গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সুশীল সমাজেরও ভূমিকা রয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৯: ২৭

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে শুধু সরকার নয়, সুশীল সমাজেরও ভূমিকা রয়েছে। সুশীল সমাজ যেখানে দৃঢ়, সেখানে চাইলেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা সম্ভব হয় না।

আজ সোমবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন-২০২৪ (বঙ্গোপসাগর সংলাপ-২০২৪) এর শেষ দিনে বক্তাদের আলোচনায় এ সব কথা উঠে এসেছে।

‘ন্যারেটিভস অব হোপ: মিডিয়া, সিভিল সোসাইটি অ্যান্ড দ্য পারসুইট অব পিস’-শীর্ষক অধিবেশনে পাকিস্তানের ইন্সটিটিউট অব স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের পরিচালক সোহাইল মাহমুদ বলেন, ‘পাকিস্তানে গণমাধ্যমে সেখানকার সমাজের স্পন্দন তুলে ধরে। আমাদের দেশেও সন্ধ্যায় টকশো হয়। সেখানে রাজনৈতিক মতামত, নীতিনির্ধারণীসহ নানা বিষয়ে বিতর্ক চলে। মানুষ এগুলোতে সম্পৃক্ত হতে পারে। গণমাধ্যম স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে সুশীল সমাজেরও ভূমিকা রয়েছে।’

প্যানেল আলোচনাকালে ভারতের রিপাবলিক বাংলা টিভি চ্যানেলের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সেখানকার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেবজ্যোতি চন্দ বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, সব বিষয়েই চ্যানেলটির এপ্রোচ লাউড। আমি ওই চ্যানেলে গিয়েছিলাম আলোচনায়। আমি বলেছি, প্লিজ আস্তে কথা বলুন। শুধু বাংলাদেশ নয়, সবার ক্ষেত্রেই তারা এমন। আমি বলবো, এটা উপেক্ষা করুন। ভারত বড় দেশ। প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রথমেই উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সুতরাং এখানে অন্য কিছু ভাবার কারণ নেই।’

এই অধিবেশনে সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন পোল্যান্ডের সাংবাদিক ডেভিড প্যাট্রিশিয়ান। আলোচনায় আরও অংশ নেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাভিন মুরশিদ, কানাডার রিশিহুড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক অর্জুন সিং কাদিয়ান প্রমুখ।

‘ডিফেন্ডিং দ্য ডিফেন্ডার্স: সলিউশন্স ফর এ সেফার ওয়ার্ল্ড ফর হিউম্যান রাইটস এডভোকেটস’ শীর্ষক অধিবেশনে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান বলেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশই বিশ্ব সংস্থার মানবাধিকার রক্ষার মতো বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু অনেক দেশের সরকার এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চায় না। জেলে বন্দী হওয়া, গুম হওয়া, অপরাধী বানানো, অনলাইনে হয়রানির শিকার হওয়ার মতো নানা ধরনের আতংকের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার কর্মীদের যেতে হয়। বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোতে এর প্রত্যেকটিই ঘটেছে।

ভারতের মান্ত্রা ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা সান্থিয়ে ম্যারিয়েট ডি’সুজা বলেন, গণতন্ত্র থাকা মানেই তা নিঁখুত নয়। বিশেষ করে এশিয়াতে। মানবাধিকারের জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন প্রয়োজন। মানুষ কীভাবে এটাকে দেখতে চায়, কীভাবে গ্রহণ করতে চায়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

চাকমা সার্কেল প্রধানের উপদেষ্টা রানী ইয়ান ইয়ান বলেন, অনেক ক্ষেত্রে গণমাধ্যমও মানবাধিকারকর্মীদের পাশে থাকে না। গণমাধ্যমে তাদের সন্ত্রাসী, অসভ্য বিচ্ছন্নতাবাদী হিসেবে দেখানো হয়। এভাবে প্রচার করতে থাকলে মানবাধিকারকর্মীদের বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকে না। তবুও নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলে যেতে হবে। নিজেদের অধিকারের জন্য আওয়াজ তুলতে হবে।’

এই অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সিজিএসের (সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ) জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী আপন জহির।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্ট্যাডিজের (সিজিএস) আয়োজনে তিন দিনের আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সংলাপের শেষ দিন আজ। তিন দিনব্যাপী এই সংলাপে বিশ্বের ৮০টি দেশের লেখক, গবেষক, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আমলা, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত