নারী পাচার করতেন টিকটক হৃদয়, ঢাকায় ৪ সহযোগীকে আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image

ঢাকা: ভারতে এক তরুণীকে অমানুষিক যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আলোচনায় ঢাকার মগবাজারের টিকটক হৃদয় বাবু। এরই মধ্যে বেঙ্গালুরু পুলিশের হাতে ১ নারীসহ ৫ জন গ্রেপ্তারও হয়েছে।

আজ শনিবার হৃদয়ের সঙ্গে টিকটক ভিডিও বানাতো এমন চার তরুণকে আটক করেছে হাতিরঝিল থানা-পুলিশ। ধর্ষণে ও মানবপাচারের বিষয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে হৃদয় বাবুর নারী পাচারের নানান তথ্য। টিকটকের মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর তরুণীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলত হৃদয়। শনিবার পর্যন্ত তিনজন তরুণীর খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। যাদের ভারতে পাচারের পর জোর করে দেহব্যবসাতে বাধ্য করেছে হৃদয় ও তার গ্যাংয়ের ভারতীয় সদস্যরা।

গত ঈদ উল ফিতরের আগে–পরে কয়েকজন তরুণী পালিয়ে এসেছে ভারত থেকে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত পাচারের শিকার হয়ে ফিরে আসা তরুণী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি হাফিজ আল ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমাদের হেফাজতে তিনজন মেয়ে আছে। যারা ভারত থেকে পালিয়ে এসেছেন। ভারতের বেঙ্গালুরুর আনন্দপুরের একটি হোটেল রাখা হয়েছিল তাঁদের। সেখানে দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করা হতো বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের টিকটকের মডেল বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাচার করার করেছে হৃদয় বাবু।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে, এমনও দিন গেছে একেকজনকে ২০ জন ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করত হৃদয় ও তাঁর সহযোগীরা।

শনিবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের তেজগাঁও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, স্কুল–কলেজ পড়ুয়া থেকে শুরু করে বিবাহিত নারীদের টার্গেট করত হৃদয় বাবু। টিকটক ভিডিও তৈরি করতে যেয়ে বিভিন্ন সময় পরিচয় হওয়া তরুণ-তরুণীরা মিলে ফেসবুকে একটি গ্রুপ বানিয়েছে। গ্রুপটির মাধ্যমেই মূলত মানবপাচার প্রক্রিয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো। সেখান থেকে বেতনভুক্ত সদস্যরা নারীদের টার্গেট করে ফুসলিয়ে বিদেশে পাচার করে।

বাংলাদেশের কয়েকটি গ্রুপ ও ভারতের কয়েকটি রাজ্যের অপরাধী চক্র মিলে সংঘবদ্ধ এ মানবপাচার চক্রটি তৈরি করেছে। যার আওতা দুবাইসহ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত।

শহীদুল্লাহ জানান, এ চক্রের আস্তানা বেঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায়। ভারতের বিভিন্ন মার্কেট, সুপার শপ, বিউটি পার্লারে লোভনীয় বেতনে চাকরির কথা বলে পাচার করা হতো। তারপর বাধ্য করা হতো দেহব্যবসাতে।

কেউ দেহব্যবসাতে রাজি না হলে জোর করে মাদক খাইয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও করত তাঁরা। পালাতে চাইলে সে ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে এবং পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। একপর্যায়ে বাধ্য হয়েই বিদেশের মাটিতে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিত তরুণীরা।

পুলিশ জানায়, ভাইরাল ভিডিওটির ঘটনায় জড়িত সবাই অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত