ইশতিয়াক হাসান
ভাবুন, বিশাল এক গুহার কথা, যার ছাদে আবার বিশাল এক গর্ত, যেখান দিয়ে নীল আকাশ দেখা যায়। আর সেই গুহার ভেতরে নীল জলের খেলা, চারপাশ আবার ঘিরে আছে বালুকাবেলা। হ্যাঁ এভাবেই সহজে বর্ণনা দেওয়া যায় মেক্সিকোর গুপ্ত সৈকতটির।
মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জে আছে আশ্চর্য সুন্দর এক সৈকত। স্বচ্ছ জল, পর্যাপ্ত ছায়া, সূর্যের আলো—সবকিছুই পাবেন সেখানে। কিন্তু আগে থেকে জানা না থাকলে এমনকি সৈকতটির আশপাশে পৌঁছে গেলেও একে খুঁজে পাবেন না। সেখানে পৌঁছাতে হয় একটি সুড়ঙ্গ ধরে। সেই সুড়ঙ্গে আবার সব সময়ই থাকে পানি। তাই প্লায়া দেল আমোর বা ‘ভালোবাসার সৈকত’টির আরেক নাম লুকানো বা গুপ্ত সৈকত।
মেক্সিকোর পুয়েরতো ভেলারতার ২২ নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল ডাঙ্গার ১.১৫১ মাইলের সমান) পশ্চিমে বেন্দেরাস উপসাগরের ঠিক মুখেই মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান। এটি পড়েছে নায়ারতি রাজ্যের সীমানায়। জায়গাটি এত সুন্দর যে প্রথম দেখায় মনে হতে পারে কল্পকথার আশ্চর্য সুন্দর কোনো রাজ্যে চলে এসেছেন। চারপাশে সাগরের নীল জলঘেরা দ্বীপরাজ্যের বড় আকর্ষণ অগণিত বালুময় গুহা।
মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জ বেশ কিছু জনবসতিহীন দ্বীপের সমন্বয়ে গড়া। পানির তলের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে দ্বীপগুলোর সৃষ্টি। তবে এগুলো সবই প্রাকৃতিক বিস্ময় হলেও গুপ্ত সৈকতটির খোঁজ পেতে ভূমিকা কোনো অগ্ন্যুৎপাতের নয়।
যত দূর জানা যায়, যে গর্তের কারণে গুপ্ত সৈকতের জন্ম, সেটি আবার সৃষ্টি হয়েছে বোমাবর্ষণের কারণে। মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলো সব সময়ই ছিল জনবসতিহীন। তাই এগুলো মেক্সিকান সরকারের সামরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ছিল আদর্শ। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে সাধারণ মানুষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গোলাবারুদ ও অস্ত্রশস্ত্রের কিছু পরীক্ষা চালানো হয়। তবে এতে মারিয়েতার প্রকৃতির ওপর বেশ কিছু প্রভাব পড়ে। যেমন পরীক্ষামূলক বোমা ফেলার কারণে এখানে বেশ কিছু গুহার সৃষ্টি হয়। ধারণা করা হয়, এভাবে জন্ম গুপ্ত সৈকতটিরও।
১৯৬০-এর দশকে বিজ্ঞানী জ্যাকুয়েস কোসতয়ো দ্বীপগুলোকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৫ সালে একে একটি ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেন। নাম রাখা হয় পারকু ন্যাশনাল আইলাস মারিয়েতাস। পর্যটকেরা যত ইচ্ছে সাঁতার, কায়াকিং, সূর্যস্নান করতে পারেন সেখানে। তবে দ্বীপ এলাকায় শিকার কিংবা মাছ ধরা নিষিদ্ধ। পরে অবশ্য এটি ইউনেসকো বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হিসেবে মনোনীত হয়। এটা ঠিক, কয়েক দশকের প্রচুর পরিমাণে সামরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণে এখানকার বন্যপ্রাণী ও গাছপালার বেশ ক্ষতি হয়। তবে গত বছরগুলোতে উপদ্রবহীন থাকায় এখানকার সাগরের জল আর প্রাণীরা পুরোনো সেই অবস্থায় ফিরে গেছে।
বাইরে থেকে পর্যটকদের বোঝার উপায় নেই এখানে চমৎকার একটি সৈকত আছে। প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে ওই সৈকতের সংযোগ তৈরি করেছে লম্বা একটি সুড়ঙ্গ। তবে ওই সুড়ঙ্গটা কিন্তু সব সময় জলমগ্ন থাকে। তবে পানি আর গুহার ওপরের দেয়ালের মধ্যে মোটামুটি ছয় ফুটের একটি ব্যবধান থাকে। কাজেই পর্যটকেরা সেখানে যেতে পারেন সাঁতার কেটে ও কায়াকিং করে অর্থাৎ সরু, পাতলা নৌকা বৈঠা দিয়ে চালিয়ে।
উষ্ণমণ্ডলীয় এই এলাকা এখন পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জায়গা হিসেবে ভারি পছন্দ। জনবসতি না থাকায় আনন্দটা আরও বেশি। আর এখানে আসার পর তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ আশ্চর্য সেই লুকানো সৈকত। একবার সেখানে পৌঁছে গেলে সাগরের জলে যত ইচ্ছা দাপাদাপি কিংবা সূর্যস্নান করতে পারবেন মনের আনন্দে।
কীভাবে পৌঁছাবেন এই সৈকতে? প্রথমে আপনাকে অবশ্যই উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোয় যেতে হবে। সেখানকার পুয়েরতো ভেলারতা উপকূল থেকে এক ঘণ্টা নৌকা ভ্রমণ, তারপর কী করতে হবে তো জানেনই। দ্বীপে পৌঁছে কায়াকিং করে বা সাঁতরে পৌঁছে যাবেন গুপ্ত সেই সৈকতে। বিভিন্ন ট্যুর কোম্পানি সেখানে পর্যটকদের নিয়ে যায়। তবে আগেভাগেই বুকিং দিতে হয়, কারণ গুপ্ত সৈকতে যেতে আগ্রহী পর্যটকদের লিস্টি অনেক লম্বা। সাধারণত এ ধরনের একটি ভ্রমণের জন্য ট্যুর কোম্পানিগুলো ১ হাজার ৫০০ মেক্সিকান পেসোর মতো নেয়। সৈকতের দ্বীপটিতে পৌঁছার পথে সাগরজলে ডলফিন আর তিমিদের সাঁতার কাটা দেখাটাও বড় আনন্দের। কী জোগাড়-যন্ত্র করতে শুরু করেছেন নিশ্চয়! এমন একটি জায়গায় সময় কাটানোর প্রলোভন এড়ানো মুশকিল!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, ভ্যালারটা অ্যাডভেঞ্চর. কম
ভাবুন, বিশাল এক গুহার কথা, যার ছাদে আবার বিশাল এক গর্ত, যেখান দিয়ে নীল আকাশ দেখা যায়। আর সেই গুহার ভেতরে নীল জলের খেলা, চারপাশ আবার ঘিরে আছে বালুকাবেলা। হ্যাঁ এভাবেই সহজে বর্ণনা দেওয়া যায় মেক্সিকোর গুপ্ত সৈকতটির।
মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জে আছে আশ্চর্য সুন্দর এক সৈকত। স্বচ্ছ জল, পর্যাপ্ত ছায়া, সূর্যের আলো—সবকিছুই পাবেন সেখানে। কিন্তু আগে থেকে জানা না থাকলে এমনকি সৈকতটির আশপাশে পৌঁছে গেলেও একে খুঁজে পাবেন না। সেখানে পৌঁছাতে হয় একটি সুড়ঙ্গ ধরে। সেই সুড়ঙ্গে আবার সব সময়ই থাকে পানি। তাই প্লায়া দেল আমোর বা ‘ভালোবাসার সৈকত’টির আরেক নাম লুকানো বা গুপ্ত সৈকত।
মেক্সিকোর পুয়েরতো ভেলারতার ২২ নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল ডাঙ্গার ১.১৫১ মাইলের সমান) পশ্চিমে বেন্দেরাস উপসাগরের ঠিক মুখেই মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান। এটি পড়েছে নায়ারতি রাজ্যের সীমানায়। জায়গাটি এত সুন্দর যে প্রথম দেখায় মনে হতে পারে কল্পকথার আশ্চর্য সুন্দর কোনো রাজ্যে চলে এসেছেন। চারপাশে সাগরের নীল জলঘেরা দ্বীপরাজ্যের বড় আকর্ষণ অগণিত বালুময় গুহা।
মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জ বেশ কিছু জনবসতিহীন দ্বীপের সমন্বয়ে গড়া। পানির তলের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে দ্বীপগুলোর সৃষ্টি। তবে এগুলো সবই প্রাকৃতিক বিস্ময় হলেও গুপ্ত সৈকতটির খোঁজ পেতে ভূমিকা কোনো অগ্ন্যুৎপাতের নয়।
যত দূর জানা যায়, যে গর্তের কারণে গুপ্ত সৈকতের জন্ম, সেটি আবার সৃষ্টি হয়েছে বোমাবর্ষণের কারণে। মারিয়েতা দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলো সব সময়ই ছিল জনবসতিহীন। তাই এগুলো মেক্সিকান সরকারের সামরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ছিল আদর্শ। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে সাধারণ মানুষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গোলাবারুদ ও অস্ত্রশস্ত্রের কিছু পরীক্ষা চালানো হয়। তবে এতে মারিয়েতার প্রকৃতির ওপর বেশ কিছু প্রভাব পড়ে। যেমন পরীক্ষামূলক বোমা ফেলার কারণে এখানে বেশ কিছু গুহার সৃষ্টি হয়। ধারণা করা হয়, এভাবে জন্ম গুপ্ত সৈকতটিরও।
১৯৬০-এর দশকে বিজ্ঞানী জ্যাকুয়েস কোসতয়ো দ্বীপগুলোকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৫ সালে একে একটি ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেন। নাম রাখা হয় পারকু ন্যাশনাল আইলাস মারিয়েতাস। পর্যটকেরা যত ইচ্ছে সাঁতার, কায়াকিং, সূর্যস্নান করতে পারেন সেখানে। তবে দ্বীপ এলাকায় শিকার কিংবা মাছ ধরা নিষিদ্ধ। পরে অবশ্য এটি ইউনেসকো বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হিসেবে মনোনীত হয়। এটা ঠিক, কয়েক দশকের প্রচুর পরিমাণে সামরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণে এখানকার বন্যপ্রাণী ও গাছপালার বেশ ক্ষতি হয়। তবে গত বছরগুলোতে উপদ্রবহীন থাকায় এখানকার সাগরের জল আর প্রাণীরা পুরোনো সেই অবস্থায় ফিরে গেছে।
বাইরে থেকে পর্যটকদের বোঝার উপায় নেই এখানে চমৎকার একটি সৈকত আছে। প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে ওই সৈকতের সংযোগ তৈরি করেছে লম্বা একটি সুড়ঙ্গ। তবে ওই সুড়ঙ্গটা কিন্তু সব সময় জলমগ্ন থাকে। তবে পানি আর গুহার ওপরের দেয়ালের মধ্যে মোটামুটি ছয় ফুটের একটি ব্যবধান থাকে। কাজেই পর্যটকেরা সেখানে যেতে পারেন সাঁতার কেটে ও কায়াকিং করে অর্থাৎ সরু, পাতলা নৌকা বৈঠা দিয়ে চালিয়ে।
উষ্ণমণ্ডলীয় এই এলাকা এখন পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জায়গা হিসেবে ভারি পছন্দ। জনবসতি না থাকায় আনন্দটা আরও বেশি। আর এখানে আসার পর তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ আশ্চর্য সেই লুকানো সৈকত। একবার সেখানে পৌঁছে গেলে সাগরের জলে যত ইচ্ছা দাপাদাপি কিংবা সূর্যস্নান করতে পারবেন মনের আনন্দে।
কীভাবে পৌঁছাবেন এই সৈকতে? প্রথমে আপনাকে অবশ্যই উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোয় যেতে হবে। সেখানকার পুয়েরতো ভেলারতা উপকূল থেকে এক ঘণ্টা নৌকা ভ্রমণ, তারপর কী করতে হবে তো জানেনই। দ্বীপে পৌঁছে কায়াকিং করে বা সাঁতরে পৌঁছে যাবেন গুপ্ত সেই সৈকতে। বিভিন্ন ট্যুর কোম্পানি সেখানে পর্যটকদের নিয়ে যায়। তবে আগেভাগেই বুকিং দিতে হয়, কারণ গুপ্ত সৈকতে যেতে আগ্রহী পর্যটকদের লিস্টি অনেক লম্বা। সাধারণত এ ধরনের একটি ভ্রমণের জন্য ট্যুর কোম্পানিগুলো ১ হাজার ৫০০ মেক্সিকান পেসোর মতো নেয়। সৈকতের দ্বীপটিতে পৌঁছার পথে সাগরজলে ডলফিন আর তিমিদের সাঁতার কাটা দেখাটাও বড় আনন্দের। কী জোগাড়-যন্ত্র করতে শুরু করেছেন নিশ্চয়! এমন একটি জায়গায় সময় কাটানোর প্রলোভন এড়ানো মুশকিল!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, ভ্যালারটা অ্যাডভেঞ্চর. কম
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে