সৌগত বসু, ঢাকা
লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি), অর্থাৎ ঋণপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাঁচ প্রকল্পে ভারতীয় অর্থায়ন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকমতো ঋণের অর্থ না পাওয়ায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তিনটি প্রকল্প শুরুই হয়নি। একটি প্রকল্পের কাজ পাঁচবার মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি। থমকে যাওয়া অন্যটি নিজস্ব অর্থায়নেই করার কথা ভাবছে রেলওয়ে।
ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা শেখ হাসিনার পতনের পর এসব প্রকল্পের কাজে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। ৫ আগস্টের পর প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে টানাপোড়েনের জেরে কয়েকটি প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদার নিজ দেশে চলে যান। রেলসূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের রেলপথ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এগুলোসহ রেলের বিভিন্ন প্রকল্প গুরুত্বসহকারে দেখছেন। তবে ইতিমধ্যে কয়েকবার আলোচনা হলেও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
ভারতীয় ঋণের আওতায় রেলের মোট প্রকল্প ছয়টি। এর মধ্যে গত ১০ বছরে আলোর মুখ দেখেছে শুধু খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্প। দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলপথ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ শুরুই হয়নি। সার্বিক অগ্রগতি মাত্র শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ। খুলনা-দর্শনা রেলপথ নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথের কাজের অগ্রগতি ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। কাজ চলমান ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইন ও কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ প্রকল্পের। প্রকল্পগুলোর মোট আর্থিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা।
এলওসি ঋণের শর্তে বলা হয়েছিল, প্রকল্পগুলোর ৭৫ শতাংশ অর্থায়নই হবে ভারত থেকে। বাকি ২৫ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ। ভারতীয় ঋণের পুরো অর্থ দেবে দেশটির এক্সিম ব্যাংক। চুক্তি অনুসারে প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ পণ্য-সেবাই ভারত থেকে আমদানি করতে হবে।
এলওসি অর্থাৎ লাইন অব ক্রেডিট হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের ঋণের ব্যবস্থা। নমনীয়তা এই ঋণের একটি সুবিধার দিক। সম্ভাব্য অসুবিধার মধ্যে রয়েছে সুদের উঁচুহার ও অতিরিক্ত ব্যয়ের আশঙ্কা।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ প্রকল্পে অর্থছাড় হচ্ছে না
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ আগস্ট। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন থেকে বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন করা হয়। কিন্তু এর কাজ শুরুই হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঋণের অর্থছাড় নিয়ে ভারতের এক্সিম ব্যাংককে পাঁচটি চিঠি দিয়েও উত্তর পাওয়া যায়নি। শর্ত অনুযায়ী এক্সিম ব্যাংক ঠিকাদারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা দিলে দরপত্র আহ্বান করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সে তালিকার জন্য গত বছরের অক্টোবরে চিঠি দেওয়া হলেও এখনো জবাব আসেনি।
প্রকল্পের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম ফিরোজী গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো কিছুতে ভারতের সম্মতি চেয়ে চিঠি দিলে সময়মতো জবাব আসে না।’
ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
রেলে ভারতীয় ঋণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে ধরা হয় ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইন। ২০১২ সালে প্রকল্পটি অনুমোদিত হওয়ার পর ১০ বছরেরও বেশি কেটে গেছে। দরপত্রেই লেগেছে ৬ বছর। সূত্র বলছে, এ প্রকল্পের মোট অগ্রগতি ৩৭ শতাংশ। এতে ভারতীয় ঋণ ২ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, আর বাংলাদেশ দেবে ৫২১ কোটি টাকা।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়াকে ডাকা হয়েছিল। হাইকমিশন থেকে প্রাথমিকভাবে ভারতের এতে অর্থায়ন না করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত জুনে বাড়তি ঋণসহায়তার জন্য এক্সিম ব্যাংকে আবেদন জানালেও তাদের সাড়া মেলেনি। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করলেও আশানুরূপ বার্তা পাওয়া যায়নি।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভারতীয় দূতাবাসে বৈঠকে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পারিশ্রমিক পুনর্মূল্যায়ন এবং ভারত সরকারের নতুন এলওসি নীতিমালার শর্ত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রকল্পে কেনাকাটা, সমীক্ষা, অর্থ ব্যয় মূল্যায়নে ভারত কিছু শর্ত আরোপের কথা জানিয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় এসব শর্তের উল্লেখ ছিল না। সর্বশেষ গত ২৪ নভেম্বর রেলওয়েতে স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এক্সিম ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাড়া না দিলে প্রকল্পটি নতুন বিদেশি সহায়তা বা নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে চুক্তি অনুযায়ী, এজন্য ভারতের সম্মতির প্রয়োজন হবে।
কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রকল্পও ঢিমেতালে
ভারতীয় ঋণের প্রকল্পগুলোর মধ্যে একমাত্র চলমান রয়েছে কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রায় ৫২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্নির্মাণের কাজ। গত নভেম্বর পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৫১ শতাংশ। ৬৭৮ কোটি টাকার এ প্রকল্পে চুক্তি অনুযায়ী ভারত ঋণ দেবে ৫৫৬ কোটি টাকা। বর্তমানে সরকারি অর্থায়নে কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম দফা বর্ধিত মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর। ৫ আগস্টের পর প্রকল্পসংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ অনেক কর্মকর্তা ভারতে আটকা পড়েন। থমকে যায় কাজ।
রেল কর্তৃপক্ষ এখন যা ভাবছে
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ প্রকল্পে জাপান আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই জাপানকে কাজটি দেওয়ার জন্য রেলওয়ে থেকে নতুন করে প্রকল্প পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। পছন্দ হলে জাপান এতে অর্থায়ন করবে।
রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুরু না হওয়া প্রকল্প তিনটিতে ভারত অর্থায়ন না করলে বিকল্প চিন্তা করবে রেল। জরুরি হচ্ছে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ। এটি জাপানের অর্থায়নে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-টঙ্গী প্রকল্প নিয়ে। এটি হয়তো ভারত ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।
রেল খাতে ভারতের এলওসি প্রকল্পগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হবে। জানতে চাওয়া হবে, তাঁরা এখন কী ভাবছেন। এরপর এ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। এখনই হুট করে বলে দেওয়া সম্ভব নয়, এলওসি থেকে বের হয়ে সরকারের নিজস্ব বা অন্য কোনো অর্থায়নে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে।’
রেলের সূত্রমতে, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এলওসি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এ বিষয়ে অবগত নন জানিয়ে বলেন, ‘এমন কী শর্ত আছে, তা জানতে হবে। তারা কী নতুন পরিকল্পনা করছে, সেগুলো সবিস্তারে বলুক।... তারা নিরাপত্তা ইস্যুতে আবেদন জানিয়েছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে যাহোক, এলওসি প্রকল্পগুলো নিয়ে খুব বেশি দিন বসে থাকার সুযোগ নেই।’
লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি), অর্থাৎ ঋণপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাঁচ প্রকল্পে ভারতীয় অর্থায়ন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকমতো ঋণের অর্থ না পাওয়ায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তিনটি প্রকল্প শুরুই হয়নি। একটি প্রকল্পের কাজ পাঁচবার মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি। থমকে যাওয়া অন্যটি নিজস্ব অর্থায়নেই করার কথা ভাবছে রেলওয়ে।
ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা শেখ হাসিনার পতনের পর এসব প্রকল্পের কাজে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। ৫ আগস্টের পর প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে টানাপোড়েনের জেরে কয়েকটি প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদার নিজ দেশে চলে যান। রেলসূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের রেলপথ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এগুলোসহ রেলের বিভিন্ন প্রকল্প গুরুত্বসহকারে দেখছেন। তবে ইতিমধ্যে কয়েকবার আলোচনা হলেও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
ভারতীয় ঋণের আওতায় রেলের মোট প্রকল্প ছয়টি। এর মধ্যে গত ১০ বছরে আলোর মুখ দেখেছে শুধু খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্প। দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলপথ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ শুরুই হয়নি। সার্বিক অগ্রগতি মাত্র শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ। খুলনা-দর্শনা রেলপথ নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথের কাজের অগ্রগতি ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। কাজ চলমান ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইন ও কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ প্রকল্পের। প্রকল্পগুলোর মোট আর্থিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা।
এলওসি ঋণের শর্তে বলা হয়েছিল, প্রকল্পগুলোর ৭৫ শতাংশ অর্থায়নই হবে ভারত থেকে। বাকি ২৫ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ। ভারতীয় ঋণের পুরো অর্থ দেবে দেশটির এক্সিম ব্যাংক। চুক্তি অনুসারে প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ পণ্য-সেবাই ভারত থেকে আমদানি করতে হবে।
এলওসি অর্থাৎ লাইন অব ক্রেডিট হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের ঋণের ব্যবস্থা। নমনীয়তা এই ঋণের একটি সুবিধার দিক। সম্ভাব্য অসুবিধার মধ্যে রয়েছে সুদের উঁচুহার ও অতিরিক্ত ব্যয়ের আশঙ্কা।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ প্রকল্পে অর্থছাড় হচ্ছে না
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ আগস্ট। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন থেকে বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন করা হয়। কিন্তু এর কাজ শুরুই হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঋণের অর্থছাড় নিয়ে ভারতের এক্সিম ব্যাংককে পাঁচটি চিঠি দিয়েও উত্তর পাওয়া যায়নি। শর্ত অনুযায়ী এক্সিম ব্যাংক ঠিকাদারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা দিলে দরপত্র আহ্বান করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সে তালিকার জন্য গত বছরের অক্টোবরে চিঠি দেওয়া হলেও এখনো জবাব আসেনি।
প্রকল্পের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম ফিরোজী গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো কিছুতে ভারতের সম্মতি চেয়ে চিঠি দিলে সময়মতো জবাব আসে না।’
ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
রেলে ভারতীয় ঋণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে ধরা হয় ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইন। ২০১২ সালে প্রকল্পটি অনুমোদিত হওয়ার পর ১০ বছরেরও বেশি কেটে গেছে। দরপত্রেই লেগেছে ৬ বছর। সূত্র বলছে, এ প্রকল্পের মোট অগ্রগতি ৩৭ শতাংশ। এতে ভারতীয় ঋণ ২ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, আর বাংলাদেশ দেবে ৫২১ কোটি টাকা।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়াকে ডাকা হয়েছিল। হাইকমিশন থেকে প্রাথমিকভাবে ভারতের এতে অর্থায়ন না করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত জুনে বাড়তি ঋণসহায়তার জন্য এক্সিম ব্যাংকে আবেদন জানালেও তাদের সাড়া মেলেনি। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করলেও আশানুরূপ বার্তা পাওয়া যায়নি।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভারতীয় দূতাবাসে বৈঠকে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পারিশ্রমিক পুনর্মূল্যায়ন এবং ভারত সরকারের নতুন এলওসি নীতিমালার শর্ত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রকল্পে কেনাকাটা, সমীক্ষা, অর্থ ব্যয় মূল্যায়নে ভারত কিছু শর্ত আরোপের কথা জানিয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় এসব শর্তের উল্লেখ ছিল না। সর্বশেষ গত ২৪ নভেম্বর রেলওয়েতে স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এক্সিম ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাড়া না দিলে প্রকল্পটি নতুন বিদেশি সহায়তা বা নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে চুক্তি অনুযায়ী, এজন্য ভারতের সম্মতির প্রয়োজন হবে।
কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রকল্পও ঢিমেতালে
ভারতীয় ঋণের প্রকল্পগুলোর মধ্যে একমাত্র চলমান রয়েছে কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রায় ৫২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্নির্মাণের কাজ। গত নভেম্বর পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৫১ শতাংশ। ৬৭৮ কোটি টাকার এ প্রকল্পে চুক্তি অনুযায়ী ভারত ঋণ দেবে ৫৫৬ কোটি টাকা। বর্তমানে সরকারি অর্থায়নে কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম দফা বর্ধিত মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর। ৫ আগস্টের পর প্রকল্পসংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ অনেক কর্মকর্তা ভারতে আটকা পড়েন। থমকে যায় কাজ।
রেল কর্তৃপক্ষ এখন যা ভাবছে
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ প্রকল্পে জাপান আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই জাপানকে কাজটি দেওয়ার জন্য রেলওয়ে থেকে নতুন করে প্রকল্প পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। পছন্দ হলে জাপান এতে অর্থায়ন করবে।
রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুরু না হওয়া প্রকল্প তিনটিতে ভারত অর্থায়ন না করলে বিকল্প চিন্তা করবে রেল। জরুরি হচ্ছে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ। এটি জাপানের অর্থায়নে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-টঙ্গী প্রকল্প নিয়ে। এটি হয়তো ভারত ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।
রেল খাতে ভারতের এলওসি প্রকল্পগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হবে। জানতে চাওয়া হবে, তাঁরা এখন কী ভাবছেন। এরপর এ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। এখনই হুট করে বলে দেওয়া সম্ভব নয়, এলওসি থেকে বের হয়ে সরকারের নিজস্ব বা অন্য কোনো অর্থায়নে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে।’
রেলের সূত্রমতে, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এলওসি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এ বিষয়ে অবগত নন জানিয়ে বলেন, ‘এমন কী শর্ত আছে, তা জানতে হবে। তারা কী নতুন পরিকল্পনা করছে, সেগুলো সবিস্তারে বলুক।... তারা নিরাপত্তা ইস্যুতে আবেদন জানিয়েছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে যাহোক, এলওসি প্রকল্পগুলো নিয়ে খুব বেশি দিন বসে থাকার সুযোগ নেই।’
২০২৫ সালে সবচেয়ে বড় রকমের পরিবর্তন হবে। হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগরে পরিবর্তন হবে। এ অঞ্চলে কোনো নেতা নেই, যিনি বঙ্গোপসাগরে বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয়ভাবে নেতৃত্ব দান করতে পারবেন। আমাদের নতুন প্রতিবেশী আসতে পারে, নতুন রাষ্ট্রের উত্থান হতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া উচিত—দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ
২ ঘণ্টা আগেআজ শনিবার ঢাকার হেয়ার রোডের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার বাসভবনের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এ কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্তদের মামলা আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্তদের মামলা ইনশা আল্লাহ আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।’
৩ ঘণ্টা আগেঅ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা যত বেশি চাপে রাখবেন, আমরা তত বেশি এই বিষয়টাকে (বিচার) সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় চেষ্ট থাকব। আপনারা যত বেশি অতন্দ্র প্রহরীর মতো দায়িত্ব পালন করবেন, আমরা রাষ্ট্রকে এবং জনগণের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তত বেশি এজেন্ডা ভিত্তিক সাহসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাব।’
৩ ঘণ্টা আগে