Ajker Patrika

১ আগস্ট থেকেই কারখানা চালুর প্রস্তুতি ছিল মালিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
১ আগস্ট থেকেই কারখানা চালুর প্রস্তুতি ছিল মালিকদের

শিল্প মালিকদের দাবির মুখে কঠোরতম বিধিনিষেধ বহাল রেখেই আগামী ১ আগস্ট রোববার থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প কল–কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

মহামারির মধ্যে চলাচলে বিধিনিষেধ বা লকডাউনে বরাবর পোশাক কারখানাসহ রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানাগুলো খোলা রাখা হলেও এবারই ছিল ব্যতিক্রম। কোরবানির ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ১৪ দিনের এ ‘কঠোরতম’ বিধিনিষেধ দেয় সরকার। গত ১৩ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এরপর থেকে শিল্প মালিকেরা শিল্প কারখানা খোলার দাবিতে সরকারির বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ শুরু করেন। এখন কঠোরতম বিধিনিষেধ বহাল রেখেই শিল্প–কারখানা খুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ১৪ দিনের ছুটিতে কারখানা শ্রমিকদের প্রায় সবাই গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাঁরা কীভাবে কর্মস্থলে ফিরবেন এ নিয়ে অনেক শ্রমিকের উদ্বেগের কথা শোনা যাচ্ছে। যদিও কারখানা মালিকেরা বলছেন, ১ আগস্ট কারখানা খোলার ব্যাপারে আগে থেকেই তাঁদের প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। শ্রমিকদেরও এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।

তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ–সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, রপ্তানির এই ভরা মৌসুমে সরকার দেশের স্বার্থে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খোলার অনুমতি দিয়েছে, এ জন্য সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। এতে দেশের অর্থনীতি বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে।

বেশির ভাগ রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থিত। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গ্রামে যাওয়া শ্রমিকেরা কীভাবে রোববারের মধ্যে কর্মস্থলে ফিরবেন– এ প্রশ্নে শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, আমরা ছুটির আগেই শ্রমিকদের বলেছিলাম, ১ তারিখে কারখানা চালু হতে পারে। এ জন্য কিছু সংখ্যক শ্রমিক গ্রামে যাননি, তাঁরা প্রায়ই কারখানা কবে চালু হবে জানতে চেয়ে আমাদের কাছে ফোন করেন। এ ছাড়া গ্রামে যাওয়া শ্রমিকদের অনেকে এরই মধ্যে চলে এসেছেন। আর রোববার চালু হওয়ার পরই শতভাগ কাজ শুরু করা যাবে না। এ জন্য আমরা রপ্তানির জন্য জরুরি যেমন: প্যাকেজিং, কার্টন এসব প্রথম চালু করব।

এ ছাড়া সরকার লকডাউন শিথিল করলে শ্রমিকেরা দ্রুত কাজে যোগ দেবেন এবং কারখানা চালাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

তবে বাংলাদেশের নিটওয়্যার প্রস্তুতকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ–সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম, লম্বা ছুটি পেলে বেশির ভাগ শ্রমিক দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁদের গ্রামের বাড়ি চলে যান। ছুটিতে অধিকাংশ শ্রমিকই গ্রামে গেছেন।

তাহলে লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার মধ্যে শ্রমিকেরা কীভাবে ফিরবেন– এ প্রশ্নের জবাবে তিনিও বিজিএমইএর সহ–সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিমের অনুরূপ বক্তব্য দেন। মোহাম্মদ হাতেম বলেন, যদিও বেশির ভাগ কারখানায় আমরা শ্রমিকদের বলেছিলাম, ১ তারিখে কারখানা খুলতে পারে। শ্রমিকদেরও সেভাবে ছুটি দেওয়া আছে। রোববার কারখানা খোলার পর আমরা শ্রমিকদের উপস্থিতির হার দেখব। কারখানা চালানোর মতো শ্রমিক উপস্থিত না থাকলে তখন কীভাবে শ্রমিকদের আনা যায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগেও এভাবে গণপরিবহন বন্ধ রেখে কারখানা চালুর ঘোষণা দেওয়ায় শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছিলেন। অনেক এলাকায় ১৫–২০ কিলোমিটার হেঁটে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা। এবারও তেমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও এ নিয়ে সরকারের কোনো দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তরা মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত