নবনির্বাচিত এমপিদের ১৩৪ জনই ঋণগ্রস্ত: সুজন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ১৯
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৫২

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নবনির্বাচিত ২৯৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৩৪ জনের ঋণ ও দেনা রয়েছে। মোট সংসদ সদস্যের হিসাব অনুযায়ী দেনায় থাকা সংসদ সদস্যদের সংখ্যা প্রায় ৪৫ ভাগ। এর মধ্যে কোটি টাকার বেশি ঋণী আছেন ৭৫ জন। গত সংসদীয় নির্বাচনে এ ধরনের সংসদ সদস্যের সংখ্যা ছিল ৪৩ জন। শতাংশের হারে যা ছিল প্রায় ১৪ ভাগ। গতবারের তুলনায় এবার সংসদে ঋণগ্রস্ত সদস্যের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩২ ভাগ।  

আজ মঙ্গলবার সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। 

গত তিন মেয়াদে প্রতিবারই নির্বাচিত হয়েছে আওয়ামী লীগের এমন দশজন সংসদ সদস্যের বিপুল পরিমাণ সম্পদ বাড়ার তথ্য দিয়েছে সুজন। বিগত ১৫ বছরের সব থেকে বেশি সম্পদ বেড়েছে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর-ই আলম চৌধুরী লিটনের। ২০০৮ সালে তাঁর সম্পদ ছিল ৬২ লাখ ৭০ হাজার ৪৭৩ টাকা, যা ২০২৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৭৯ লাখ ৯৭ হাজার ৯৫ টাকায়। সেই হিসাবে সম্পদ বাড়ার হার ৯৫৯৬ শতাংশ।

জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজমের ২০০৮ সালে সম্পদ ছিল ১ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০৫ টাকা যা ২০২৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৯৫ কোটি ২০ লাখ ৮৪৩ টাকায়। তাঁর সম্পদ বৃদ্ধির হার ৯২৩৯ শতাংশ। 

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা দিনাজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য খালেদ মাহমুদ চৌধুরীর ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮০০ টাকার সম্পদ ছিল। তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে তাঁর সম্পদ বেড়ে হয়েছে ৫ কোটি ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৩৬৯ টাকা। তাঁর সম্পদ বৃদ্ধির হার ৯২২৪ শতাংশ।

সংসদের আরেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাট-২ আসন থেকে এবারও নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৬২৬ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর সম্পদ ছিল ১৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। 

প্রথমবার অর্থাৎ ২০০৮ সালে যখন নাটোর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জুনাইদ আহমেদ পলক, তখন তাঁর সম্পদ ছিল ১১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। বর্তমানে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৮ কোটি ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৮০৩ টাকা। পলক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। 

নওগাঁ-১ আসন থেকে ২০০৮ সালে যখন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, তখন তাঁর সম্পদ ছিল ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৯ টাকা। বর্তমানে তাঁর সম্পদ ১০ কোটি ২৩ লাখ ১৮ হাজার ৬৬০ টাকা। 

ঢাকা-২ আসন থেকে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কামরুল ইসলাম। ২০০৮ সালে তাঁর সম্পদ ছিল ১২ লাখ ১৬ হাজার ৬০০ টাকা, বর্তমানে তাঁর সম্পদ ৫ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার ২৪ টাকা। 

২০০৮ সালে নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খানের সম্পদ ছিল ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩৫ টাকা। বর্তমানে তাঁর সম্পদ ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৪৪ হাজার ২৯৭ টাকা। 

দিনাজপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী যখন ২০০৮ সালে নির্বাচিত হন তখন তাঁর সম্পদ ছিল ৪৫ লাখ ২৫ হাজার ৪৮ টাকা। বর্তমানে তাঁর সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৩ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৮ টাকা। 

সর্বশেষ সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম ২০০৮ সালে যখন নির্বাচিত হন তখন তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭৭ টাকা। 

এসব তথ্য তুলে ধরে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘হলফনামায় সম্পদের যে তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে, তাতে সম্পদের প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। কেননা, অনেক প্রার্থীই সম্পদের মূল্য উল্লেখ না করায় আর্থিক মূল্যে সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয় না।’  

এ ছাড়া এবার নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ২৯৯ জনের মধ্যে ২০০ জনের পেশা ব্যবসা। শতকরা হিসাবে সংসদ সদস্যদের ৬৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ ব্যবসায়ী। একাদশ জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ী ছিলেন ১৮৫ জন বা মোট সংসদ সদস্যের ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। 

সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সব তথ্যের মূল ভিত্তি হলো প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন হলফনামার তথ্য যাচাই-বাছাই করে না। হলফনামায় অনেক ক্ষেত্রে তথ্য গোপন এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য আছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত