজর নামাজ পড়ে এবার আমাদের গন্তব্য নাইমের বাসা পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায়।
লঞ্চ থেকে নেমে আমরা চাপাচাপি করে উঠে পড়লাম অটোতে। চলে গেলাম বাস কাউন্টারে। আরামদায়ক লঞ্চের পর বাসের ভ্রমণটা কেমন যেন শরীরে সইল না। ক্লান্ত শরীরে যেখানে চোখ বন্ধ করলেই ঘুমিয়ে পড়ার কথা সেখানে অপলক চেয়ে আছি জানালার বাইরে। বাইরেও প্রকৃতি উপভোগের সুযোগ নেই। কেননা জানালার বাইরে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। নাইমের বাসায় গিয়ে অনেক মজা করতে হবে এই চিন্তায় অনেকটা জোর করেই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ঘুমিয়েই পড়লাম কীভাবে যেন। চোখ খুলতেই দেখি বাস ফেরি পার হচ্ছে। কত স্মৃতি যে তখন মনের জানালায় উঁকি দিল। এর আগে প্রথমবার ফেরিতে উঠেছিলাম ২০১৮ সালে। ঢাকা থেকে খুলনায় গিয়েছিলাম সেবার বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। স্মৃতিচারণ করতে করতে পৌঁছে গেলাম পটুয়াখালী সদরে। এবার ফের চেপে বসলাম অটোতে। রাস্তা যেন ফুরাবার না। শরীরটাকে একদম আধমরা করে দুপুর ১১টায় আমাদের অটো থামল নাইমের বাড়ির উঠানে। নাইমদের বাড়িটা অনেক আকর্ষণীয়। মাটির ডুপ্লেক্স বাড়ি। দেখেই মনে ধরল। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই আপ্যায়ন শুরু। সতেজ খাবার খেয়ে শরীরটা মুহূর্তেই চাঙা হয়ে গেল। বেরিয়ে পড়লাম ব্যাট-বল হাতে। বহুদিন পর খেলায় মেতে উঠলাম। একসময় এ রকম কত ক্রিকেট খেলেছি বংশাল টেকপট্টির মাঠে। সে যাই হোক তিন ম্যাচের সিরিজে আমার দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেসব কথা থাক, এবার পালা খাবারের। ওমা একি আয়োজন! টেবিল জুড়ে খাবার আর খাবার। হাঁসের মাংসটা যা মজাদার ছিল, উফ!
ঢাকায় থাকলে নির্ঘাত এমন উদরপূর্তির পর নাক ডেকে ঘুম দিতাম। কিন্তু জায়গাটিতো আর ইট-পাথরের নয়, জায়গাটা মাটি আর সবুজের, আহা! ছোট ভাই নাইম ও তাঁর চাচাতো ভাই সাকিবের নির্দেশনায় আমরা ছুটে চললাম তেঁতুলিয়া নদীর দিকে। অনেকটা পথ হাঁটলেও ক্লান্তি নেই। পাশে বন্ধু আনাস ও সাদের নানান মজার মজার কথা। মনে হলো যেন ফিরে গেছি সেই শৈশবে। তেঁতুলিয়া নদী অনেক সুন্দর, তার চেয়েও সুন্দর ছিল আবহাওয়া। একদম পড়ন্ত বিকেল। একটা ট্রলার ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম। সাঁতার না জানায় কিছুটা ভয় হচ্ছিল। কিন্তু ভয়কে জয় করেইতো জীবনের পথ চলতে হয়। সাহসটা আরও বেড়ে গেছে যখন ট্রলার চালক নিজেই বললেন, ‘এখানটায় চড়, পানি হাঁটুর সমান।’ লোভ সামলাতে না পেরে নদীর চড়ে নেমে হাঁটলাম, দৌড়ালাম, ছবি তুললাম। আহ! কি যে শান্তি। ট্রলার থেকে নামার সময় বন্ধু সাদ কিছুটা ব্যথা পেলেও সেগুলোকে পাত্তা দেওয়ার ছেলে সে নয়। একদম ‘ঢাকাইয়া আগুন’। বাখরখানির চুল্লিতে বেড়ে ওঠা!
নদী পর্ব শেষে এখন গ্রাম ঘুরে দেখার পালা। একদম গ্রাম্য সাজেই বেরিয়ে পড়লাম, লুঙ্গি ও গায়ে চাদর জড়িয়ে। বন্ধুদের থেকে উপাধিও পেয়ে গেলাম ‘ইউপি চেয়ারম্যান’। আমি মানুষটা এমনই। ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়ে টং দোকান আমায় বেশি টানে। গ্রাম্য বাজারের গরম-গরম জিলাপি, কাচা পাতির রং চা খেলাম। এটার যে কি অনুভূতি সেটা বোঝানোর মতো নয়। টং দোকানে মান্নার সিনেমা চলছে, একদম ভিড় জমিয়ে মানুষ তা উপভোগ করছে। একদম গ্রামের সাদামাটা জীবন। বাঁশের সাঁকো পার করে ফিরলাম নাইমের বাসায়। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় একটু গড়াগড়ি খেতেই বারবিকিউর জন্য ডাকাডাকি। খোলা আকাশের নিচে, হাড়কাঁপানো শীতে পরিবেশে বারবিকিউ এবারই প্রথম। বারবিকিউ পর্ব শেষে অবশেষে ঘুমের পালা। রাত পেরোলেই আমাদের যাত্রা কুয়াকাটা।
পরদিন সকাল সকাল রওনা দেওয়ার প্ল্যান থাকলেও খেজুরের রস ও ডাব খাওয়ার লোভ সামলানো যায়নি। খেতে খেতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল, রওনা হলাম কুয়াকাটার উদ্দেশে। অটোযোগে প্রথমে দশমিনা বাজার, সেখান থেকে মোটরসাইকেলে আমাদের এবারের গন্তব্য পটুয়াখালী সদর। মোটরসাইকেলে দীর্ঘপথ বেশ আরামদায়কই ছিল। কিন্তু মাঝে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। ক্লান্ত শরীরে মোটরসাইকেলেই ঘুমিয়ে পড়েন আমাদের একজন। ভাগ্য সহায় না হলে মোটরসাইকেল কাত হয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মোটরসাইকেল থেকে নেমে পানি পার হতে উঠে পড়লাম ট্রলারে। ট্রলারে উঠে মাথায় হাত! ছোট্ট একটা ট্রলারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষ। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, পানি তেমন গভীর নয়। তবুও মনের ভেতর উঁকি দিল সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পঞ্চগড়ের বোদার সেই ট্রলার দুর্ঘটনাটি। এমনই অল্প গভীর পানিতে ট্রলার ডুবে প্রাণ গিয়েছিল ৭১ জন মানুষের। এ কথা ভাবতে ভাবতে আরেক ট্রলারের ধাক্কায় আমাদের ট্রলার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হলো। কী যে ভয় পেয়েছিলাম। এ যাত্রায়ও দয়ালের অশেষ কৃপায় রক্ষা।ট্রলার থেকে নেমে উঠে পড়লাম অটোতে। পটুয়াখালী শহরটা দেখে বেশ হিংসা হলো। নিঃসন্দেহে আমাদের যান্ত্রিক এই ঢাকার চেয়ে সুন্দর। অটো থেকে নেমে বাসে, আমাদের গন্তব্য কুয়াকাটা। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অবশেষে আমরা পৌঁছে যাই সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটায় এসে আপনি কক্সবাজারের ফিল খুঁজলে আশাহত হবেন। কুয়াকাটায় কক্সবাজারের মতো ওতো ‘গ্ল্যামার’ নেই। এখানকার হোটেলগুলোও তেমন লাক্সারি না। একটু হাঁটাহাঁটি করে আমরা উঠে পড়লাম মাঝারি মানের একটি হোটেলে। কিছুটা ফ্রেশ হয়েই কনকনে শীতে বেরিয়ে পড়লাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। কেমনই যেন এক অনুভূতি। আজ আমাদের রাতের খাবার—সামুদ্রিক মাছ। একে একে কোরাল, চিংড়ি ও বাঁশপাতা মাছও বাদ গেল না খাবারের তালিকা থেকে। এই ঠান্ডায় একটু পাগলামি না করলে কি চলে? খাবারদাবারের পর খেয়ে নিলাম আইসক্রিম।
এবার এল আমাদের ঘুমের পালা। দুর্দান্ত একটা ঘুম দিয়ে উঠে মোটরসাইকেল ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখতে। এরপর একে একে আমরা ঘুরলাম লাল কাঁকড়ার চর, ঝাউবন, কাউয়ার চর, লেবু চরসহ নানা জায়গা। সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে এমন বাইক রাইডের আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। এবার খাবারের পালা। পুরো ট্যুরেই আমরা খেয়েছি ভরপুর। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। গরম ভাত-ডালের সঙ্গে টুনা মাছ, বাঁশপাতা মাছের ভর্তা ও চিংড়ি, আহা শান্তি! আর সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে খাওয়ার মজাই আলাদা।
সবশেষে এবার সাগরকন্যাকে বিদায় জানানোর পালা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত—পদ্মা সেতু দেখব তাই যাত্রা হবে বাসে, লঞ্চে নয়। টিকিট কেটে উঠে পড়লাম বাসে। সিট নিলাম ‘ই’ ও ‘এফ’ লাইনে। শুরু হলো ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা। চলছে আমাদের বাস। হঠাৎ বিপত্তি এক জায়গায় আটকে রইল পাক্কা ২০ মিনিট। এই সুযোগে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে আড্ডা জুড়ে দিলাম। জানতে পারলাম সামনে আগুন লেগেছে তাই এই দশা। কিছুক্ষণ পরে ফের চলতে শুরু করল বাস। বরিশাল পার হওয়ার পর দেওয়া হলো যাত্রাবিরতি। আমাদের চোখও বলতে হবে, একদম খাদক চোখ। যাত্রাবিরতিতে খাবারের টেবিলে বসে চোখ গিয়ে পড়ল ফ্রিজে থাকা পায়েসের দিকে। একটা না একেকজন দুটা করে পায়েস খেলাম।
বাস যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছে জানালা দিয়ে কিছুটা দেখার চেষ্টা করলাম। তেমন স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মনের ভেতরে বেশ ভালো লাগল। অবাক দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আমাদের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু পার হওয়ার পরে এখন শুধু ঢাকায় ফেরার অপেক্ষা। কুয়াকাটা থেকে কেনা আচার-চকলেট পরিবারের সদস্যদের বণ্টনের চিন্তা। আহ! কত দিন পর বাসায় ফিরছি। দু’চোখ জুড়ে শান্তির ঘুমটা আসতেই এক চরম ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠলাম। শুধু চারদিকে চিৎকার-আর্তনাদ। বুঝতে আর বাকি নেই আমাদের বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। ‘ই’ সিট থেকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে যেতে দেখলাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত। ফায়ার সার্ভিস-পুলিশ সদস্যরাও দ্রুত এসে হাজির দুর্ঘটনাকবলিত বাস উদ্ধারে। তখনো চালক ও কয়েকজন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়েই পোস্তগোলা থেকে দুটি সিএনজি অটোরিকশায় আমরা ছয়জন চলে এলাম বংশাল পুকুরপাড়। সবাই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত। তবে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম। ভাগ্য সহায় না হলে সেদিন লাশ হয়েও ফিরতে পারতাম। এই কুয়াকাটা ট্যুর হতে পারত জীবনের শেষ ট্যুর। ওই যে যাত্রাবিরতিতে খাওয়া সেই পায়েসটাই হতে পারত জীবনের শেষ খাওয়া। কত স্বপ্ন নিমেষেই দুমড়ে-মুচড়ে যেতে পারত। বাসায় এসে দুর্ঘটনার কথা বলতেই আমার স্ত্রীর সে কি কান্না। এ সময়ে এমন ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আপাতত বেঁচে আছি এইতো জরুরি খবর। জীবনে ঢাকার বাইরে অনেক ঘুরেছি, ভবিষ্যতেও ঘুরব। তবে এই জার্নিটা আমার কাছে ‘ডেড জার্নি’ হয়ে থাকবে। ভুলব না তোমায় কুয়াকাটা...
আমাদের শরীরের সামান্য আঘাত ধীরে ধীরে সেরে উঠেছে। তবে মনের ভেতরের ভয়টা হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে অনেকটা দিন। এই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাসের চালক। শুনেছি লোকটা বেঁচে আছেন, তবে দুই পা ভেঙেছে ও পাঁজরের হাড়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তিনি দ্রুত সেরে উঠুক—এই কামনাই করি। আর হ্যাঁ, শীতের এই সময়টায় ঘন কুয়াশায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই সময়ে সাবধান থাকাটা বেশ জরুরি।
আরও পড়ুন:
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
১ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
১ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
১ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
১ দিন আগে