অর্চি হক, ঢাকা
চারদিকে ছড়িয়ে রাখা অ্যালুমিনিয়ামের তৈজস বা বাসন। বৈদ্যুতিক বাতির আলো আর বেড়ার ফাঁক গলে আসা সূর্যালোকে জ্বলজ্বল করছিল সেগুলো। বাসনকোসনের মধ্যে ঘুরছিল যন্ত্র। সেখানে কোনো হেলমেট বা সুরক্ষাব্যবস্থা ছাড়াই কাজ করছিল এক কিশোর। তার শরীর থেকে ঝরছিল ঘাম। চারপাশের বাসনকোসন যতটা জ্বলজ্বলে, কিশোরের মুখ ততটাই ধূসর। গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের নিজামবাগে একটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
পলিশযন্ত্রে কাজ করা ১৭ বছরের ওই কিশোর জানায়, মেশিনরুমে কয়েক ঘণ্টা কাজ করলেই অ্যালুমিনিয়ামের গুঁড়ায় পা থেকে মাথা পর্যন্ত ছাইরঙা হয়ে যায়। শ্বাসকষ্টসহ নানা অসুখেও ভুগতে হয়। তার পরও জীবিকার তাগিদে চার বছর ধরে কাজ করছে সে।
অথচ শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্রের সরকারি তালিকায় ১ নম্বরে আছে অ্যালুমিনিয়ামের সামগ্রী তৈরির কারখানা।
বয়স ১৮ হওয়ার আগেই কারখানায় কীভাবে কাজ পেল জানতে চাইলে ওই কিশোর বলে, ‘বয়স দুই-তিন বছর বেশি কইয়া কামে ঢুকি। চাইলে কাগজপত্রও পাওন যায়।’
বয়স লুকিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগের বিষয়টি কামরাঙ্গীরচরে অনেকটাই ‘ওপেন সিক্রেট’।
নিজামবাগের আল আমীন মেটাল ওয়ার্কসের ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেন বলেন, বয়স বেশি দেখিয়ে কাজে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই-এক বছর এদিক-সেদিক হয়। ছেলেপেলে অনেকেই আছে, যারা স্কুলে যায় না, নেশা করে। এর চেয়ে তো কাজ করা ভালো।
এলাকার বাসিন্দা বোরহানুদ্দিন বলেন, ‘কারও মা নাই, কারও বাপ নাই। ওগো খাওয়াইব কেডা? রাস্তায় ঘুইরা ঘুইরা গুন্ডামি করার চেয়ে তো কাজ করা ভালো।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গত মার্চে প্রকাশিত জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ-২০২২ অনুযায়ী, দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার। তাদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ১০ লাখ ৭০ হাজার। শিশু গৃহকর্মী ২০ লাখ ৯০ হাজার।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ ১২ জুন বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিশুশ্রম বন্ধ করি, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করি’।
বিবিএসের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে দেশে শিশু শ্রমিক ছিল ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ জন। দশকের ব্যবধানে শিশু শ্রমিক বেড়েছে ৮৬ হাজারের বেশি। শ্রমে নিয়োজিত ২০ লাখ ১০ হাজার শিশুই পারিশ্রমিক পায় না। যারা পায়, তাদেরও গড় আয় মাসে ৬ হাজার ৬৭৫ টাকা।
শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংগঠন ‘শিশুরাই সব’-এর আহ্বায়ক লায়লা খন্দকার বলেন, ‘অনেকেই দারিদ্র্যকে শিশুশ্রম বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে। কিন্তু শিশুশ্রমের মূল কারণ আমাদের মানসিকতা। অনেকেই শিশুশ্রমকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে। শিশুদের কম পয়সায় নিয়োগ দেওয়া যায় বলে অনেকেই তাদের লুফে নেয়।’
কামরাঙ্গীরচরের মাতবরবাজার রোডে একটি গ্রিল ওয়ার্কশপে লোহা কাটার কাজ করে এক কিশোর। দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করে সপ্তাহে দেড় হাজার টাকা পায় সে। ওই কিশোর বলে, ‘ওভারটাইমের নিয়ম এইখানে চলে না।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, শিশুশ্রম নিরসনে গত ১২ বছরে ৩৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেরও পরিকল্পনা চলছে। তবে এসব প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিশু অধিকারকর্মীরা। এ বিষয়ে লায়লা খন্দকার বলেন, শত শত কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হলেও শিশুশ্রম কমার বদলে বাড়ছে। এর কারণ প্রকল্পগুলো বাস্তবমুখী নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরিকুল আলম জানান, শিশুশ্রম প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কাজ করছে তাঁর দপ্তর। মূল কাজ করে থাকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। এই অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক দেশের বাইরে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, জনবলসংকটের কারণে তাঁরা চাইলেও নিয়মিতভাবে সব কারখানা পরিদর্শন করতে পারেন না।
চারদিকে ছড়িয়ে রাখা অ্যালুমিনিয়ামের তৈজস বা বাসন। বৈদ্যুতিক বাতির আলো আর বেড়ার ফাঁক গলে আসা সূর্যালোকে জ্বলজ্বল করছিল সেগুলো। বাসনকোসনের মধ্যে ঘুরছিল যন্ত্র। সেখানে কোনো হেলমেট বা সুরক্ষাব্যবস্থা ছাড়াই কাজ করছিল এক কিশোর। তার শরীর থেকে ঝরছিল ঘাম। চারপাশের বাসনকোসন যতটা জ্বলজ্বলে, কিশোরের মুখ ততটাই ধূসর। গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের নিজামবাগে একটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
পলিশযন্ত্রে কাজ করা ১৭ বছরের ওই কিশোর জানায়, মেশিনরুমে কয়েক ঘণ্টা কাজ করলেই অ্যালুমিনিয়ামের গুঁড়ায় পা থেকে মাথা পর্যন্ত ছাইরঙা হয়ে যায়। শ্বাসকষ্টসহ নানা অসুখেও ভুগতে হয়। তার পরও জীবিকার তাগিদে চার বছর ধরে কাজ করছে সে।
অথচ শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্রের সরকারি তালিকায় ১ নম্বরে আছে অ্যালুমিনিয়ামের সামগ্রী তৈরির কারখানা।
বয়স ১৮ হওয়ার আগেই কারখানায় কীভাবে কাজ পেল জানতে চাইলে ওই কিশোর বলে, ‘বয়স দুই-তিন বছর বেশি কইয়া কামে ঢুকি। চাইলে কাগজপত্রও পাওন যায়।’
বয়স লুকিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগের বিষয়টি কামরাঙ্গীরচরে অনেকটাই ‘ওপেন সিক্রেট’।
নিজামবাগের আল আমীন মেটাল ওয়ার্কসের ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেন বলেন, বয়স বেশি দেখিয়ে কাজে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই-এক বছর এদিক-সেদিক হয়। ছেলেপেলে অনেকেই আছে, যারা স্কুলে যায় না, নেশা করে। এর চেয়ে তো কাজ করা ভালো।
এলাকার বাসিন্দা বোরহানুদ্দিন বলেন, ‘কারও মা নাই, কারও বাপ নাই। ওগো খাওয়াইব কেডা? রাস্তায় ঘুইরা ঘুইরা গুন্ডামি করার চেয়ে তো কাজ করা ভালো।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গত মার্চে প্রকাশিত জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ-২০২২ অনুযায়ী, দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার। তাদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ১০ লাখ ৭০ হাজার। শিশু গৃহকর্মী ২০ লাখ ৯০ হাজার।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ ১২ জুন বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিশুশ্রম বন্ধ করি, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করি’।
বিবিএসের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে দেশে শিশু শ্রমিক ছিল ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ জন। দশকের ব্যবধানে শিশু শ্রমিক বেড়েছে ৮৬ হাজারের বেশি। শ্রমে নিয়োজিত ২০ লাখ ১০ হাজার শিশুই পারিশ্রমিক পায় না। যারা পায়, তাদেরও গড় আয় মাসে ৬ হাজার ৬৭৫ টাকা।
শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংগঠন ‘শিশুরাই সব’-এর আহ্বায়ক লায়লা খন্দকার বলেন, ‘অনেকেই দারিদ্র্যকে শিশুশ্রম বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে। কিন্তু শিশুশ্রমের মূল কারণ আমাদের মানসিকতা। অনেকেই শিশুশ্রমকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে। শিশুদের কম পয়সায় নিয়োগ দেওয়া যায় বলে অনেকেই তাদের লুফে নেয়।’
কামরাঙ্গীরচরের মাতবরবাজার রোডে একটি গ্রিল ওয়ার্কশপে লোহা কাটার কাজ করে এক কিশোর। দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করে সপ্তাহে দেড় হাজার টাকা পায় সে। ওই কিশোর বলে, ‘ওভারটাইমের নিয়ম এইখানে চলে না।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, শিশুশ্রম নিরসনে গত ১২ বছরে ৩৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেরও পরিকল্পনা চলছে। তবে এসব প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিশু অধিকারকর্মীরা। এ বিষয়ে লায়লা খন্দকার বলেন, শত শত কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হলেও শিশুশ্রম কমার বদলে বাড়ছে। এর কারণ প্রকল্পগুলো বাস্তবমুখী নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরিকুল আলম জানান, শিশুশ্রম প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কাজ করছে তাঁর দপ্তর। মূল কাজ করে থাকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। এই অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক দেশের বাইরে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, জনবলসংকটের কারণে তাঁরা চাইলেও নিয়মিতভাবে সব কারখানা পরিদর্শন করতে পারেন না।
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় ভ্রমণের ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদের সতর্ক করেছে সরকার। স্ক্যাম চক্রের প্রতারণা এড়াতে নিয়োগ যাচাই এবং সাইবার নিরাপত্তা মেনে চলার পরামর্শ।
২৬ মিনিট আগেহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁদের অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আইওএমের কর্মকর্তারা। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান ফেরত আসা বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
৭ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট গ্রহণ, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন তাঁরা।
৭ ঘণ্টা আগেপরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সময়ের দাবি। বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের চাওয়া দ্রুত নির্বাচন। এ অবস্থায় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়
৭ ঘণ্টা আগে