এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
যুগ্ম জেলা পদ মর্যাদার এক বিচারককে দুই ধাপ ডিঙিয়ে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি দিতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ওই বিচারক ১৬ বছর ধরে চাকরিতেই নেই। ২০০৮ সালে সাময়িক বরখাস্ত ও ২০১০ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছিল।
তবে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ২০১৪ সালে ওই বিচারককে চাকরি ফেরত দিতে নির্দেশ দেন। এরপর সরকার আপিল করলে ২০২১ সালেও চাকরি ফেরতের রায় বহাল থাকে। এরপরও তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁকে চাকরিতে ফেরানো হয়নি।
অথচ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুর, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলাবিধান, চাকরির অন্যান্য শর্তাবলি) বিধিমালা, ২০০৭ অনুযায়ী যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য যুগ্ম জেলা জজ পদে দুই বছরের বিচারিক কাজের অভিজ্ঞতাসহ ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য অতিরিক্ত জেলা জজ পদে দুই বছরের বিচারিক অভিজ্ঞতাসহ মোট ১৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। আর সিনিয়র জেলা জজ হতে জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
অর্থাৎ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা, ২০০৭–এর বাইরে গিয়ে যুগ্ম জেলা পদ মর্যাদার ওই বিচারককে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি দিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। ওই পরিস্থিতির মধ্যেই ৬ আগস্ট হঠাৎ করে আযাদ সুবহানীকে চাকরিতে যোগদান করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর একদিন পরই আবার প্রস্তাব পাঠানো হয় অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি দিতে।
মন্ত্রণালয়ের ওই প্রস্তাব বিবেচনার জন্য পাঠানো হয় সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায়। তবে ফুলকোর্ট সভায় বিবেচনাধীন থাকা অবস্থাতেই ওই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে গত ১৮ সেপ্টেম্বর নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এবার সরাসরি সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি দিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।
সরকার পতনের পরের দিনই তড়িঘড়ি করে যোগদানের প্রজ্ঞাপন, একদিন পরই পদোন্নতির প্রস্তাব এবং ফুলকোর্ট সভায় বিবেচনাধীন অবস্থাতেই নতুন করে বিধির বাইরে গিয়ে ওই বিচারকের পদোন্নতির প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিচারিক অভিজ্ঞতা ছাড়া এই রকম পদোন্নতির নজির নেই। এই বিষয়ে জানতে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম রব্বানী আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘এ রকম কোনো নজির আছে বলে আমার জানা নেই। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্টে বিবেচনাধীন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. শাহজাহান সাজু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাধারণত এটা হয় না। এর আগে এ রকম কোনো নজির নেই। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কী হবে সেটি সুপ্রিম কোর্ট ও মন্ত্রণালয়ের বিষয়।
আযাদ সুবহানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মজলুম ছিলাম। ১৬ বছর হাল না ছেড়ে ফাইট করেছি। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর যোগদান করতে গিয়েছিলাম। তবে তৎকালীন আইন সচিব বললেন আপিলের মেয়াদ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে, তাঁরা আপিল করবেন না। তবে সাড়ে ৫ মাস পর তাঁরা (মন্ত্রণালয়) আপিল করে দিলেন। ২০২১ সালের আপিলের রায়ও পেলাম। কিন্তু আমাকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি।’
সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত থাকা আযাদ সুবহানীকে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ করতে প্রস্তাব এসেছে। বিষয়টি জিএ কমিটি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় পাঠিয়েছেন। আগামী ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে ফুলকোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
সৈয়দ আজাদ সুবহানী ২০০৮ সালে যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে নোয়াখালীতে কর্মরত থাকাকালে বিচারকাজ পরিচালনায় অনিয়ম, বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ব্যবস্থা নিতে তৎকালীন আইন উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতি বরাবর ওই বছরের ৮ জুলাই চিঠি দেওয়া হয় নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে।
আযাদ সুবহানীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য শুরুতে কুমিল্লার তৎকালীন জেলা জজ এ. কে. এম জহির আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে মর্মে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিলে বিভাগীয় মামলা করা হয়। পরে আযাদ সুবহানীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে ওই মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ফেনীর তৎকালীন জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলামকে।
জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলামের তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হলেও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ মেলে। এরপর মন্ত্রণালয় আযাদ সুবহানীকে সতর্ক করে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দিতে সুপ্রিম কোর্টে প্রস্তাব পাঠায়। তবে সুপ্রিম কোর্টের জিএ কমিটি (প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৪ সদ্যের প্রশাসনিক কমিটি) তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর অনুমোদন দেয়। এরপর বিষয়টি পাঠানো হয় সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট (সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের সব বিচারপতির সমন্বয়ে বৈঠক) সভায়। ফুলকোর্ট সভাও ২০১০ সালের ৩ নভেম্বর বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।
আযাদ সুবহানীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে সতর্ক করে বাধ্যতামূলক অবসরের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পুনরায় প্রস্তাব পাঠানো হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অসম্মতি জানালে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়, কেন তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে না, মর্মে সরকার দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। এরপর জাতীয় দৈনিকে বিষয়টি প্রকাশ করা হলেও তিনি শাস্তির বিষয়ে কোনো জবাব দেননি। তাই সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আযাদ সুবহানীকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো।
এদিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে চট্টগ্রামের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন আযাদ সুবহানী। ট্রাইব্যুনাল ওই সিদ্ধান্ত বেআইনি ঘোষণা করে সব বকেয়া সুবিধাসহ চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর সরকার ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে আপিল করে। প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল সরকারের করা আপিল খারিজ করে ২০২১ সালের ৯ মার্চ ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন। তবে রায় অনুযায়ী মন্ত্রণালয় থেকে তাঁর চাকরি ফেরত দিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। যার কারণে তিনি যোগ দিতে পারেননি।
আরও খবর পড়ুন:
যুগ্ম জেলা পদ মর্যাদার এক বিচারককে দুই ধাপ ডিঙিয়ে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি দিতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ওই বিচারক ১৬ বছর ধরে চাকরিতেই নেই। ২০০৮ সালে সাময়িক বরখাস্ত ও ২০১০ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছিল।
তবে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ২০১৪ সালে ওই বিচারককে চাকরি ফেরত দিতে নির্দেশ দেন। এরপর সরকার আপিল করলে ২০২১ সালেও চাকরি ফেরতের রায় বহাল থাকে। এরপরও তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁকে চাকরিতে ফেরানো হয়নি।
অথচ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুর, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলাবিধান, চাকরির অন্যান্য শর্তাবলি) বিধিমালা, ২০০৭ অনুযায়ী যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য যুগ্ম জেলা জজ পদে দুই বছরের বিচারিক কাজের অভিজ্ঞতাসহ ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য অতিরিক্ত জেলা জজ পদে দুই বছরের বিচারিক অভিজ্ঞতাসহ মোট ১৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। আর সিনিয়র জেলা জজ হতে জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
অর্থাৎ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা, ২০০৭–এর বাইরে গিয়ে যুগ্ম জেলা পদ মর্যাদার ওই বিচারককে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি দিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। ওই পরিস্থিতির মধ্যেই ৬ আগস্ট হঠাৎ করে আযাদ সুবহানীকে চাকরিতে যোগদান করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর একদিন পরই আবার প্রস্তাব পাঠানো হয় অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি দিতে।
মন্ত্রণালয়ের ওই প্রস্তাব বিবেচনার জন্য পাঠানো হয় সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায়। তবে ফুলকোর্ট সভায় বিবেচনাধীন থাকা অবস্থাতেই ওই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে গত ১৮ সেপ্টেম্বর নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এবার সরাসরি সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি দিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।
সরকার পতনের পরের দিনই তড়িঘড়ি করে যোগদানের প্রজ্ঞাপন, একদিন পরই পদোন্নতির প্রস্তাব এবং ফুলকোর্ট সভায় বিবেচনাধীন অবস্থাতেই নতুন করে বিধির বাইরে গিয়ে ওই বিচারকের পদোন্নতির প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিচারিক অভিজ্ঞতা ছাড়া এই রকম পদোন্নতির নজির নেই। এই বিষয়ে জানতে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম রব্বানী আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘এ রকম কোনো নজির আছে বলে আমার জানা নেই। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্টে বিবেচনাধীন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. শাহজাহান সাজু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাধারণত এটা হয় না। এর আগে এ রকম কোনো নজির নেই। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কী হবে সেটি সুপ্রিম কোর্ট ও মন্ত্রণালয়ের বিষয়।
আযাদ সুবহানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মজলুম ছিলাম। ১৬ বছর হাল না ছেড়ে ফাইট করেছি। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর যোগদান করতে গিয়েছিলাম। তবে তৎকালীন আইন সচিব বললেন আপিলের মেয়াদ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে, তাঁরা আপিল করবেন না। তবে সাড়ে ৫ মাস পর তাঁরা (মন্ত্রণালয়) আপিল করে দিলেন। ২০২১ সালের আপিলের রায়ও পেলাম। কিন্তু আমাকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি।’
সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত থাকা আযাদ সুবহানীকে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ করতে প্রস্তাব এসেছে। বিষয়টি জিএ কমিটি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় পাঠিয়েছেন। আগামী ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে ফুলকোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
সৈয়দ আজাদ সুবহানী ২০০৮ সালে যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে নোয়াখালীতে কর্মরত থাকাকালে বিচারকাজ পরিচালনায় অনিয়ম, বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ব্যবস্থা নিতে তৎকালীন আইন উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতি বরাবর ওই বছরের ৮ জুলাই চিঠি দেওয়া হয় নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে।
আযাদ সুবহানীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য শুরুতে কুমিল্লার তৎকালীন জেলা জজ এ. কে. এম জহির আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে মর্মে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিলে বিভাগীয় মামলা করা হয়। পরে আযাদ সুবহানীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে ওই মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ফেনীর তৎকালীন জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলামকে।
জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলামের তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হলেও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ মেলে। এরপর মন্ত্রণালয় আযাদ সুবহানীকে সতর্ক করে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দিতে সুপ্রিম কোর্টে প্রস্তাব পাঠায়। তবে সুপ্রিম কোর্টের জিএ কমিটি (প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৪ সদ্যের প্রশাসনিক কমিটি) তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর অনুমোদন দেয়। এরপর বিষয়টি পাঠানো হয় সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট (সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের সব বিচারপতির সমন্বয়ে বৈঠক) সভায়। ফুলকোর্ট সভাও ২০১০ সালের ৩ নভেম্বর বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।
আযাদ সুবহানীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে সতর্ক করে বাধ্যতামূলক অবসরের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পুনরায় প্রস্তাব পাঠানো হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অসম্মতি জানালে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়, কেন তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে না, মর্মে সরকার দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। এরপর জাতীয় দৈনিকে বিষয়টি প্রকাশ করা হলেও তিনি শাস্তির বিষয়ে কোনো জবাব দেননি। তাই সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আযাদ সুবহানীকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো।
এদিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে চট্টগ্রামের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন আযাদ সুবহানী। ট্রাইব্যুনাল ওই সিদ্ধান্ত বেআইনি ঘোষণা করে সব বকেয়া সুবিধাসহ চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর সরকার ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে আপিল করে। প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল সরকারের করা আপিল খারিজ করে ২০২১ সালের ৯ মার্চ ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন। তবে রায় অনুযায়ী মন্ত্রণালয় থেকে তাঁর চাকরি ফেরত দিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। যার কারণে তিনি যোগ দিতে পারেননি।
আরও খবর পড়ুন:
পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে ৫৪ জন কর্মকর্তাকে বদলি ও নতুন কর্মস্থলে পদায়ন করা হয়েছে। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে ৩১ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং ২৩ জন সহকারী পুলিশ সুপার রয়েছেন। গতকাল বুধবার (২০ নভেম্বর) প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন বিদায়ী পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।
১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, বাংলাদেশে আগের সরকারের সময় মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যা ছিল, বর্তমান সরকারের সময়ও সেটাই আছে। স্থানীয় গতকাল বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার...
৩ ঘণ্টা আগেতত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেওয়ার সুপারিশ করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকেরা। আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকেরা এসব সুপারিশ করেন
৩ ঘণ্টা আগেআইনজীবী জেড আই খান পান্না মানবিক বিবেচনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। গণমামলা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়েও মন্তব্য করেছেন তিনি।
৩ ঘণ্টা আগে