Ajker Patrika

প্রবাসীদের মধ্যে চরমপন্থার দীক্ষা, সিঙ্গাপুরে তদন্তের মুখে বাংলাদেশি আমির হামজা

আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৪, ১৮: ৫৯
প্রবাসীদের মধ্যে চরমপন্থার দীক্ষা, সিঙ্গাপুরে তদন্তের মুখে বাংলাদেশি আমির হামজা

এক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাংলাদেশির মধ্যে চরমপন্থা প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে। ৯ আগস্ট ওই ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করেছিলেন বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম মাদারশিপ। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। 

বুধবার মাদারশিপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চরমপন্থার প্রশিক্ষণ দেওয়ায় অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি বাংলাদেশেও চরমপন্থী শিক্ষা এবং সন্ত্রাসী যোগসূত্রের জন্য অভিযুক্ত হয়েছিলেন। 

বুধবার গণমাধ্যমকে সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী কে শানমুগাম জানান, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম হামজা মোহাম্মদ আমির বা আমির হামজা। তিনি তাঁর খুতবায় অনেক চরমপন্থী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বিবৃতি দিয়েছেন। 

সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমির হামজাসহ যে অনুষ্ঠানে তিনি খুতবা পাঠ করেছেন, সেই অনুষ্ঠানের সংগঠক এবং জড়িত অন্য সবার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। 

সিঙ্গাপুর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, আমির হামজা তাঁর উপদেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা ও সহিংসতা প্রচার করার পর বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশে সক্রিয় আল কায়েদাপন্থী সন্ত্রাসী সংগঠন আনসার আল-ইসলামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যোগসূত্র থাকার দায়ে বাংলাদেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। 

আমির হামজা ভিন্ন নাম ও পাসপোর্ট ব্যবহার করে সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করেছেন বলেও জানা গেছে। ৯ আগস্ট বাংলাদেশি শ্রমিকদের বসবাস করা একটি ডরমিটরিতে গিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। এ সময় শ্রমিকদের চরমপন্থী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করার জন্য প্ররোচিত করেন তিনি। বাংলাদেশে থাকা কিছু উগ্রপন্থীকে ইসলামের ঘাঁটি হিসেবেও আখ্যা দেন। তাঁর নির্দেশিত এসব ব্যক্তির মধ্যে বাংলাদেশে বর্তমানে নিষিদ্ধ দল জামায়াতে ইসলামীর বেশ কয়েকজন নেতাও রয়েছেন। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, আমির হামজা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী সরকারকে অত্যাচারী হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং বিরোধিতাকারীদের ওই সরকার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বলেও দাবি করেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ আগস্ট চরমপন্থী বক্তব্য দেওয়ার এক দিন পর ১০ আগস্ট সিঙ্গাপুর ত্যাগ করেন আমির হামজা। তবে তাঁর বক্তব্যের বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পুলিশ তথ্য পায় গত ১২ আগস্ট। 

সিঙ্গাপুরের জনসমাগমগুলো ‘পাবলিক অর্ডার অ্যাক্ট-২০০৯ ’-এর অধীনে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং পুলিশের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের সমাবেশ করা দেশটিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সে ক্ষেত্রে আমির হামজা বা ওই খুতবা পাঠের সংগঠকদের কেউই প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেননি।

শানমুগাম বলেছেন, ‘আমির হামজা যা বলেছেন, তা সিঙ্গাপুরের জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করে এবং আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে এবং যদি তারা সিঙ্গাপুরের আইন লঙ্ঘন করে বা নিরাপত্তা উদ্বেগ সৃষ্টি করে বলে প্রমাণিত হয়, তবে এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

সিঙ্গাপুরে অবস্থান করা বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে মৌলবাদের সমস্যা রয়েছে কি না জানতে চাইলে শানমুগাম বলেন, ‘পুরোপুরি নয়।’ 

সিঙ্গাপুরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছে দাবি করে তিনি জানান, এসব কর্মী আইন মান্য করেই বসবাস করেন। ২০১৫ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মাত্র ৪০ জন কর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে। 

শানমুগাম বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় দুই লাখ কর্মী রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ একটি ছোট সংখ্যা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

পরিবারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতা-কর্মী আটক

গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মী আটক

তখন অন্য একটা সংগঠন করতাম, এখন বলতে লজ্জা হয়: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশে-ভারত সম্পর্কের অবনতিতে দায়ী মোদি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা: কংগ্রেস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত