হজযাত্রার প্রস্তুতিতে ঘাটতি, বাড়ছে উদ্বেগ

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২২, ০০: ১১
আপডেট : ২৫ মে ২০২২, ১৩: ১৯

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় দুই বছর পর পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন দেশের মানুষ। কিন্তু সুযোগ মিললেও প্রস্তুতিতে রয়ে গেছে ঘাটতি। হজ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গেলে কত খরচ হবে, সে বিষয়ে আলাদা আলাদা প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এবার মক্কায় বাড়ি ভাড়া নেওয়া এবং এ খাতে কত খরচ হবে, তার হিসাবসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুনিশ্চিত কোনো তথ্য এখনো বাংলাদেশ হজ মিশনের পক্ষ থেকে পায়নি তারা। এতে হজযাত্রীদের মাথাপিছু কত খরচ হতে পারে, সে বিষয়েও কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

এ বিষয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘সৌদি আরবে কত খরচ হবে সেই হিসাব আগে জানুয়ারি মাসেই পাওয়া যেত। এবার বাড়িভাড়াসহ মূল কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমরা চাচ্ছি ধর্ম মন্ত্রণালয় ও মক্কা হজ মিশন তাড়াতাড়ি বলুক সেখানে কত খরচ হবে, আমাদের খরচের হিসাব দিক। এখনো যদি আমরা খরচের হিসাব না জানি তাহলে কীভাবে হবে। এতে টাকার অঙ্ক বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।’

আগে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, হজ ফ্লাইট শুরু হবে ৩১ মে। এখন ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী ৫ জুন থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। এ অবস্থায় ৫ জুনের আগে ঢাকা থেকে হজযাত্রীদের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, ফ্লাইটের ৩১ মের ল্যান্ডিং স্লট ৫ জুনে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ কারণে আগামী ৫ জুন থেকে ফ্লাইট শুরু করতে বিমান মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে যে হজযাত্রীরা যাবেন, তাঁদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকাতেই করার কথা রয়েছে। কিন্তু ৪০ জন জনবলসহ সৌদি ইমিগ্রেশন টিম ২ জুনের আগে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবে না। তা ছাড়া প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এখনো ঢাকায় পৌঁছায়নি। সেসব যন্ত্রপাতি সৌদি ইমিগ্রেশন টিমের সঙ্গে ঢাকায় আসবে। তারপর সেগুলো বিমানবন্দরে বসাতে হবে। ফলে আগামী ৫ জুনের আগে তাদের পক্ষে ঢাকা থেকে হজযাত্রীদের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই (৯ জিলহজ মোতাবেক) হজ পালিত হওয়ার কথা। এ বছর বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন হজে যেতে পারবেন।

এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সৌদি এয়ারলাইনসের পাশাপাশি সৌদি আরবভিত্তিক ফ্লাইনাসও হজযাত্রী বহন করবে। হজযাত্রীর অর্ধেক পরিবহন করবে বিমান, বাকি অর্ধেক যাত্রী যাবেন ফ্লাইনাস ও সৌদি এয়ারলাইনসে।

পরিবর্তিত তারিখ অনুযায়ী ৫ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে হজ ফ্লাইট সৌদি আরব যাবে। তারপর দিনে দুটি করে ফ্লাইট যাবে। মক্কাগামী হজ ফ্লাইট শেষ হবে ৩ জুলাই। তারপর হাজিদের নিয়ে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১৩ জুলাই থেকে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম আজকের পত্রিকা'কে বলেছেন, এবার খুব কম সময়ে হজযাত্রীদের সব বিষয় ঠিক করতে হচ্ছে। সৌদি আরবে বাড়িভাড়াসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। এসব কারণে হজ ফ্লাইট পেছাতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু বেশি পেছালে শেষ পর্যন্ত সব যাত্রীকে আমরা হজে পাঠাতে পারব না।’

এবারের হজযাত্রা সম্পর্কিত খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোস্তফা কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বছর হজযাত্রার জন্য বিমান ৬৪টি ফ্লাইট চালাবে। তিনি বলেন, বাস্তবতার কারণে কিছু হজযাত্রী সঠিক সময়ে আসেন না, ফলে ফ্লাইট মিস করেন। এসব যাত্রীকেও নেওয়ার দায়িত্ব বিমানের। সব মিলিয়ে তারতম্য থাকবে। তবে বড় কোনো পরিবর্তন হবে না।

হজ ফ্লাইট ঘোষণার পর জেট ফুয়েলের দাম আরেক দফায় বাড়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করে বিমানের এমডি বলেন, জেট ফুয়েলের দাম যদি এভাবে বাড়তে থাকে, তখন বিমানকেও ভাবতে হতে পারে। তবে প্যাকেজ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু যোগ করতে হবে কি না, সেটা বিমান বোর্ড অথবা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত