মার্কিন ভিসা নীতি সরকার হটানোর কৌশল: সংসদে মেনন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ১৯: ৩৩
আপডেট : ১৪ জুন ২০২৩, ২০: ১১

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি বর্তমান সরকারকে হটানোর কৌশল বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এটিকে ‘রেজিম চেঞ্জে’র কৌশলের অংশ বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেন, তারা সেন্ট মার্টিন চায়, কোয়াড্রিল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়ালগ (কোয়াডে) বাংলাদেশকে চায়। বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সবকিছু করছে।’ 

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু, তাদের শত্রুর প্রয়োজন নেই জানিয়ে মেনন বলেন, বেশ কিছু সময় আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তার বাগে রাখতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এখন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এটা কেবল, দুরভিসন্ধিমূলকই নয়, তাদের রেজিম চেঞ্জের কৌশলের অংশ। তারা সেন্ট মার্টিন চায়, কোয়াডে বাংলাদেশকে চায়। 

বঙ্গবন্ধুর হত্যার পেছনে আমেরিকার কালো হাত ছিল দাবি করে মেনন বলেন, এখন আবার বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সবকিছু করছে। 

সরকারের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মেনন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন করে আমি বলতে চাই, বাইডেন সাহেব ট্রাম্পকে সামলান। আমাদের ঘর আমরা সামলাব, নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে রেখেই হবে। বিএনপির উচিত হবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। তারেক রহমান নির্বাচন না করে ২০২৯-এর জন্য অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু বিএনপি এর মধ্যে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। তার সেই স্বপ্নও পূরণ হবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে যাবে।’ 

জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার সমালোচনা করেন মেনন। তিনি বলেন, ‘জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য আইনমন্ত্রী মাঝে মাঝেই সরকারের উদ্যোগের কথা বলেন। সেই জামায়াতকে পুলিশ বেশ সমাদর করে অন্যের সভা সরিয়ে নিতে বাধ্য করে, জামায়াতকে ১০ বছর পর প্রকাশ্য সভা করার অনুমতি দিয়েছে। এটা কিসের আলামত আমরা জানি না।’ 

রাশেদ খান মেনন বলেন, এটা স্পষ্ট করে বলা প্রয়োজন জামায়াত যুদ্ধাপরাধীর দল, ঘাতক দল। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের রায়ে এ কথা বলেছে। এর জন্য নতুন করে আদালতের রায়ের প্রয়োজন নেই। জামায়াত কিন্তু তার অবস্থান থেকে এক চুলও সরে নাই। ওই সমাবেশ করে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিরই পুনরাবৃত্তি করেছে। 

বিএনপির সাবেক নেতা প্রয়াত নাজমুল হুদা বক্তব্যের সমর্থন করে মেনন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত একই বৃন্তের দুটি ফুল। যে কথাটা আমি সব সময় বলি, এখনো বলছি সাপের মুখে চুমু খেলে সাপ ছোবলই মারে। আদর করে না। জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গে তোষামোদ-সমঝোতা সেই ফলই দেবে।’ 

প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে মেনন বলেন, এই বাজেটে বাংলাদেশের বর্তমান কার্যত অনুপস্থিত। বাজেটের ধারা বর্ণনায় অর্থমন্ত্রীর প্রধান বিষয় ছিল গত দেড় দশকের অতীতের অর্জন। আর ভবিষ্যৎ দশকের সুখ স্বপ্নের কথা। বাজেট শুনে দেখে মনে হয়নি এটা সংকটকালের বাজেট।   

মেনন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শতভাগ বিদ্যুতায়নের যে গৌরব অর্জন করেছিলেন, সাম্প্রতিককালেই কেবল নয়, বেশ কিছুদিন ধরে দেশের অধিকাংশ স্থানকে অধিকাংশ সময় অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে তাতে কালিমা লেপন করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে, এটাই বাস্তবতা।’ 

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করা যাবে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্পট মার্কেটে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়া, আমদানিকৃত কয়লার মূল্য পরিশোধ করতে না পারার কারণে যথাসময়ে জ্বালানি আনা সম্ভব হয়নি। আর এ ক্ষেত্রে এর মূলে রয়েছে ভ্রান্ত জ্বালানি আমদানি নীতি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত