Ajker Patrika

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়াকে রূপপুরের ঋণ কীভাবে শোধ করবে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ছবি: এএফপি
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ছবি: এএফপি

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণের টাকা রাশিয়াকে পরিশোধ করার বিষয়টি আটকে যায়। এ বিষয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে তার সুরাহা করতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দুই দেশের সরকার। বাংলাদেশে রাশিয়ার নতুন রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার খোজিন গতকাল রোববার আশা প্রকাশ করেছেন, এই জটিলতার অবসান হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে গতকাল সৌজন্য সাক্ষাতের পর রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের কাছে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রদূত হিসেবে খোজিন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন।

২০১৬ সালে সই হওয়া একটি চুক্তির আওতায় রাশিয়ার প্রযুক্তিতে প্রায় ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার ব্যয়ে রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ব্যয়ের ৯০ ভাগ অর্থই ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া। অবশিষ্ট ১০ ভাগ ব্যয় বহন করছে বাংলাদেশ। মোট ঋণ প্রতিশ্রুতির মধ্যে রাশিয়া এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৩০ কোটি ডলার অর্থ ছাড় করেছে। এর বাইরেও প্রকল্পটির সমীক্ষা চালানোর জন্যও রাশিয়ার কাছ থেকে ৪৯ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর আগেই বাংলাদেশ ঋণের সুদ পরিশোধ করা শুরু করে। রাশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এ টাকা শোধ করা হচ্ছিল। কিন্তু দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় অর্থ পরিশোধ আটকে যায়। বর্তমানে রূপপুর প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশের কাছে রাশিয়ার পাওনা হয়েছে প্রায় ৮০০ কোটি ডলার।

সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সরকার রাশিয়ার প্রাপ্য অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি হিসাবে জমা রাখছে। সোনালী ব্যাংকে দেশটির একটি বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করার বিষয়ে দুই পক্ষ কথা বলছে। এই হিসাব থেকে রাশিয়া বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধ করতে পারবে।

এদিকে প্রকল্পটির প্রায় ৩০ ভাগ কাজ এখনো বাকি, এমন যুক্তিতে বাংলাদেশ প্রকল্পের অবশিষ্ট অর্থ ছাড় করার মেয়াদ ২০২৬ সাল ও আসল পরিশোধের সময়সীমা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাড়াতে রাশিয়াকে অনুরোধ করেছে। দেশটি এখনো এই অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার খোজিন গতকাল সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি সংবেদনশীল। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তাঁর দেশ তৈরি। এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যকার আলোচনা ইতিবাচক দিকেই এগোচ্ছে। লেনদেনের বিষয়টির সুরাহা হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রূপপুর প্রকল্প নিয়ে আলোচনার বাইরে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার বিষয়েও উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে রুশ রাষ্ট্রদূতের কথা হয়েছে। রাশিয়া কৃষি, জাহাজ নির্মাণ ও সেবা খাতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চায়। তবে খোজিন জানান, লোক নেওয়ার বিষয়ে সমঝোতার আগে তাদের বাংলাদেশে ফেরত আসার বিষয়ে চুক্তি করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত