খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২১, ১৫: ১৭
আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২১, ১৬: ৫৮

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পরে তাঁর রক্তের ওপর পা রেখেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ। ওই দিন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। গঠন করেন ২৩ সদস্যের মন্ত্রিসভার। যার মধ্যে ২২ জনই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের (বাকশাল) মন্ত্রিসভার। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন পরবর্তীতে আবার আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। 

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী উপস্থাপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এর মাধ্যমে প্রচলিত সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। দেশে চালু হয় রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা। ১৫ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৮৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন খন্দকার মোশতাক। ওই বছরের ৫ নভেম্বর ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। আর ৭ নভেম্বর পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতায় আসেন জিয়াউর রহমান। 

খন্দকার মোশতাক ১২ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী নিয়ে সরকার গঠন করেন। যার মধ্যে ২১ জনই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন বাকশালের মন্ত্রিসভার সদস্য। যাদের বেশীরভাগকেই রাখা হয়েছিল পূর্বের দায়িত্বে। আর বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী সভায় না থাকা শাহ মোয়াজ্জেম হোসনেকে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়। যিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার চিফ হুইপ। 

বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার ২৯ জনের মধ্যে মৎস্য, বন, বন্যা এবং বিদ্যুৎ শক্তি মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ১৫ আগস্ট নিহত হন। এ ছাড়াও মন্ত্রিসভার উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলী, শিল্প মন্ত্রী এইচ এম কামরুজ্জামান, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, তথ্য ও বেতার মন্ত্রী কোরবান আলী এবং এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মোমিন তালুকদার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন নাই। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রী কামাল হোসেন সেই সময় বিদেশে ছিলেন। তিনি সেই সময় দেশে আসতে অস্বীকৃতি জানান। তবে সেই সময় দু-একজন ছাড়া বেশির ভাগই চাপের মুখে খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। যোগ দেওয়া কয়েকজন আবার মোশতাকের পতনের পরে আওয়ামী লীগেও ফিরে আসেন। 

বাকশালের মন্ত্রিসভার বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতি ও ভূমিমন্ত্রী মোহাম্মদ উল্লাহ উপ-রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। খন্দকার মোশতাক মাত্র ৮৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিনি কারাগারে ছিলেন। কারামুক্তির পরে ডেমোক্রেটিক লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। আর ১৯৯৬ সালের ৫ মার্চ তিনি মারা যান। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ উল্লাহ জিয়াউর রহমান সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

বাকশালের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী ছিলেন শিক্ষাবিদ আজিজুর রহমান মল্লিক। মোশতাকের মন্ত্রিসভায়ও তিনি একই দায়িত্বে ছিলেন। সরকারের পতনের পরে তিনি আবারও পুরোনো পেশায় ফিরে যান। ১৯৭৬ সালের ১ জানুয়ারি তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে প্রফেসর এমিরিটাস হিসেবে নিয়োগ দান করে। বাঙালি মূলধনে গড়ে ওঠা প্রথম বাণিজ্যিক ব্যাংক 'ন্যাশনাল ব্যাংক'-এর অনারারি চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। 

বাকশাল সরকারের বন্দর ও জাহাজ দপ্তর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। তার আগে তিনি রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। মোশতাকের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে রাজনীতিতে সক্রিয় হননি। ১৯৮৫ সালে তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। 

মুজিবনগর সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা অধ্যাপক ইউসুফ আলী বাকশাল সরকারের শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ছিলেন। খন্দকার মোশতাকের সরকারের তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে জিয়া, এরশাদ সরকারেরও মন্ত্রী ছিলেন তিনি। 

বাকশাল সরকারের আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় একই দায়িত্বে ছিলেন। সরকারের পতনের পরে ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। 
মাদারীপুরের ফণী ভূষণ মজুমদার বাকশাল সরকারের এলজিআরডি মন্ত্রী ছিলেন। মোশতাকের মন্ত্রিসভায়ও তিনি একই পদে ছিলেন। ১৯৭৭ সালে সামরিক আইনে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। ১৯৭৮ সালে তিনি আবার আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। 

মাগুরার সোহরাব হোসেন বাকশাল সরকারের পূর্ত ও গৃহনির্মাণ মন্ত্রী ছিলেন। মোশতাকের মন্ত্রী সভায়ও তিনি একই পদে ছিলেন। সরকার পতনের পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।  

বাকশাল সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টাঙ্গাইলের আব্দুল মান্নান মোশতাক সরকারে একই পদে ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে সাংসদ হন। ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। 

নেত্রকোনার আব্দুল মোমিন বাকশাল সরকারের খাদ্য ও পুনর্বাসন মন্ত্রী ছিলেন। খন্দকার মোশতাকের সরকারের তিনি কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন তিনি। ২০০২ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর স্ত্রী রেবেকা মোমিন এখন নেত্রকোনা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ। 

স্বাধীন বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভিসি ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী। তাঁকে বঙ্গবন্ধু বাকশাল সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। তিনিও মোশতাকের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। মোশতাকের পতনের পর শিক্ষকতা পেশায় ফিরে আসেন। তিনি ১৯৭৮ সালে মারা যান। 

বাকশাল সরকারের পাটমন্ত্রী ছিলেন কিশোরগঞ্জের আসাদুজ্জামান খান। খন্দকার মোশতাকের সরকারে যোগ দিলে যাকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৮ সালেও তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতাও নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে তিনি মারা যান। 
ছাত্রনেতা কে এম ওবায়দুর রহমান বাকশাল সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সবার সঙ্গে তিনিও খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। তিনি জেল হত্যা মামলায়ও অভিযুক্ত ছিলেন। ২০০৪ সালে এই মামলা থেকে খালাস পেয়েছিলেন তিনি। মোশতাকের পতনের পরে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। দলটির মহাসচিবের দায়িত্বেও ছিলেন। তার মেয়ে শামা ওবায়েদ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। 

বঙ্গবন্ধু সরকারের চিফ হুইপ সাবেক ছাত্রনেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বাকশাল সরকারের বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি এরশাদ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। পরে বিএনপিতে যোগ দেন। এখন তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনিও জেলহত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ২০০৪ সালে খালাস পান তিনি। 

হবিগঞ্জের দেওয়ান ফরিদ গাজী বাকশাল সরকারের বাণিজ্য, পাট ও চা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মোশতাক সরকারের বাণিজ্য ও খনিজ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে সপ্তম থেকে ১০ম পর্যন্ত নৌকা মার্কায় জয়লাভ করেন। ২০১০ সালে তিনি মারা যান। সেই সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। তাঁর ছেলে গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ (মিলাদ গাজী) হবিগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ। 

বাকশাল সরকারের তথ্য ও বেতার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তাহের উদ্দিন ঠাকুর। মোশতাকের মন্ত্রিসভায়ও একই দায়িত্বে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ১৯৯৬ সালের ১৪ আগস্ট ঠাকুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে মামলা থেকে খালাস পেয়েছিলেন। ২০০৪ সালে জেল হত্যা মামলা থেকেও খালাস পান তিনি। 

চট্টগ্রামের নুরুল ইসলাম চৌধুরী বাকশালের শিল্প ও প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মোশতাকের মন্ত্রিসভায়ও একই দায়িত্বে ছিলেন। জেল হত্যা মামলায় আসামি ছিলেন। বিএনপির আমলে ২০০৪ সালে এ মামলার রায় হলে তিনি বেকসুর খালাস পান। 

মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেমউদ্দিন খান হাবু মিয়া বাকশালের পাট প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। মোশতাকের মন্ত্রিসভায়ও পাট প্রতিমন্ত্রী হন। ১৯৭৮ সালে তিনি আবার আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। 

পিরোজপুরের নুরুল ইসলাম মঞ্জুর বাকশালের রেল ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। যদিও দুই মাসের মাথায় ১৯৭৫ সালের ২১ জুলাই তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয়। তিনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়ে একই পদে ছিলেন। পরে বিএনপিতে যোগ দেন। জেল হত্যা মামলায় তিনিও আসামি ছিলেন। পরে খালাস পান মামলা থেকে। 
মঞ্জুরের পদত্যাগের পরে ন্যাপের নেতা কুষ্টিয়ার সৈয়দ আলতাফ হোসেন রেল ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। মোশতাকের মন্ত্রিসভা তিনিও যোগ দেন। দায়িত্ব দেওয়া হয় সড়ক যোগাযোগের প্রতিমন্ত্রীর। পরে আবার ন্যাপে ফিরে আসেন তিনি। 

মোশতাকের মন্ত্রিসভায় একমাত্র নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত হন খুলনার মোমিন উদ্দিন আহমদ। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তিনি বিএনপি হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এরশাদ সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। 

পিরোজপুরের ডা. ক্ষিতীশ চন্দ্র মণ্ডল বাকশালের সাহায্য ও পুনর্বাসন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায়ও একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন। ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগে ফেরত এবং পরবর্তী সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত। 

লালমনিরহাটের রিয়াজউদ্দিন আহমদ ভোলা মিয়া বাকশালের বন, মৎস্য ও পশুপালন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মোশতাক সরকারের একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন। মোশতাকের পতনের পর ভোলা মিয়া বিএনপি হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হন। 

মোশতাক সরকারের চিফ হুইপ ছিলেন নীলফামারীর আবদুর রউফ। পরে তিনি আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে পরে তিনি কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে যুক্ত হন। তিনি গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য থাকা অবস্থায় ২০১১ সালে মৃত্যু বরণ করেন। 

 ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে তিনি সংসদ সদস্যপদ এবং আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ত্যাগ করেন মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা জেনারেল এম এ জি ওসমানী। সেবার ২৯শে আগস্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান, তবে ৩রা নভেম্বর জেলহত্যার ঘটনার পর পদত্যাগ করেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত