ডিবিতে আয়নাঘর-ভাতের হোটেল থাকবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪: ২০
Thumbnail image
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে আয়নাঘর বলতে কোনো কিছু থাকবে না, এখানে কোনো ভাতের হোটেলও থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। 

৫ আগস্টের আগে ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন ইউনিটে টর্চার সেল বা আয়নাঘর ছিল, ডিবিতে এখনো কোনো আয়নাঘর আছে কি না, এমন প্রশ্নের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ডিবি কার্যালয়ে আয়নাঘর বলতে এখানে কোনো কিছু নেই। আর কোনো ধরনের আয়নাঘর থাকবেও না। এখানে কোনো ভাতের হোটেলও থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া ডিবি পুলিশদের বলা হয়েছে—তারা সিভিল পোশাকে কোনো অভিযান বা আসামি গ্রেপ্তার করবে না। তারা অবশ্যই ডিবি জ্যাকেট ও আইডি কার্ড পড়ে অভিযানে যাবেন। আইনের বাইরে কোনো কাজ করা যাবে না।’ 

দুর্নীতি বা আইনবহির্ভূত কিছু করা হচ্ছে না, জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘যদি আমাদের কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ থাকে, তাহলে প্রকাশ করে দেন। তবে অবশ্যই সত্যি ঘটনা প্রকাশ করবেন। আপনারা ভারতের বিষয়ে অনেক সত্যি সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এ জন্য আপনারা ধন্যবাদ পাওয়ার উপযুক্ত। আপনাদের সত্য সংবাদ প্রকাশের কারণে ভারতের অপপ্রচার অনেক কমে গেছে। এভাবে আপনারা সত্য সংবাদ প্রকাশ করলে, আমাদের জন্য অ্যাকশন নিতেও সুবিধা হয়।’

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আগের চেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হয়েছে। তবে কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি।’ 

ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে, স্বীকার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গত কয়েক দিনে আমরা অনেক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’

লিবিয়াতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের আটকে রেখে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা লিবিয়া গিয়ে আটকে আছে, তারা কিন্তু আমাদের অনেক বড় সোর্স অব ইনকাম। তারা অনেক কষ্ট করে আমাদের দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। তারা আমাদের বড় সম্পদ। তাদের জন্য আমরা সর্বোচ্চ কাজ করার চেষ্টা করছি। তবে তথ্য প্রয়োজন। ভুক্তভোগীদের আমাদের কাছে এসে অভিযোগ দায়ের করার অনুরোধ রইল।’ 

টেকনাফ সীমান্ত এলাকা প্রচুর অপহরণের ঘটনা ঘটছে, এ ব্যাপারে আপনারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় যতজন অপহরণের শিকার হয়েছিল, তাদের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। আপনারা জানেন, মিয়ানমারের আরাকান আর্মি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় দখল করে রেখেছে। সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমার সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এখন আমাদের দুপক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। এখন মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আমরা সীমান্ত নিয়ে কোনো বৈঠকে বসতে পারছি না। আবার আরাকান আর্মি কোনো স্বীকৃতি পায়নি। ফলে আমাদের দুপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সীমান্ত এলাকা শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের সীমান্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।’ 

সীমান্ত এলাকায় অপহরণ ও মাদক চক্র সক্রিয় আছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘মিয়ানমার সীমানা এলাকায় অপহরণ চক্রের পাশাপাশি কয়েকটি মাদক চক্র সক্রিয় আছে। শুধু এক বদি ধরা পড়েছে। তবে বদি চক্রের অনেক সদস্য এখনো সক্রিয় রয়েছে। আমরা সবাইকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত