Ajker Patrika

কমলাপুরে দুই ট্রেনের যাত্রা বাতিল, শিডিউল বিপর্যয়

অনলাইন ডেস্ক
গত বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার পর থেকই ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। গতকাল শুক্রবারের চিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
গত বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার পর থেকই ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। গতকাল শুক্রবারের চিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

গত বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনার পর থেকে শিডিউল বিপর্যয়ের মধ্যেই আছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। গতকাল শুক্রবার সব ট্রেন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে ও তিনটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছিল। আজ শনিবার সিলেটগামী আন্তনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং জামালপুরগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমলাপুর স্টেশনে সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আজ সকালেও ট্রেনের শিডিউলে বিপর্যয় ঘটেছে। যাত্রীদের টিকিটের রিফান্ড যথাসময়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। গতকালও অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়েছিল। সকাল থেকে প্রতিটি ট্রেনই দেরিতে ছেড়ে গেছে।

প্রতিদিন কমলাপুর স্টেশন হয়ে ১৮২টি ট্রেন চলাচল করে। অধিকাংশ ট্রেন শুধু একটি রেক দিয়ে চালানো হয়। ফলে একটি ট্রেন সময় মতো না ছাড়লে পরের ট্রেনটিও দেরিতে যায়। তবে রোববারের মধ্যে শিডিউল বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হলেও এ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের কাছেও নেই সঠিক তথ্য।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী আন্তনগর ট্রেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (৭৯৩) লাইনচ্যুতির ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগে বিপর্যয় তৈরি হয়। প্রায় সাত ঘণ্টা পর লাইন ঠিক করা হলেও শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া সবগুলো ট্রেন ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। তবে কোনো বগি উল্টে যায়নি; কেউ হতাহত হয়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লোকাল ট্রেন গোপীবাগে লাইনচ্যুত হয়। সে সময় ঢাকা-খুলনা লাইনে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি সাধারণ সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা বিলম্বে বৃহস্পতিবার ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে। প্ল্যাটফর্ম পার হওয়ার ২ মিনিটের মধ্যে ঝাঁকুনি অনুভব হয় এবং ট্রেনটি থামানো হয়। পরে নেমে দেখা যায় ট্রেনের বিভিন্ন কোচের মোট ৬ টির মতো বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। লাইনের পাত ভেঙে যাওয়ায় চাকাগুলো নিচে পড়ে যায়। ট্রেনের গতি কম ছিল বলে কেউ আহত হয়নি।

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের ফলে কমলাপুরে যাত্রীদের তোপের মুখে পড়েন রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী ও স্টেশনে ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার। শুক্রবার কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শনে যান মহাপরিচালক। এ সময় যাত্রীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। নিরুপায় মহাপরিচালক একপর্যায়ে বলে ওঠেন, ‘এখন কী আর করবেন, মারলে মারেন আমাকে।’ এদিকে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভেঙে পড়েছে রেলের অটোমেটিক অপারেশন কার্যক্রম। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন ছাড়ার কারণে সময় লাগছে বেশি।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্র বলেছে, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ায় ঢাকা থেকে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের রুটের সবগুলো ট্রেন আটকা পড়ে বিভিন্ন স্টেশনে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ট্রেনগুলো গাজীপুরের জয়দেবপুর, পুবাইল ও টঙ্গী, নরসিংদীর জিনারদি ও ঘোড়াশাল; ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও ও ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে আটকে থাকে শুক্রবার দিনভর। এতে অনেক ট্রেন প্রায় পাঁচ-সাত ঘণ্টা বিলম্বে কমলাপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে শুক্রবার কিশোরগঞ্জগামী কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, পঞ্চগড়গামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, জামালপুরের তারাকান্দিগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয় বলে জানান কমলাপুরের স্টেশনমাস্টার আনোয়ার হোসেন।

একই দিনে দুটি ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনা তদন্তে বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (রেল) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে। এ বিষয়ে রেলওয়ে কমান্ড্যান্ট মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, কমিটিকে দ্রুততম সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত